ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেই লজ্জাজনক হারের সম্মুখীন হয়েছে ভারতীয় দল (Indian Cricket Team)। হেডিংলেতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। বিশেষ করে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ও অভিজ্ঞতার অভাব চোখে পড়েছে সকলের। এর মধ্যেই দ্বিতীয় টেস্টের (2nd Test) আগে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে সাই সুদর্শনের (Sai Sudharsan) চোট।
আইপিএল ২০২৫ সিজনে সর্বোচ্চ রান করার সুবাদে প্রথমবারের জন্য ভারতের টেস্ট দলে জায়গা পেয়েছেন সাই সুদর্শন। অভিষেক টেস্টেই হেডিংলেতে সুযোগ পান তিনি। প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০ রানের সংযোজন করেন। যদিও সেই ইনিংস ভারতকে হার থেকে বাঁচাতে পারেনি, তবুও সুদর্শনের আত্মবিশ্বাস ও স্কিল ছিল নজরকাড়া।
কিন্তু টেস্টের শেষ দিনে ফিল্ডিং করার সময় কাঁধে চোট পান তিনি। ফিল্ডিং ছেড়ে মাঠ ছাড়েন এবং তাঁর পরিবর্তে নীতীশ কুমার রেড্ডি ফিল্ডিংয়ে নামেন। এরপর পুরো দিনেই আর মাঠে নামতে দেখা যায়নি সুদর্শনকে। ‘রেভ স্পোর্টস’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সুদর্শনের চোট গুরুতর না হলেও তিনি এখনও সম্পূর্ণ ফিট নন এবং এজবাস্টনে ২ জুলাই শুরু হতে চলা দ্বিতীয় টেস্টে তাঁর খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
ভারতীয় শিবিরের তরফ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ম্যাচের মাঝে বা সিরিজ চলাকালীন এই ধরনের চোট যে দলের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
যদি সুদর্শন দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে না পারেন, তা হলে তাঁর জায়গায় বেশ কয়েকটি বিকল্প রয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের হাতে। হেডিংলেতে সুদর্শন তিন নম্বরে ব্যাট করেছিলেন। সেই জায়গায় অধিনায়ক শুভমন গিলকে ফেরানো যেতে পারে, কারণ তিন নম্বরে ব্যাট করতেই অভ্যস্ত তিনি এবং এর আগে সেই জায়গায় ভাল সাফল্যও পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে গিলের চার নম্বরে নামার পরিবর্তে কেউ নতুন ব্যাটার ঢুকতে পারেন একাদশে।
এছাড়াও করুণ নায়ার হতে পারেন আরেকটি সম্ভাব্য বিকল্প। প্রথম টেস্টে ছ’নম্বরে ব্যাট করেছিলেন করুণ। তবে তাঁর অভিজ্ঞতা ও আগের পারফরম্যান্স তাঁকে তিন নম্বরের জন্যও বিবেচনায় আনতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। আবার বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণকেও একাদশে আনার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিয়মিত রান করে আসা এই ব্যাটার এখনও পর্যন্ত টেস্ট অভিষেক করতে পারেননি। তবে এই সুযোগ তাঁর জন্য হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট।
নীতীশ কুমার রেড্ডিও একাদশে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন। সুদর্শনের পরিবর্তে যেভাবে ফিল্ডিংয়ে নেমে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাতে তাঁর প্রতি টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা তৈরি হয়েছে। যদিও ব্যাট হাতে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা না থাকায় তাঁর ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করা কিছুটা ঝুঁকির হতে পারে।
এই মুহূর্তে টেস্ট সিরিজে পিছিয়ে রয়েছে ভারত। ইংল্যান্ডের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে দলের ব্যাটিং অর্ডারে স্থিরতা এবং টপ অর্ডারে আক্রমণাত্মক মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুদর্শনের মতো তরুণ প্রতিভার চোট দলের পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে বাধ্য।
তবে ২ জুলাইয়ের আগে হাতে কিছুদিন সময় রয়েছে। যদি সুদর্শন দ্রুত চোট কাটিয়ে ওঠেন, তবে তিন নম্বরে তাঁকেই দেখা যেতে পারে দ্বিতীয় টেস্টে। না হলে করুণ, ঈশ্বরণ বা গিল— কেউ একজন পূরণ করবেন সেই শূন্যস্থান। সিরিজে সমতা ফেরাতে দ্বিতীয় টেস্ট ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই লড়াইয়ে সুদর্শনের থাকা বা না-থাকা, দুই-ই বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে।
Indian Cricket Team batter Sai Sudharsan doubtful for 2nd Test