এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ভারত অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা ফুটবল দল (Indian Football Team) ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে ২০২৫ সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে (SAFF U17 Womens Championship)শিরোপা। কিন্তু কোচ জোয়াকিম অ্যালেকজান্ডারসন (Joakim Alexandersson) জানিয়ে দিয়েছেন, দলের কাজ এখনো শেষ হয়নি। তারা শিরোপা নিশ্চিত করেছে, তবে তাদের লক্ষ্য আরও বড়। আত্মবিশ্বাসীভাবে শেষ ম্যাচ জিতে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এই টুর্নামেন্ট শেষ করা।
ভারতের মেয়েরা পাঁচ ম্যাচে ২৭ গোল করে এবং প্রতিপক্ষকে একটিও গোল করতে দেয়নি। এই মুহূর্তে সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গোলসংখ্যা, যা আগে কখনোই অর্জিত হয়নি। পাঁচ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ভারত ইতিমধ্যেই শিরোপা নিশ্চিত করেছে। এদিকে, বাংলাদেশ ও ভুটান গত ম্যাচে ১-১ ড্র করায় ভারতের খেতাব জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।
ভারতের বড় জয়টিতে ছিল একতরফা খেলা। থিম্পুর ছাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে নেপালকে ৫-০ ব্যবধানে পরাজিত করে ভারত শিরোপা নিশ্চিত করে। প্রথম গোলটি আসে প্রথম পাঁচ মিনিটেই, যেখানে নীরা চানু একটি নিখুঁত সেট-পিস থেকে গোল করেন। এরপর, ১৫ মিনিটের মধ্যে পার্ল ফের্নান্দেস ও দিব্যাণী লিন্ডার গোল করে ভারতকে ৩-০ তে এগিয়ে দেন।
যদিও শিরোপা ইতিমধ্যেই নিশ্চিত, কোচ অ্যালেকজান্ডারসন দলের মনোভাব সম্পর্কে আরও উচ্চাভিলাষী। তিনি বলেছেন, “আমরা এখানে নিজেদের উন্নতির জন্য আছি এবং সেজন্যই প্রতিটি ম্যাচে আমাদের সেরাটা দিতে হবে। শিরোপা নিশ্চিত হলেও, আমি চাই আমাদের শেষ ম্যাচে আরও ভালো পারফরম্যান্স দেখা যাক।”
এই টুর্নামেন্টে ভারতের খেলা নিয়ে কোচ অত্যন্ত সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, “আমরা একদম সঠিকভাবে প্রতিপক্ষদের চাপে ফেলতে পেরেছি এবং যেভাবে গোল তৈরি করেছি, তাতে আমি খুশি। দলের আক্রমণ এবং রক্ষণের মাঝে সুষম সমন্বয়ই আমাদের শক্তি।”
অন্যদিকে, দলের মিডফিল্ডার বনিফিলিয়া শুল্লাইও কোচের সঙ্গে একমত। ১৫ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলার জানান, “এখনও আমি মনে করি না আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেছি। যতক্ষণ না সোনালী পদক হাতে পাই, ততক্ষণ আমাদের কাজ শেষ হয়নি। আরও একটি ম্যাচ বাকি আছে, এবং আমরা ছয়টি ম্যাচ জিততে চাই, পুরো টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকতে চাই।”
বনিফিলিয়া শুল্লাই গত বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স-আপ হয়েছিলেন, কিন্তু এবার পুরো দল শিরোপা ছিনিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, “গত বছর আমরা হেরে গিয়েছিলাম, কিন্তু এবার আমাদের মানসিকতা ছিল অনেক শক্তিশালী। এই টুর্নামেন্ট আমাদের শিক্ষা দিয়েছে যে, যখন তুমি পরাস্ত হয়ো, তখন আবার ফিরে এসে আরও শক্তিশালী হতে পারো।”
এদিকে, ভারতের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস এবং মনোবল এরই মধ্যে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে যোগ্যতা অর্জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুত। কোচ অ্যালেকজান্ডারসন বিশ্বাস করেন, এই সাফ শিরোপা তাদের শক্তিশালী আক্রমণ ও রক্ষণ নিয়ে আরো আত্মবিশ্বাসী করবে।
ভারত আগামী ৩১ আগস্ট বাংলাদেশে বিরুদ্ধে তাদের শেষ ম্যাচ খেলবে। এটি শুধু একটি নিয়মরক্ষার ম্যাচ নয়, বরং তাদের উজ্জ্বল ইতিহাস রচনা করার সুযোগ। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে ভারত আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডের দিকে এগিয়ে যেতে চায়, যেটি হল এক সাফ টুর্নামেন্টে পুরোপুরি অপরাজিত এবং গোলহীনভাবে শেষ করা। কোচ অ্যালেকজান্ডারসন জানিয়েছেন, “আমরা চাই প্রতিটি ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দিতে, এবং শেষ ম্যাচে যদি গোল খাওয়ারও ঘটনা ঘটে, তা আমাদের পথচলায় বাধা নয়, তবে অপরাজিত থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করা আমাদের মূল লক্ষ্য।”
ভারতের মেয়েরা এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দল হিসেবে আত্মবিশ্বাসী। সাফ শিরোপা তাদের ভবিষ্যতের জন্য মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং তারা এখন নিজেদের আরও বড় চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে যোগ্যতা অর্জন তাদের সামনে অপেক্ষা করছে আরও কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা, কিন্তু তাদের এই আধিপত্যপূর্ণ শিরোপা জয় তাদের আত্মবিশ্বাসের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
Indian Football Team coach Joakim Alexandersson said scripting the most dominant campaign in SAFF U17 Womens Championship history