১৭ বছরের বিশ্বরেকর্ড বাংলার কোয়েলের, শুভেচ্ছাবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ওয়েটলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে (Commonwealth Weightlifting Championship 2025) নজিরবিহীন সাফল্য এনে দিলেন হাওড়ার কিশোরী কোয়েল বর (Koyel Bar)। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই এক সঙ্গে…

howrah-girl-koyel-bar-wins-double-gold-world-record-commonwealth-weightlifting-championship-2025

আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ ওয়েটলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে (Commonwealth Weightlifting Championship 2025) নজিরবিহীন সাফল্য এনে দিলেন হাওড়ার কিশোরী কোয়েল বর (Koyel Bar)। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই এক সঙ্গে দুই বিভাগে সোনার পদক জিতে বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক গড়লেন বাংলার এই প্রতিভাবান ভারোত্তোলক। মেয়েদের ৫৩ কেজি বিভাগে কোয়েলের তোলা মোট ওজন ১৯২ কেজি ইউথ ও জুনিয়র বিভাগে এক নতুন বিশ্বরেকর্ড।

Advertisements

জন আব্রাহামের হাতে ‘প্রেসিডেন্ট কাপ’ তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি

Advertisements

এই অসাধারণ সাফল্যে কোয়েল শুধু যে ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রকে গর্বিত করেননি। একই সঙ্গে বাংলার নামও তুলে ধরেছেন আন্তর্জাতিক মানচিত্রে। স্ন্যাচে ৮৫ কেজি এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১০৭ কেজি ওজন তুলে তিনি ভেঙেছেন আগের রেকর্ড (১৮৮ কেজি)। কোয়েলের এই পারফরম্যান্স এতটাই দুর্দান্ত ছিল যে, জুনিয়র নয়, সিনিয়র বিভাগের দ্বিতীয় স্থানাধিকারীকেও পেছনে ফেলেছেন তিনি।

হাওড়ার সাঁকরাইলের ধুলাগড়ের ব্যানার্জি পাড়ায় কোয়েলের বাড়ি। বাবা মিঠুন বর স্থানীয় বাজারে মুরগির মাংস বিক্রি করেন। এক সময় তিনিও ওয়েটলিফটিং করতেন, যদিও সেই প্রচেষ্টা সাফল্যে পৌঁছয়নি। তবে মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে ভোলেননি তিনি। কোয়েলের মা শ্রাবন্তী বর বলেন, “ও যখন বাড়ি ফেরে, পটলের তরকারি আর ইলিশ মাছ রান্না করে খাওয়াই। ক্যাম্পে এসব পায় না তো।”

কাস্টমস চেকিংয়ে আটকে সুপার সিক্সের দৌড়ে ধাক্কা খেল মোহনবাগান

২০১৮ সালে বাবার অনুপ্রেরণায় ওয়েটলিফটিং শুরু করে কোয়েল। প্রথমে পাঁচলার দেউলপুরে কোচ অষ্টম দাসের তত্ত্বাবধানে শুরু হয় প্রশিক্ষণ। একে একে জেলা, রাজ্য, ও জাতীয় পর্যায়ে জিতে নেয় একাধিক সোনা। ২০২৩ সালে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পাতিয়ালার জাতীয় ক্যাম্পে সুযোগ পাওয়ার পর কোয়েলের প্রশিক্ষণ শুরু হয় জাতীয় কোচ বিজয় শর্মার তত্ত্বাবধানে। কোচ বিজয় শর্মা জানান, “ওর মধ্যে প্রথম থেকেই ছিল এক ধরনের শারীরিক সক্ষমতা। শুধু টেকনিক ঠিক করার পর, ও নিজেই নিজেকে প্রমাণ করেছে।”

কোয়েল নিজেও জানালেন, “বিশ্বরেকর্ডটাই লক্ষ্য ছিল। আমি সাধারণত অনুশীলনে ১০৭-১০৮ কেজি তুলতে পারি। তাই প্রতিযোগিতায় এই ওজন তোলা আমার আয়ত্ত্বেই ছিল।” কোয়েল বলেন, “১০৯ কেজি তুলতেও পারতাম, তবে অল্পের জন্য মিস করেছি।”

গণেশ চতুর্থীতে আচমকা IPL থেকে অবসর ঘোষণা তারকা ক্রিকেটারের

বাংলার ক্রীড়ামহলে শুরু হয়েছে উচ্ছ্বাসের ঝড়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে কোয়েলের সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়ে লেখেন, “ঘরের মেয়ে কোয়েল বর বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক করে জোড়া সোনা জিতে বাংলাকে গর্বিত করেছে। আমি ওকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও ভালোবাসা জানাই।” রাজ্যের তরফে কোয়েলকে সংবর্ধনার আয়োজনের কথাও জানানো হয়েছে।

কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে কোয়েলের পাশাপাশি আরেক বাঙালি প্রতিযোগী অনীক মোদিও ছেলেদের ৬৫ কেজি বিভাগে সোনা জিতেছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি নজর কাড়েন কোয়েল বর। কেবল জোড়া সোনার জন্য নয়, বরং তার বিপরীতে থাকা প্রতিযোগীদের তুলনায় অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা দেখিয়ে।