IPL 2022 Updates: বিধ্বংসী বাটলার, হ্যাটট্রিক চাহালের, রোমাঞ্চকর ম্যাচে হার নাইটদের

চলতি আইপিএলে (IPL 2022) দর্শকরা এখনও পর্যন্ত সবথেকে রোমাঞ্চকর ম্যাচের সাক্ষী থাকল এদিন। প্র থমে বিধ্বংসী বাটলার। পরে শ্রেয়স-শো। সেইসঙ্গে চাহালের হ্যাটট্রিক সহ পাঁচ উইকেট।…

Celebration from Obed McCoy

চলতি আইপিএলে (IPL 2022) দর্শকরা এখনও পর্যন্ত সবথেকে রোমাঞ্চকর ম্যাচের সাক্ষী থাকল এদিন। প্র থমে বিধ্বংসী বাটলার। পরে শ্রেয়স-শো। সেইসঙ্গে চাহালের হ্যাটট্রিক সহ পাঁচ উইকেট। শেষ হাসি অবশ্য হাসলেন বাটলার-চাহালরাই। তবে খেলায় হার-জিত থাকার প্রথা মেনে নিয়ে, ক্রিকেটপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে উত্তেজনার পারদ। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে অবশ্য বাটলারের সেঞ্চুরি নয়, রাজস্থানকে জয় এনে দিল যজুবেন্দ্র চাহালের হ্যাটট্রিক। এক ওভারে হ্যাটট্রিক সহ চার নাইট ক্রিকেটারকে ফিরিয়ে ম্যাচ নিজেদের দিকে টেনে আনেন তিনি। হাইস্কোরিং ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৭ রানে জয় পায় রাজস্থান।

টসে জিতে রাজস্থানকে ব্যাট করতে পাঠান শ্রেয়স আয়ার। নাইট অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তের মর্যাদা একেবারেই রাখতে পারেননি বোলাররা। শুরু থেকেই ম্যাচে জাঁকিয়ে বসেন দুই ওপেনার দেবদত্ত পালিক্কাল এবং জস বাটলার। তবে পালিক্কাল কিছুটা মন্থর শুরু করেন। বাটলার কিন্তু ছিলেন নিজস্ব মেজাজে। ১৮ বলে ২৪ রান করে পালিক্কাল ফিরে যাওয়ার পর সঞ্জু স্যামসন সঙ্গ দেন বাটলারের। ১৯ বলে ৩৮ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে যান অধিনায়ক সঞ্জুও। আর শেষ দিকে হেটমেয়ার ১৩ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। ততক্ষণে অবশ্য বাটলারের ঝড় থেনে গিয়েছিল। ৬১ বলে ১০৩ রানের মারকাটারি ইনিংস খেলে চলতি আইপিএলে নিজের দ্বিতীয় শতরানটি তুলে নেন তিনি। সেইসঙ্গে ৫ উইকেট খুইয়ে ২১৭ রানের বিশাল স্কোর খাড়া করে রয়্যালস।

   

একমাত্র সুনীল নারিন ছাড়া আর কোনও নাইট বোলারই সমীহ আদায় করতে পারেননি। চার ওভারে ২১ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন তিনি। তবে নাইট রাজস্থানের ব্যাটিং তাণ্ডবের পিছনে অনেকে আবার আঙুল তুলেছেন শ্রেয়সের অধিনায়কত্ব বা নাইঠ টিম ম্যানেজমেন্টের দিকে। রাসেলের হাতে কেন আরও আগে বল তুলে দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে অনেকের। সেইসঙ্গে ভেঙ্কটেশ আয়ারকে বোলিংয়ে ব্যবহার না করা নিয়ে ক্ষোভ জমছে নাইট সমর্থকদের মনে।

পাহাড় প্রমাণ রান দেখেই পরিকল্পনায় বদল আনে কেকেআর। শুরুতে অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ওপেন করতে আসেন নারিন। কিন্তু প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হতে হয় ক্যারিবিয়ান তারকাকে। এরপর অবশ্য শ্রেয়সের সঙ্গে জুটি বেধে দলকে দারুণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন ফিঞ্চ। এই দুই ব্যাটারের দাপটে একটা সময় জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করে নাইটরা। মাত্র ২৮ বলে ৫৮ রান করে আউট হন অজি অধিনায়ক। রানা ১০ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে যান। চূড়ান্ত হতাশ করেন আন্দ্রে রাসেল। এরকম হাইস্কোরিং ম্যাচে ফিনিশিংয়ের জন্য নাইট শিবির তাকিয়ে ছিল রাসেলের দিকেই। কিন্তু অশ্বিনের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। তবে উইকেট খোয়ালেও, শ্রেয়সের সৌজন্যে ম্যাচ নাগালের বাইরে চলে যায়নি কেকেআরের। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য ৬৬ রান প্রয়োজন ছিল নাইটদের। টি-টোয়েন্টির যুগে এই পরিসংখ্যান ব্যাটিং দলের পক্ষে অ্যাডভান্টেজই বলা চলে।

ভেঙ্কটেশকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে জয়ের দিকে টেনে নিয়ে যান শ্রেয়স। চাহালকে স্টেপআউট করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন ভেঙ্কটেশ (৬)। এরপরই রুদ্ধশ্বাস লড়াই থামে শ্রেয়সের। ৫১ বলে ৮৫ রান করেও দলকে না জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার আক্ষেপ নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাঁকে। নিজের শেষ ওভারে এসে হ্যাটট্রিক সহ চারটি উইকেট নেন যজুবেন্দ্র চাহাল। পরপর শ্রেয়স, মাভি ও কামিন্সকে ফিরিয়ে ম্যাচে মোট পাঁচ নাইট ক্রিকেটারের উইকেট ঝুলিতে পোরেন তিনি। এত কিছুর পরেও ম্যাচের রোমাঞ্চ তখনও বাকি ছিল। উমেশ যাদব ব্যাট করতে নেমেই দুটি ছক্কা হাঁকান ট্রেন্ট বোল্টকে। সঙ্গে সঙ্গে আবারও জয়ের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেন নাইট ভক্তরা।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৮ রান। শেষ ওভারে ১১। সঞ্জু বল তুলে দিয়েছিলেন চলতি মরসুমে প্রথমবার মাঠে নামা ওবেদ ম্যাকয়ের। দ্বিতীয় বলে শেলডন জ্যাকসন ফিরতেই জয়ের আশা শেষ হয়ে যায় কিং খানের দলের। শেষ পর্যন্ত দুই বল বাকি থাকতে ২১০ রানে থমকে যায় নাইটদের ইনিংস।