ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) বাঁ-হাতি পেসার অর্শদীপ সিং (Arshdeep Singh) আসন্ন ভারত-ইংল্যান্ড (England) টেস্ট সিরিজের জন্য প্রস্তুতি সারছেন। ২০ জুন থেকে শুরু হতে চলা পাঁচ ম্যাচের এই টেস্ট সিরিজের জন্য অর্শদীপ প্রথমবার ভারতীয় টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন। ইতিমধ্যে অনেকেই আশা করছেন যে তিনি এই সফরে তার টেস্ট অভিষেক ঘটাবেন। কেন্টে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে খেলে রেড-বল ক্রিকেটে দক্ষতা বাড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকা অর্শদীপ এখন তার দ্বিতীয় ঘরে ফিরে এসে প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
ভারত-নিউজিল্যান্ড সিরিজে নতুন ভেন্যু, দেশের জার্সিতে বিরাট-রোহিত?
অর্শদীপ সিং এক সাখ্যাৎকারে জানিয়েছেন, “এখানে ফিরে এসে খুব ভালো লাগছে। প্রথমেই একটা ঘরোয়া অনুভূতি হয়, যেন হ্যাঁ, আমি এখানে আগেও দুই মাস কাটিয়েছি। এটা দারুণ লাগছে। আমি এখানে আরও অনেক স্মৃতি তৈরি করতে মুখিয়ে আছি। এটা একটা ছোট জায়গা, খুব শান্ত। চারপাশে বেশি মানুষ নেই। মনের শান্তি চাইলে এটাই সেরা জায়গা—কারণ এখানে সবসময় ঠান্ডা হাওয়া বয়, সূর্যের মৃদু উত্তাপ থাকে, আর এই পরিবেশে হট চকোলেট পান করলে সত্যিই আনন্দ পাওয়া যায়। আর যদি মিষ্টি পছন্দ করেন, তবে চুরোস অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।”
টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অর্শদীপ জানান, দীর্ঘদিন সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলার পর তার মূল লক্ষ্য রেড-বলের সঙ্গে ছন্দ ফিরিয়ে আনা। “আজকের প্রশিক্ষণ সেশনে আমার একমাত্র প্রেরণা ছিল ছন্দটা অনুভব করা—শরীর কেমন লাগছে, রেড-বল হাত থেকে কীভাবে বেরোচ্ছে। কারণ আমরা সবাই বেশ কিছুদিন ধরে হোয়াইট-বল খেলছি। তাই এটা খুব উপভোগ করেছি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আগামী দিনে আমরা ধাপে ধাপে এগোব, তীব্রতা বাড়বে এবং ব্যাটারদের জন্য বল মোকাবিলা করা আরও কঠিন করে তুলব। ব্যাটারদের বোলিং করতে মজা হয়েছে। তারা বেশ কমপ্যাক্ট ছিল এবং প্রতিযোগিতার মনোভাব ছিল—যদিও আমরা শুধু ছন্দ খুঁজছিলাম, তারা পুরোপুরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল। এতে আরও মজা হয়েছে। আমাদের কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে এবং ঠিকঠাক পরিকল্পনা করে তাদের আউট করার চেষ্টা করতে হয়েছে। সাই প্রথমবার দলে এসেছে, সেও খুব কমপ্যাক্ট ছিল। অধিনায়ক দারুণ ছন্দে ছিলেন। আমি চেষ্টা করব আমার দক্ষতা উন্নত করতে এবং তাদের আরও বেশি আউট করতে।”
ফিকে হল মেসি জাদু! উদ্বোধনী ম্যাচই গোলশূন্য
জসপ্রীত বুমরাহর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে অর্শদীপ বলেন, এই তারকা পেসার যখন আক্রমণে থাকেন, তখন তুলনার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। সেই প্রসঙ্গে বলেন, “যখনই আমি বল হাতে নিই, মনে হয় আমিই সেরা। কিন্তু সবাই জানে—যখন আপনার আক্রমণে জসপ্রীত বুমরাহর মতো একজন খেলোয়াড় থাকেন, তখন ‘তুলনা’ শব্দটাই অবান্তর। তাই আমাদের মনোযোগ থাকে কীভাবে আমরা একে অপরের খেলা, দক্ষতা উন্নত করতে পারি এবং কীভাবে দলকে সাহায্য করতে পারি। এটাই আমার লক্ষ্য।”
কেন্টে অর্শদীপের এই প্রত্যাবর্তন শুধু তার ব্যক্তিগত প্রস্তুতির জন্যই নয়, ভারতীয় দলের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। রেড-বল ক্রিকেটে তার দক্ষতা এবং বুমরাহর সঙ্গে সমন্বয় ভারতের বোলিং আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করবে। অর্শদীপের শান্ত মনোভাব, কঠোর পরিশ্রম এবং প্রতিযোগিতার মনোভাব তাকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র করে তুলতে পারে। কেন্টের শান্ত পরিবেশে তিনি যে নতুন স্মৃতি তৈরি করতে চান, তা কেবল তার ক্যারিয়ারের জন্যই নয়, ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের জন্যও উৎসাহের বিষয়। টেস্ট অভিষেকের সম্ভাবনা নিয়ে অর্শদীপ কীভাবে এই সুযোগ কাজে লাগান, তা দেখার জন্য ক্রিকেটপ্রেমীরা মুখিয়ে আছেন।