Jammu and Kashmir: স্বর্ণপদক পেয়ে স্বপ্ন জয় যমজ বোনের, খুশি কোচ থেকে উপত্যকাবাসী

প্রীতম সাঁতরা: তখন সবে জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) থেকে বাতিল করা হয়েছিল ৩৭০ ধারা। উত্তাল হয়ে উঠেছিল উপত্যকা। তখন স্বপ্ন বুনন করছিলেন দুই যমজ বোন।…

Wushu warriors are shining bright at the Moscow Stars Wushu Championship 2024

প্রীতম সাঁতরা: তখন সবে জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) থেকে বাতিল করা হয়েছিল ৩৭০ ধারা। উত্তাল হয়ে উঠেছিল উপত্যকা। তখন স্বপ্ন বুনন করছিলেন দুই যমজ বোন। কাণ্ডারি কোচ আসিফ হুসেন। সম্প্রতি দুই বোনই জিতেছেন সোনার পদক।

রাশিয়ার মস্কোয় সোনার পদক জয় করেছেন আয়রা চিস্তি ও আনসা চিস্তি। দুজনেই এখন কলেজে পড়ছেন, বিজ্ঞান বিভাগে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জিতেছেন দেশের হয়ে। মস্কোয় স্বর্ণ পদক জয় করার পথ সহজ ছিল না। অনেক বাধা অতিক্রম করার পর তাঁরা দু’জনে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছেন।

কীভাবে সম্ভব হল এই উত্থান? ফোনে কথা হচ্ছিল দুই বোনের প্রশিক্ষক আসিফ হুসেনের সঙ্গে। কাশ্মীরের সার্টিফায়েড উশু কোচ তিনি। নিজেও এক সময় খেলেছেন দেশের জন্য। বোঝেন উঠতি খেলোয়াড়দের মনের অবস্থার কথা। নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়েছিলেন দুই ছাত্রীর প্রশিক্ষণের জন্য।

“তখন সবে সবে আর্টিকেল ৩৭০ বাতিল করা হয়েছিল। চারিদিকে সেনা, পুলিশ নিরাপত্তা রক্ষী। বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথাও যাওয়া তখন কঠিন হয়ে পড়েছিল। অলিগলি দিয়ে পায়ে হেঁটে কোনওরকমে ওদের বাড়ি যেতাম। যতটা সম্ভব হয়েছে ব্যক্তিগতভাবে কোচিং করানোর চেষ্টা করেছি”, শ্রীনগর থেকে জানিয়েছেন আসিফ হুসেন। “বাইকে করে যে যাবো সেই উপায়ও ছিল না। পুলিশে সন্দেহ করতে পারতো। তাই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতাম। আমার বাড়ি থেকে ওদের বাড়ির দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।”

ভারতে উশু খেলার চল খুব একটা নেই। তবুও এই দুই বোনের উশু খেলার ইচ্ছা হয়েছিল খুব। বিভিন্ন সিনেমা, খেলার জগতের আইকনদের দেখে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়েছিল এই বিশেষ খেলার প্রতি ঝোঁক। পরে স্টেডিয়ামে বাকিদের খেলতে দেখে নিজেরাও নেমে পড়েছিলেন রিং-এ। আয়রা ও আনসার মা-বাবা তাঁদের সন্তানের পাশে থেকেছেন, এখনও রয়েছেন। বাবা রইস উল হাসান চিস্তি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, মা জাহান আরা হাকানী একজন চিকিৎসক।

“অনেকে অনেক কিছু বলেছেন। পা টেনে ধরার চেষ্টা চেষ্টা করেছেন অনেকে। এখন তাঁরাই আমাদের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দিচ্ছেন”, বলেছেন আয়রা-আনসার কোচ। “পক্ষপাতিত্ত্ব কি পরিমাণে হতে পারে সেটা না দেখলে বোঝা যাবে না। যোগ্যতা থাকা সত্বেও আমার দুই ছাত্রীকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছিল না। যখন সুযোগ এল তখন তাদের বললাম, মুখে কিছু বলবি না, পারফর্ম করে দেখিয়ে দে তোদের মধ্যে কী রয়েছে।”

পারফরম্যান্স করে ইতিমধ্যে দেশের হয়ে পদক জিতেছেন আয়রা চিস্তি ও আনসা চিস্তি। প্রথম কাশ্মীরি মেয়ে অ্যাথলিট হিসেবে উশু চ্যাম্পিয়নশিপে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন দুই বোন। এখানেই শেষ নয়। তাঁদের লক্ষ্য আসন্ন এশিয়ান গেমসে পদক জয়।