ইতিহাসের পাতায় নতুন নাম লেখালেন জানিক সিনার (Jannik Sinner)। ২০২৫ সালের উইম্বলডন (Wimbledon 2025) ফাইনালে দুইবারের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কার্লোস আলকারাজকে চার সেটের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে পরাজিত করে প্রথম ইতালিয়ান হিসেবে উইম্বলডন জিতলেন সিনার। ৪-৬, ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪ স্কোরে এই জয় তাকে তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপা এনে দিয়েছে। এই জয়ের মাধ্যমে তিনি ফ্রেঞ্চ ওপেনের হারের কষ্ট কাটিয়ে উঠে নিজেকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
এই বছরের ফ্রেঞ্চ ওপেনে আলকারাজের কাছে হেরেছিলেন সিনার, যেখানে তিনি চতুর্থ সেটে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট হারিয়েছিলেন। কিন্তু উইম্বলডনের ফাইনালে সেই ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হতে দেননি তিনি। ম্যাচের তৃতীয় সেটে ২-১ এগিয়ে থাকার পর চতুর্থ সেটে ৫-৩ স্কোরে এবং ৪০-০ এ তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট পেয়েছিলেন সিনার। আলকারাজ একটি পয়েন্ট বাঁচাতে সক্ষম হলেও বাকি দুটি রক্ষা করতে পারেননি। সিনার চারবার আলকারাজের সার্ভিস ভেঙেছেন, যার মধ্যে প্রথম সেটে দুবার এবং চতুর্থ সেটে একবার। এরপর শেষ সার্ভিস ধরে রেখে তিনি জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচের পর আলকারাজ সিনারের প্রশংসা করে বলেন, “তুমি আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি কোর্টে আনন্দ ছড়াতে চাই।” অন্যদিকে, সিনারও আলকারাজের প্রশংসা করে বলেন, “তুমি যে ধরনের খেলোয়াড়, তার জন্য ধন্যবাদ।” তিনি ফ্রেঞ্চ ওপেনের পরাজয় নিয়ে বলেন, “প্যারিসে আমি একটি কঠিন হারের সম্মুখীন হয়েছিলাম। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে জয় বা হারের চেয়েও বড় বিষয় হল নিজের ভুল বোঝা এবং তা সংশোধনের চেষ্টা করা। আমরা ঠিক তাই করেছি। আমরা হার মেনে নিয়ে কাজ চালিয়ে গেছি, এবং এই কারণেই আমি আজ এই ট্রফি হাতে ধরে আছি।”
এই জয়ের মাধ্যমে সিনার শুধু ইতালির প্রথম উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নই হননি, বরং তিনি বিশ্ব টেনিসের শীর্ষ খেলোয়াড়দের মধ্যে নিজের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছেন। তার খেলার ধরন—শক্তিশালী সার্ভিস, আক্রমণাত্মক গ্রাউন্ডস্ট্রোক এবং কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা—এই ম্যাচে স্পষ্ট ছিল। আলকারাজ, যিনি টানা দুইবার উইম্বলডন জিতেছিলেন, এই ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও সিনারের ধারাবাহিকতার কাছে হার মানতে হয়।
এই জয় জঙ্গলমহলের ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্যও একটি বিশেষ মুহূর্ত। পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়া অনুরাগীরা এই জয়কে উৎসবের মতো উদযাপন করছেন, কারণ সিনারের এই অর্জন তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি প্রেরণা। উইম্বলডনের এই জয় শুধু সিনারের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং ইতালির টেনিস ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
সিনারের এই জয় বিশ্ব টেনিসে নতুন প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দেয়। আলকারাজের মতো তরুণ এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে তার এই জয় প্রমাণ করে যে তিনি আগামী দিনে আরও বড় সাফল্য অর্জন করতে প্রস্তুত। উইম্বলডন ২০২৫-এর এই ফাইনাল টেনিসপ্রেমীদের জন্য একটি অবিস্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে থাকবে।