আন্তর্জাতিক বিরতি কাজে লাগিয়ে বাগান বধের পরিকল্পনা খালিদের

বর্তমানে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল)-এ ছন্দে নেই জামশেদপুর এফসি। মৌসুমের শুরুতেই প্রথম ম্যাচে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দল, কিন্তু তারপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে তা দীর্ঘস্থায়ী করা…

Khalid Jamil of Jamshedpur FC Coach on East Bengal FC

বর্তমানে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল)-এ ছন্দে নেই জামশেদপুর এফসি। মৌসুমের শুরুতেই প্রথম ম্যাচে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দল, কিন্তু তারপর কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়ে তা দীর্ঘস্থায়ী করা সম্ভব হয়নি। ইমামি ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পর টানা তিনটি ম্যাচে পরাজিত হতে হয়েছে তাদের, যার মধ্যে ছিল দুর্বল হায়দরাবাদ এফসি, নর্থইস্ট ইউনাইটেড এবং শক্তিশালী চেন্নাইয়িন এফসি। এ পরিস্থিতি দলের জন্য এক দুঃখজনক চিত্র তৈরি করেছে এবং তাদের সবার মনে প্রশ্ন উঠছে— কিভাবে এই খারাপ পারফরম্যান্স থেকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।

এখন দলের জন্য সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হল আইএসএল শিল্ড জয়ের জন্য নিজেদের ছন্দে ফিরে আসা। খালিদ জামিল (Khalid Jamil), জামশেদপুর এফসির ম্যানেজার, পুরো দলকে নিয়ে কঠোর অনুশীলন শুরু করেছেন, যাতে পরবর্তী ম্যাচে তাদের বিপক্ষে এসে দাঁড়াতে পারে।

   

গত কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক বিরতি চলছে এবং এর মধ্যে এই বিরতিটি ব্যবহার করে নিজেদের প্রস্তুতি আরও ভালোভাবে করতে চাইছে জামশেদপুর এফসি। প্রথাগতভাবে, আইএসএল দলের বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক বিরতির সময় ফুটবলারদের কিছুটা ছুটি দেয়, কিন্তু জামশেদপুরের পক্ষ থেকে একেবারেই আলাদা মনোভাব দেখা যাচ্ছে। খালিদ জামিল এই বিরতিতে দলের অনুশীলনকে আরও গুরুত্ব দিয়ে তাদের দুর্বলতার দিকে নজর দিচ্ছেন। বিশেষ করে রক্ষণভাগ এবং মাঝমাঠের সমস্যাগুলো মেটানোর জন্য অনেকটা সময় ব্যয় করা হচ্ছে।

এ সময়, জামশেদপুরের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হল তাদের পরবর্তী ম্যাচ। আগামী ২৩শে নভেম্বর, তারা অ্যাওয়ে ম্যাচে শক্তিশালী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মুখোমুখি হবে। যদিও এই ম্যাচটি তাদের জন্য কঠিন হতে পারে, তবে এটি তাদের পুনরুদ্ধারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। অতীতে জামশেদপুর এফসি অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে নিজেদের প্রমাণ করেছে, তবে এখন পরিস্থিতি একটু ভিন্ন। খালিদ জামিল ও তার কোচিং স্টাফ এখন পুরনো হতাশা ভুলে, পরবর্তী ম্যাচে শক্তি সঞ্চয়ের দিকে নজর দিয়েছেন।

দলটির রক্ষণভাগে কিছু নতুন সংযোজন নিয়ে আসার পরিকল্পনাও করা হয়েছে, বিশেষ করে তাদের স্ট্রাইকারদের আরো কার্যকরী করতে হবে। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ এবং পাসিং গেমের উন্নতি করা হবে। দলের দিক থেকে কেউই এখন হতাশ হতে চায় না এবং সবার ইচ্ছা নতুন করে আবার উজ্জ্বল হতে, বিশেষ করে সেই ম্যাচে, যেখানে তাদের দুর্বল দিকগুলোতে সমাধান আনা সম্ভব হবে।

এদিকে, জামশেদপুরের ম্যানেজমেন্ট এবং কোচিং স্টাফ জানিয়েছেন যে, তারা আগামী ম্যাচে আরও কঠোর মনোভাব নিয়ে মাঠে নামবে এবং ফোকাস করবে দলীয় সম্মিলিত আক্রমণ ও রক্ষণভাগে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ম্যাচটি এখন তাদের জন্য এক বড় সুযোগ, যেহেতু এটি তাদের আরেকটি সম্ভাবনা নতুন করে নিজেদের প্রমাণ করার।

তবে, খালিদ জামিলের সামনে এখন আরও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। প্রাক্তন শিল্ড জয়ী দলের কোচ হিসেবে, তিনি জানেন যে তার দলের প্রতিভা আছে, কিন্তু সেটি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। এজন্য কঠোর অনুশীলন এবং আত্মবিশ্বাসী মনোভাবের প্রয়োজন। দলের খেলোয়াড়দের সেইরকম প্রেরণা ও সাহস দেওয়া জরুরি, যাতে তারা মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে।

জামশেদপুরের এই নতুন পরিকল্পনা দলের জন্য কতটা কার্যকরী হতে পারে, তা সময়ই বলবে। তবে এক কথা স্পষ্ট, যদি দল তাদের আত্মবিশ্বাস ও মনোযোগ বজায় রাখতে পারে, তবে মোহনবাগানের মতো শক্তিশালী দলকে হারানো তাদের জন্য অস্বাভাবিক কিছু হবে না। দলীয় ঐক্য এবং পরবর্তী ম্যাচে নিজেদের উন্নতি দেখানোর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা, জামশেদপুরের এই মৌসুমের বাকি ম্যাচগুলোকে একেবারে অন্যরকম করতে পারে।

এখন সবাই তাকিয়ে আছেন ২৩শে নভেম্বরের ম্যাচটির দিকে, যেখানে জামশেদপুরের ফুটবলাররা তাদের জয়ের জন্য পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে এবং শিল্ড জয়ের প্রাক্তন গৌরব ফিরে পেতে সংগ্রাম করবে।