দীর্ঘ জয়হীন সময় পেরিয়ে ভারত (India Football Team) অবশেষে জয়ের স্বাদ পেয়েছে। ভারত বুধবার সন্ধ্যায় একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে মালদ্বীপকে (India vs Maldives) ৩-০ গোলে পরাজিত করে । ৪৮৯ দিনের জয়ের খরা কাটিয়ে এটি কোচ মানোলো মার্কুয়েজের অধীনে ভারতের প্রথম জয় । রাহুল ভেকে, লিস্টন কোলাকো এবং সুনীল ছেত্রীর গোলে এই জয় সম্ভব হয়েছে।এটি ২০২৭ এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে (India vs Bangladesh) আসন্ন লড়াইয়ের জন্য একটি আদর্শ প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ব্লু টাইগার্সের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অনেক ভক্তের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আক্রমণাত্মক খেলার প্রদর্শনী প্রচুর প্রশংসা কুড়িয়েছে। লিস্টন কোলাকোর নায়কোচিত পারফরম্যান্স তাকে করতালি অর্জন করিয়েছে। আর সুনীল ছেত্রীর গোলের মাধ্যমে বিজয়ী প্রত্যাবর্তন অনেককে উচ্ছ্বাসে মাতিয়েছে। তবে এই সমস্ত উজ্জ্বলতার মাঝে একজন খেলোয়াড় যিনি নীরবে দৃঢ় পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। তিনি হলেন মিডফিল্ডার আয়ুষ ছেত্রী (Ayush Chhetri)।
এফসি গোয়ার এই মিডফিল্ডার তার অভিষেকে একটি স্মরণীয় প্রদর্শন করেছেন। ভারতের মিডফিল্ডে শান্তি এবং শক্তি এনে দিয়ে। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিডফিল্ডকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের তাদের হাফে কোনও খালি জায়গা না দিয়ে। আয়ুষ (Ayush Chhetri)বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার জায়গা ধরে রাখার সম্ভাবনায় রয়েছেন। যেখানে তাকে শেফিল্ড ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর (Hamza Choudhary)বিরুদ্ধে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।
প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে চৌধুরী ব্লু টাইগার্সের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন। ভারত যদি ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তবে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। এফসি গোয়ার এই তরুণ এই কাজে মানোলো মার্কুয়েজের বিশেষ অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন। কীভাবে? আসুন দেখি।
২০২৪-২৫ ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL) লিগ পর্বে এফসি গোয়ার আটটি ক্লিন শিট রাখার একটি প্রধান কারণ ছিল শুধু তাদের ডিফেন্স লাইন নয়। বরং তার সামনের খেলোয়াড়দের অবদান। কার্ল ম্যাকহিউয়ের সঙ্গে মিলে আয়ুষ নিজেকে তার ডিফেন্সের একজন নির্ভরযোগ্য ‘রক্ষক’ হিসেবে প্রমাণ করেছেন। একটি শক্তিশালী ঢালের মতো কাজ করে। ২১ বছর বয়সী এই তরুণের ডিফেন্সিভ লাইনের ঠিক সামনে নিজেকে সঠিক জায়গায় রাখার ক্ষমতা রয়েছে। তিনি সমস্যা কেটে ফেলতে পারেন।
তিনি নিশ্চিত করতে চাইবেন যে চৌধুরী (Hamza Choudhary)বা বাংলাদেশের অন্য কোনও খেলোয়াড় কেন্দ্রীয় অঞ্চল দিয়ে ডিফেন্সিভ থার্ডে সহজে প্রবেশ করতে না পারে। আয়ুষের (Ayush Chhetri)কঠোর পরিশ্রমী স্বভাবের জন্য তিনি ব্যাকলাইনের সামনে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিজেকে অবস্থান করতে পারেন। কেন্দ্রীয় অঞ্চলের মাধ্যমে সরবরাহের লাইন বন্ধ করে দিয়ে প্রতিপক্ষকে হতাশ করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেপশন এবং পজেশন পুনরুদ্ধারের কাজ। তিনি এই মরশুমে ২১টি আইএসএল ম্যাচে ৬২টি রিকভারি জিতে ভালোভাবে দেখিয়েছেন।
মালদ্বীপের বিরুদ্ধে তার অভিষেকে আয়ুষের (Ayush Chhetri) স্থিরতা এবং শক্তি ভারতীয় মিডফিল্ডের জন্য একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি শুধু একজন তরুণ খেলোয়াড় নন, বরং এমন একজন যিনি চাপের মুহূর্তে নিজেকে ধরে রাখতে জানেন। তার এই গুণগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে যখন প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডে হামজা চৌধুরীর মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকবেন।
মানোলো মার্কুয়েজের কৌশলে আয়ুষ হতে পারেন সেই ‘বিশেষ অস্ত্র’। তিনি প্রতিপক্ষের মিডফিল্ডকে নিষ্ক্রিয় করে ভারতের জয়ের পথ প্রশস্ত করবেন। তার শারীরিক শক্তি, খেলার বোধ এবং পজেশন ধরে রাখার ক্ষমতা তাকে এই ম্যাচে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর করে তুলতে পারে। মালদ্বীপের বিরুদ্ধে তার প্রথম ম্যাচে দেখানো প্রতিশ্রুতি যদি তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও বজায় রাখতে পারেন। তবে ভারতীয় ফুটবলের জন্য একজন নতুন তারকার উত্থান নিশ্চিত।