আইসিসি সোমবার ২০২৫-২০২৯ মেয়েদের ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (India Women’s FTP 2025-29) ঘোষণা করেছে, যেখানে ভারত ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে হোম ম্যাচ খেলবে। এই ঘোষণা অনুযায়ী, ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল এই সময়ের মধ্যে নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ডে কিছু সফরও করবে। দ্বিতীয় মেয়েদের এফটিপি ২০২৫ সালের মে থেকে ২০২৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।
নতুন এফটিপিতে প্রতি বছর একটি আইসিসি মহিলা ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে ২০২৭ সালে প্রথম ছয় দলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজন থাকবে। ২০২৫ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে আইসিসি মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৬ সালে যুক্তরাজ্যে হবে মহিলা টি২০ বিশ্বকাপ এবং ২০২৮ সালে আরেকটি মহিলা টি২০ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে, তবে হোস্ট এখনো ঘোষণা করা হয়নি।
আইসিসি মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন সংযোজন
এই বছর থেকে আইসিসি মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ১১ জনে বেড়ে যাচ্ছে, যেখানে জিম্বাবুয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিচ্ছে। মোট ১৩২টি ওয়ানডে ম্যাচ ৪৪টি সিরিজে অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রতিটিতে তিনটি করে ম্যাচ থাকবে, যা ২০২৯ সালে আইসিসি মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের পথ তৈরি করবে।
আইসিসি মহিলা টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৬ এর আগে, ইংল্যান্ড ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজের আয়োজন করবে, যেখানে আয়ারল্যান্ড পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ পরিচালনা করবে। ২০২৭ এবং ২০২৮ সালে শ্রীলঙ্কা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজও নিজেদের দেশীয় ক্রিকেটে টি২০আই ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করবে।
আইসিসির সাধারণ ব্যবস্থাপক ওয়াসিম খানের মন্তব্য, “নতুন সংস্করণে জিম্বাবুয়ের অন্তর্ভুক্তি হয়েছে এবং এটি একটি ভাল খবর। এটি অত্যন্ত সন্তোষজনক যে সদস্য বোর্ডগুলি বিভিন্ন ফরম্যাটে খেলার জন্য আগ্রহী।”
টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ
এই এফটিপিতে টেস্ট ম্যাচের সুযোগ আরও বাড়ানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সকলেই মাল্টি-ফরম্যাট সিরিজ খেলার বিষয়ে সম্মত হয়েছে, যাতে ওয়ানডে এবং টি২০আই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অস্ট্রেলিয়া সর্বাধিক দুইটি সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ড, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে, এবং একটি সিরিজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে।
২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকসের জন্য জুলাই মাসে একটি নির্ধারিত সময় রাখা হয়েছে, পাশাপাশি WBBL (নভেম্বর), দ্য হান্ড্রেড (অগাস্ট) এবং উইমেনস প্রিমিয়ার লিগ (WPL) (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) জন্য বার্ষিক সময়সীমা রয়েছে। ২০২৬ সাল থেকে WPL জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া, ভারতের মাল্টি-ফরম্যাট সফর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হবে, যা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে WPL এর পর অনুষ্ঠিত হবে। “এটি প্রথম মহিলা এফটিপি, যেখানে WPL শুরু থেকে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। বিসিসিআইয়ের WPL-কে ক্যালেন্ডার বছরের শুরুতে সরানোর সিদ্ধান্ত আমাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য সুবিধাজনক সময় নির্ধারণের সুযোগ দিয়েছে।”
ক্রিকেট মরশুমের দীর্ঘায়িত করা
পিটার রোচ, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অপারেশনস ও সূচি বিভাগের প্রধান, জানান, “আমরা কয়েক বছর ধরে আমাদের মহিলা দলের জন্য নিখরচায় সুযোগ খুঁজছিলাম, যাতে তারা নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শন করতে পারে।” তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারি-মার্চে WPL এর পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মৌসুমটি বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের জন্য সুবিধাজনক।”
ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করার জন্য এবার একটি দারুণ সুযোগ পাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের বিপক্ষে খেলার মাধ্যমে তারা নিজেদের স্কিলসেট উন্নত করতে পারবে এবং নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হবে।
এই নতুন মেয়েদের ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম কেবল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের জন্য নয়, বরং আন্তর্জাতিক মহিলা ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে, মহিলা ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এবং মানও আরও বৃদ্ধি পাবে। ক্রিকেট বিশ্বের কাছে এই নতুন এফটিপি একটি আশাবাদী সংবাদ।