আই-লিগ ২০২৪-২৫-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইন্টার কাশী (Inter Kashi FC) শেষ মুহূর্তে গোল করে স্থানীয় দল শ্রীনিদি ডেকানের বিরুদ্ধে ২-২ ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। এই ফলাফলের মাধ্যমে ইন্টার কাশী টেবিলের শীর্ষস্থানের কাছাকাছি থেকে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছে। ম্যাচটি হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শ্রীনিদি ডেকান তাদের সেরা ফর্মে ছিল, কিন্তু কাশীর শেষ মুহূর্তের প্রচেষ্টা তাদের জয় ছিনিয়ে নিতে বাধা দেয়।
ম্যাচে পুরো তিন পয়েন্ট পেলে ইন্টার কাশী টেবিলের শীর্ষে উঠে যেতে পারত। তবে শ্রীনিদির বিরুদ্ধে এই কঠিন লড়াইয়ে একটি পয়েন্ট অর্জন করেও তারা সন্তুষ্ট থাকতে পারে। এর আগে চার্চিল ব্রাদার্স ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে জয় পেয়ে ইন্টার কাশীকে টেবিলে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে এই ম্যাচে কাশীর ওপর চাপ ছিল বেশি। ম্যাচের শুরু থেকেই তারা তাদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে মরিয়া ছিল।
Also Read | শিলংয়ের মাঠে ‘শেষের কবিতা’ লিখল সুনীল ব্রিগেড
ম্যাচের ৮ মিনিটে ইন্টার কাশী প্রথম সুযোগ পায়। একটি কর্নার কিক থেকে সুমিত পাসি উঁচুতে লাফিয়ে হেড করেন, কিন্তু তার প্রচেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে ১৭ মিনিটে কাশী এগিয়ে যায়। ডান প্রান্ত থেকে সুমিত পাসি একটি নিখুঁত লো ক্রস দেন, যা ছয় গজ বক্সে পৌঁছে যায়। কে প্রশান্ত সহজেই বলটি খালি জালে ঠেলে দেন। শ্রীনিদি ডেকানের ডিফেন্ডাররা এই মুহূর্তে ঘুমন্ত অবস্থায় ধরা পড়েন, আর কাশী ১-০ গোলে এগিয়ে যায়।
এই গোল শ্রীনিদি ডেকানকে জাগিয়ে তোলে। তিন মিনিটের মধ্যেই তারা সমতা ফেরানোর সুযোগ পায়। ডান দিক থেকে আসা একটি উঁচু ক্রসে ডেভিড কাস্তানেদা হেড করেন। কাশীর গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্য লাইন থেকে বেরিয়ে ক্রসটি আটকাতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। ভাগ্যবশত, বলটি লাইন থেকে ক্লিয়ার হয়ে যায়। শ্রীনিদি তাদের আক্রমণ অব্যাহত রাখে। লালরোমাওয়িয়া ডান দিক থেকে বক্সে ঢুকে শট নেন, কিন্তু তার প্রচেষ্টা লক্ষ্যের ওপর দিয়ে চলে যায়।
বিরতির পর শ্রীনিদি তাদের গতি ধরে রাখে। ৪৮ মিনিটে লালরোমাওয়িয়া ডান প্রান্তে দুর্দান্ত একটি ওয়ান-টু খেলে ছয় গজ এলাকায় একটি কার্লিং ক্রস দেন। ডেভিড কাস্তানেদা হেড করে বল জালে জড়ান এবং ১-১ সমতা ফেরান। এই গোল শ্রীনিদিকে আরও উজ্জীবিত করে। তারা চাপ বাড়াতে থাকে এবং ৭২ মিনিটে এগিয়ে যায়। বাঁ দিক থেকে একটি লং থ্রো-ইন কাশীর ডিফেন্ডারদের ভেদ করে ব্র্যান্ডন ভানলালরেমডিকার কাছে পৌঁছে যায়। তিনি হেড করে শ্রীনিদিকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন।
২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে ইন্টার কাশী বিপদে পড়ে। তারা সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণে যায়। ম্যাচের শেষ দিকে খেলা জমে ওঠে। ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে শ্রীনিদির ডিফেন্সে একটি ভুলের সুযোগ নেন বিদ্যাসাগর সিং। তিনি গোল করে স্কোর ২-২ করেন। এরপরও দুই দলের জয়ের সুযোগ ছিল। শেষ মুহূর্তে সুমিত পাসি খালি জালের সামনে হেড করে বল ওপরে তুলে দেন, যা কাশীর জন্য একটি বড় মিস ছিল।
এই ড্রয়ের ফলে ইন্টার কাশী শীর্ষস্থানে পৌঁছতে না পারলেও টেবিলের উপরের দিকে থাকার লড়াইয়ে টিকে আছে। শ্রীনিদি ডেকানও তাদের শক্তিশালী পারফরম্যান্সের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে যে তারা এই মৌসুমে শক্ত প্রতিপক্ষ। কাশীর কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের দল এই ম্যাচে চাপের মুখে দৃঢ়তা দেখিয়েছে, যা তাদের শিরোপা জয়ের সম্ভাবনাকে জিইয়ে রেখেছে।
ইন্টার কাশীর হয়ে কে প্রশান্ত এবং বিদ্যাসাগর সিং গোল করেছেন। প্রশান্তের প্রথম গোল এবং বিদ্যাসাগরের শেষ মুহূর্তের গোল দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সুমিত পাসি গোল করতে না পারলেও তার অবদান উল্লেখযোগ্য। অন্যদিকে, শ্রীনিদির ডেভিড কাস্তানেদা এবং ব্র্যান্ডন ভানলালরেমডিকা তাদের গোলের মাধ্যমে দলকে এগিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন। লালরোমাওয়িয়ার ক্রস এবং আক্রমণাত্মক খেলা শ্রীনিদির শক্তির প্রতীক।
এই ম্যাচের ফলাফল ইন্টার কাশীকে শীর্ষে থাকার লড়াইয়ে রেখেছে। তবে তাদের আগামী ম্যাচগুলোতে আরও ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে। শ্রীনিদি ডেকানও এই পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে তাদের অবস্থান উন্নত করার চেষ্টা করবে। আই-লিগের এই মৌসুমে প্রতিযোগিতা তীব্র হচ্ছে, এবং এই ধরনের ম্যাচ টেবিলের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ইন্টার কাশী এবং শ্রীনিদি ডেকানের মধ্যকার এই ২-২ ড্র একটি রোমাঞ্চকর ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে। শেষ মুহূর্তে গোল করে কাশী শিরোপা জয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে, যখন শ্রীনিদি তাদের শক্তি প্রমাণ করেছে। এই ফলাফল দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, এবং আগামী দিনে তারা কীভাবে এই গতি ধরে রাখে, তা দেখার বিষয়। ভক্তরা এই মৌসুমে আরও উত্তেজনাপূর্ণ ফুটবলের অপেক্ষায় রয়েছেন।