বাংলাদেশকে হারাতে কোন চাবিকাঠি খুঁজছে মার্কুয়েজের ভারত?

মঙ্গলবার শিলংয়ে (Shillong) এএফসি এশিয়ান কাপ যোগ্যতা অর্জন (AFC Asian Cup 2027 Qualifiers) পর্বে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত বনাম বাংলাদেশ (India vs Bangladesh)। সূচি প্রকাশের পরই…

indian-football-team-vs-maldives-highlights-analysis

মঙ্গলবার শিলংয়ে (Shillong) এএফসি এশিয়ান কাপ যোগ্যতা অর্জন (AFC Asian Cup 2027 Qualifiers) পর্বে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত বনাম বাংলাদেশ (India vs Bangladesh)। সূচি প্রকাশের পরই এটি ভারতীয় ফুটবল দলের (India Football Team) জন্য তুলনামূলকভাবে জয়যোগ্য ম্যাচ বলে মনে হয়েছিল। সর্বোপরি, ভারত (ফিফা র‍্যাঙ্ক ১২৬) বাংলাদেশের (ফিফা র‍্যাঙ্ক ১৮৫) বিপক্ষে ২৮ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৪ টিতে হেরেছে, ১৪টি জিতেছে এবং ১০টি ড্র করেছে। কিন্তু ফিক্সচার ঘোষণার পর থেকে কয়েক মাসে এই ম্যাচটি ভারতের জন্য এক চ্যালেঞ্জিং সম্ভাবনায় পরিণত হয়েছে।

Advertisements

৯৫ গোলের কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রীকে (Sunil Chhetri) অবসর থেকে ফিরতে হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের দলে এখন প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হামজা চৌধুরী যোগদান করেছেন। গত তিন ম্যাচে ভারত বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্র দুটি ড্র করেছে। তাই মানোলো মার্কুয়েজের ভারতের জন্য এক বড় পরীক্ষা হতে চলেছে। তাহলে ভারত কীভাবে বাংলাদেশকে হারাতে পারে?

   

হামজার প্রভাব নিয়ন্ত্রণ

হামজা চৌধুরীর আগমনে বাংলাদেশে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে। দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, “মনে হচ্ছে আমাদের মেসি এসে গেছে।” তবে মেসির মতো নয়, হামজা মূলত একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বা গভীরে খেলা প্লেমেকার হিসেবে কাজ করেছেন। তার প্রিমিয়ার লিগের ক্ষমতা থাকায় বাংলাদেশের কোচ জাভিয়ের কাবরেরা তাকে গোলের কাছাকাছি খেলানোর চেষ্টা করতে পারেন। তিনি মাঝমাঠ থেকে আক্রমণ পর্যন্ত যে কোনও জায়গায় খেলতে পারেন, এবং এই অনিশ্চয়তা মার্কেজকে তার ফর্মেশন নিয়ে নমনীয় হতে বাধ্য করতে পারে।

ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজের চোটের কারণে ফারুখ চৌধুরীর জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফারুখ মিডফিল্ডে গভীরে বা ছেত্রীর পাশে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে পারেন। হামজা যদি মাঝমাঠ থেকে খেলেন, ফারুখের শারীরিক ক্ষমতা এবং পরিশ্রম তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ হবে। ম্যান-মার্কিংয়ের প্রলোভন থাকতে পারে, কিন্তু তাতে ছেত্রী একা পড়ে যেতে পারেন। তাই মার্কুয়েজ সম্ভবত সুরেশ সিং এবং আপুইয়ার ডিফেন্সিভ ডাবল-পিভট বেছে নেবেন। আয়ুষ ছেত্রী মালদ্বীপের বিপক্ষে ভালো খেললেও তার জায়গা হারাতে পারেন। হামজা যদি গোলের কাছে খেলেন, তবে সুরেশ এবং আপুইয়াকে শান্ত এবং সঠিক পজিশনে থাকতে হবে, কারণ হামজা ভুলের সুযোগে দ্রুত শাস্তি দিতে পারেন।

ছেত্রীর উপর একমাত্র নির্ভরতা এড়ানো

বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের শেষ সাত গোলের ছয়টিই এসেছে ছেত্রীর পা থেকে। কাবরেরা নিশ্চিতভাবে তাকে আটকাতে মনোযোগ দেবেন। হামজা ছেত্রীর সাপ্লাই বন্ধ করতে পারেন, কিন্তু মার্কুয়েজের অধীনে ভারত এখন উইং দিয়ে আক্রমণ করে। তাই হামজাকে শুধু ছেত্রীর জন্য ব্যবহার করা বাংলাদেশের জন্য অপচয় হবে। ছেত্রীকে আক্রমণের একটি অংশ হিসেবে রাখতে হবে, পুরোটা নয়। এতে বাংলাদেশ শুধু তাকে দ্বিগুণ মার্ক করে আটকে দিতে পারবে না।

লিস্টনের ভূমিকা

লিস্টন কোলাকো মালদ্বীপের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেছেন। বাংলাদেশের সাদ উদ্দিনের জন্য তাকে আটকানো কঠিন হবে। ছেত্রীর নিয়ার পোস্টে দৌড়ের ক্ষমতা বিবেচনায়, লিস্টনকে উইংয়ে রাখাই ভালো। তার কাজ সহজ মার্কারকে হারিয়ে ছেত্রীর জন্য ক্রস দেওয়া। এটি বারবার করলে গোল আসবে।

সেট-পিসে সুবিধা

ভারতের ডিফেন্স বাংলাদেশের তুলনায় উচ্চতায় এগিয়ে। মার্কুয়েজের অধীনে ৬০% গোল এসেছে কর্নার থেকে। মহেশ সিংয়ের ডেলিভারি এবং ভালপুইয়ার সঙ্গে তার সমন্বয় এখানে গুরুত্বপূর্ণ হবে।

বাংলাদেশের গতির মোকাবিলা

বাংলাদেশের শেখ মোরসালিন গতি এবং দূরপাল্লার শটে বিপজ্জনক। ভারতের ডিফেন্স দ্রুত ব্রেকে দুর্বল। ভেকে বা ঝিঙ্গানের গতির অভাবে ভালপুইয়া এবং বোসকে কভার করতে হবে। মিডফিল্ড এবং ডিফেন্সের মধ্যে দূরত্ব বাড়ালে ছেত্রী হাফ-স্পেসে কার্যকর হতে পারেন। এই কৌশলগুলো সঠিকভাবে কার্যকর করলে ভারত বাংলাদেশকে হারাতে পারে। মার্কেজের পরিকল্পনা এবং ছেত্রীর অভিজ্ঞতা এখানে চাবিকাঠি হবে।