কলকাতা লিগে (CFL 2025)টানা দুই ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে নৈহাটিতে পা রেখেছিল মোহনবাগান (Mohun Bagan)। লক্ষ্য ছিল জয়ের হ্যাটট্রিক। কিন্তু বৃষ্টিভেজা মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে পারল না ডেগি কর্ডোজোর দল। ফলে জর্জ টেলিগ্রাফের (George Telegraph) বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল সবুজ-মেরুন শিবিরকে।
প্রথম ম্যাচে হারের পর ধারাবাহিক দুই জয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল মোহনবাগান। সেই ছন্দ ধরে রাখতেই শুক্রবার জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ছন্দে মাঠে নামে তারা। তবে শুরু থেকেই দেখা যায়, ডান দিক দিয়ে গতি তুলতে সমস্যায় পড়ছে দল। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখে নির্বাসিত থাকা সালাউদ্দিন আদনানের অনুপস্থিতি বেশ ভালোই চোখে পড়ে। তাঁর জায়গায় শিবম মুণ্ডাকে খেলান কোচ ডেগি, যিনি রেলের বিরুদ্ধে অসাধারণ গোল করেছিলেন। কিন্তু এদিন তাঁকে আটকে রাখতে খুব একটা সমস্যায় পড়েনি জর্জ টেলিগ্রাফের রক্ষণ।
ম্যাচের শুরুতেই একবার বিপদে পড়তে হয় মোহনবাগানকে। দূরপাল্লার একটি শট সামান্য বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ১৩ মিনিটে জর্জের অধিনায়ক অরিজিৎ সিংয়ের ৩০ গজ দূর থেকে নেওয়া শট গোলমুখী হলেও, লাভ হয়নি। এরপর ২২ মিনিটে কর্নারের কাছ থেকে ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। কিন্তু বক্সে ভাসানো বল অনায়াসে ধরে ফেলেন জর্জের গোলকিপার রাখেশ বাহাদুর। পরের মিনিটেই কর্নার পায় বাগান, কিন্তু তা থেকেও ফল মেলেনি।
প্রথমার্ধে ৩৯ ও ৪৩ মিনিটে পরপর দুইবার গোলের সামনে এসে গোল করতে ব্যর্থ হন মোহনবাগান ফুটবলাররা। বিরতির ঠিক আগে আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া হয়। ফলে গোলশূন্য স্কোরলাইন নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা গতি আসে মোহনবাগানের খেলায়। ৪৬ মিনিটেই গোলের সুযোগ তৈরি হয়, কিন্তু গোল হয়নি। ৬১ মিনিটেও একবার সুযোগ আসে, কিন্তু সেখানেও সাফল্য মেলেনি। উল্টে ৬৭ মিনিটে এবং ৮০ মিনিটে জর্জ টেলিগ্রাফও পাল্টা আক্রমণে গোলের কাছাকাছি পৌঁছায়। ৮১ মিনিটের মাথায় ফ্রিকিক পায় জর্জ টেলিগ্রাফ। ডানদিক থেকে নেওয়া আকাশ দাসের শট বারে লেগে ফিরে আসে। তবে দুই দলের রক্ষণ এবং গোলকিপারের দক্ষতায় স্কোরলাইন বদলায়নি।
ম্যাচের শেষ দিকে, অতিরিক্ত সময়ে মোহনবাগানের একটি সুবর্ণ সুযোগ আসে। ৯৪ মিনিটে গোলকিপারের সঙ্গে একে-একের মুখোমুখি হন বাগান ফুটবলার টংসিন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, বল জালে জড়াতে পারেননি।
শেষপর্যন্ত ০-০ স্কোরলাইনে শেষ হয় ম্যাচ। ফলে কলকাতা লিগে টানা তিনটি ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল মোহনবাগানের। ড্রয়ের ফলাফলে কিছুটা হলেও হতাশ ডেগি কর্ডোজোর শিবির। তবে টুর্নামেন্ট এখনও দীর্ঘ। সামনে আরও সুযোগ রয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর। অন্যদিকে জর্জ টেলিগ্রাফের কোচ সায়ন্তন দাস রায় সবুজ-মেরুন শিবিরের বিপক্ষে ড্র করে খুশি। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ১ পয়েন্ট। তাতে আমরা সফল হয়েছি। কারণ শেষ দুই ম্যাচে পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছিল আমাদের। দলের সব ফুটবলারই নিজেদের খুব সুন্দর ভাবে ধরে রেখেছিল।’