সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশকে হারিয়ে দাপট ভারতের মেয়েদের

শুক্রবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের (SAFF U17 Women’s Championship) এক রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল ফুটবল প্রেমীদের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে…

Indian Football Team see off Bangladesh challenge in SAFF U17 Women’s Championship

শুক্রবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের (SAFF U17 Women’s Championship) এক রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের সাক্ষী থাকল ফুটবল প্রেমীদের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিল ভারতীয় মহিলা ফুটবল দল। এদিন জয়ের ফলে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষস্থান দখলে রাখল কোচ জোয়াকিম অ্যালেকজান্ডারসনের ছাত্রীরা।

প্রথম ম্যাচে নেপালকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিল ভারতীয় দল। তবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচটিকে ঘিরে ছিল আলাদা উত্তেজনা ও ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ। কারণ অতীতে চারটি সাফ ফাইনালে মুখোমুখি হয়ে দুই দলই দুটি করে শিরোপা জিতেছে। তবে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, ভারতীয় মেয়েরা শুধুই তিন পয়েন্ট নয়, পুরনো হিসেব চুকোতেও মাঠে।

   

Also Read | মিটল সমস্যা! খুব শিগগির শহরে আসছেন ব্রাইটসহ আরও এক বিদেশি

শুরু থেকেই ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নেয় ভারত। রক্ষণভাগে ডিভ্যানি লিন্ডা ও তাঁর সঙ্গীরা এক ইঞ্চি জায়গাও বাংলাদেশের আক্রমণভাগকে দেয়নি। সাইডব্যাকে নিখুঁত নজরদারি, আর গোলরক্ষক মুন্নির অনবদ্য উপস্থিতি সব মিলিয়ে বাংলাদেশের আক্রমণ কার্যত ব্যর্থ করে দেয় ভারত।

১৪ মিনিটেই গোল পায় ভারত। ডিভ্যানি লিন্ডা নিজের ডিফেন্স থেকে দুর্দান্ত রান করে মাঝমাঠ ভেদ করেন, এরপর বল বাড়ান পিয়ার্ল ফার্নান্দেসকে। ডি-বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে গোলের খাতা খোলেন পিয়ার্ল। বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম হাত লাগালেও বল ঠেকাতে পারেননি।

প্রথমার্ধে আরও একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিল ভারত। ২৫ মিনিটে প্রিতিকা বর্মণের ক্রসে দ্বিতীয় গোলের দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হলেও পিয়ার্লের প্রথম টাচ ভারী হয়ে যাওয়ায় সুযোগ নষ্ট হয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও তাদের আক্রমণভাগে অভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। সবচেয়ে বড় সুযোগ আসে ৩৭ মিনিটে, ফাতেমা আক্তারের দুর্দান্ত শট দুর্দান্তভাবে রক্ষা করেন মুন্নি।

Advertisements

Also Read | ‘আন্ডারডগ’ ট্যাগেই বাজিমাত! ডুরান্ড ফাইনালে আগে বড় বার্তা কিবুর

দ্বিতীয়ার্ধেও ভারতের আধিপত্য বজায় থাকে। মাঝমাঠে নিপুন পাসিং, বলের নিয়ন্ত্রণ এবং ছন্দ বজায় রেখে খেলতে থাকে দল। বাংলাদেশের ডিফেন্স সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, পাল্টা আক্রমণ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয় তারা।

৭২ মিনিটে নিড়া চানু লংজাম দুর্দান্ত একটি শট নেন, তবে ইয়ারজান বেগম এবার বড়সড় সেভ করে দলকে আপাতত বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু ৭৬ মিনিটে শেষরক্ষা হয়নি। আলিশা লিংদোয়ের কর্নার কিক থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন বদলি হিসেবে নামা বনিফিলিয়া শুল্লাই। ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে কার্যত ম্যাচ পকেটে পুরে নেয় ভারত।

শেষ পর্যন্ত কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে বুদ্ধিদীপ্ত খেলা ও ছন্দ বজায় রেখে ম্যাচ শেষ করে ভারতীয় দল। ম্যাচ জুড়েই বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে রাখার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বও প্রতিষ্ঠা করল তারা।

এদিন জয়ের ফলে গ্রুপের শীর্ষে থেকে পরবর্তী রাউন্ডের দিকে এগিয়ে গেল ভারত। দুই ম্যাচে ৯ গোল দিয়ে এখনও পর্যন্ত একটিও গোল হজম করেনি কোচ অ্যালেকজান্ডারসনের দল। আগামী ম্যাচে ভারতের লক্ষ্য থাকবে এই ছন্দ ধরে রেখে শিরোপার দিকে আরও এক কদম এগিয়ে যাওয়া।