শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ডেফ ক্রিকেট ৫-০ সিরিজে জয়ী ভারত

ভারতীয় ডেফ ক্রিকেট দল (India Deaf Cricket Team) শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়ে ৫ ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক ওডিআই ডেফ ক্রিকেট সিরিজে দুর্দান্ত জয়লাভ করেছে। দিল্লির ডি.ডি.এ. রোশনারা…

India emerge victorious in ODI Deaf cricket series against Sri Lanka

ভারতীয় ডেফ ক্রিকেট দল (India Deaf Cricket Team) শ্রীলঙ্কাকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়ে ৫ ম্যাচের দ্বিপাক্ষিক ওডিআই ডেফ ক্রিকেট সিরিজে দুর্দান্ত জয়লাভ করেছে। দিল্লির ডি.ডি.এ. রোশনারা ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই সিরিজের ফলাফলে ভারতীয় দল শক্তিশালী শ্রীলঙ্কা দলকে ৫-০ ব্যবধানে পরাজিত করে। এই সিরিজটি ২ ডিসেম্বর থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।

ভারতীয় ডেফ ক্রিকেট দল এই সিরিজের শেষ ম্যাচে ১৩ রানে শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে। ভারত প্রথমে ব্যাটিং করে ৪৯.৫ ওভারে ২৮৯ রান করে ১০ উইকেটে অলআউট হয়। তারপর শ্রীলঙ্কাের দল ৪৮.৪ ওভারে ২৭৬ রানে অলআউট হয়ে সিরিজটি শেষ হয়। এই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হন ভারতীয় দলের সাই আকাশ, যিনি তাদের শক্তিশালী পারফরম্যান্সে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন।

ভারতের ডেফ ক্রিকেট দলের এই সাফল্যটি তাদের ব্যাপক প্রশিক্ষণ ও প্র্যাকটিস সেশনের ফলস্বরূপ এসেছে, যা হেড কোচ দেব দত্ত এবং সহকারী কোচ সুশীল গুপ্তার তত্ত্বাবধানে হয়েছিল। ভারতের ডেফ ক্রিকেট দল দিল্লিতে ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশ নেয়।

শ্রীলঙ্কাের আলানরোজ ক্যালেপ সিরিজে সর্বাধিক উইকেট শিকারী হিসেবে ১২ উইকেট লাভ করেন। অন্যদিকে, ভারতীয় দলের সান্তোষ কুমার মাহাপাত্র সিরিজের সেরা ব্যাটার হন, তিনি ৫ ম্যাচে ৩২৫ রান করেন, যার মধ্যে একটি সেঞ্চুরি এবং দুটি হাফ সেঞ্চুরি অন্তর্ভুক্ত।

এই সিরিজটি ভারতীয় ডেফ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (আই.ডি.সিএ.) দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল, যা ডেফ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (ডি.আই.সিসি.) এর সদস্য। ডি.আই.সিসি. আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আই.সি.সি.) এর সঙ্গে মিলে বিশ্বের শুনতে অক্ষম অ্যাথলেটদের জন্য ক্রিকেট প্রচারের কাজ করে। উভয় দলই এই অনন্য সুযোগটি কাজে লাগিয়ে তাদের প্রতিভা প্রদর্শন করেছে এবং প্রতিটি ম্যাচে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে।

ভারতীয় দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অধিনায়ক ভিরেন্দ্র সিং, এবং দলের মধ্যে ছিলেন ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৫ জন খেলোয়াড়। শ্রীলঙ্কাের দলের নেতৃত্ব ছিলেন গিমাদু মালকাম, যিনি দারুণভাবে দলকে নেতৃত্ব দেন।

Advertisements

আই.ডি.সিএ. এর সভাপতি সুমিত জৈন সিরিজটি সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “এই ধরনের দ্বিপাক্ষিক সিরিজগুলি দলগুলোর প্রতিভা শানাতে এবং ভবিষ্যতে বড় প্ল্যাটফর্মে প্রস্তুত হতে সহায়ক। আই.ডি.সিএ. ভবিষ্যতে আরও বেশি সিরিজের আয়োজন করে শুনতে অক্ষম খেলোয়াড়দের বিশেষ ক্রীড়া প্রতিভাকে মূল্যায়ন করতে চায়।”

ভিলু পোনাওয়ালা ফাউন্ডেশনের সিইও জস্বীন্দর নারাং উভয় দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করেন, বলেন, “এই সিরিজটি বিশেষভাবে অক্ষম খেলোয়াড়দের পরিশ্রম এবং দক্ষতার একটি দৃষ্টান্ত। আই.ডি.সিএ. এর ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়, যারা খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করতে এবং আরও ভাল পারফরম্যান্স করার সুযোগ প্রদান করছে।”

প্রতিক পুরি, দিল্লির ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান বলেন, “ভারত ও শ্রীলঙ্কাের ডেফ ক্রিকেটারদের দিল্লিতে খেলা দেখতে একেবারে দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল। তাদের দক্ষতা এবং ক্রীড়াবান্ধব মনোভাব আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে।”

এমন একটি ঐতিহাসিক সাফল্য শুধুমাত্র ভারতের জন্য নয়, বিশ্বের সকল শুনতে অক্ষম ক্রিকেট খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। এই সিরিজটি প্রমাণ করে যে অক্ষমতা কখনোই বাধা হতে পারে না, এবং সঠিক প্রশিক্ষণ এবং সমর্থন পেলে বিশেষ ক্রীড়াবিদরা যে কোনো আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম।