Cricket Psychology: খেলাধুলায় মানসিক চাপ নিয়ে শ্রীনাথের লেখা গ্রন্থ উন্মোচন

প্রাক্তন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার কৃষ্ণরাজ শ্রীনাথ শুক্রবার এক নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনি মনোবিজ্ঞানী এমএন বিশ্বনাথের সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত বই ‘হ্যান্ডবুক অফ ক্রিকেট সাইকোলজি’-র (Handbook…

Cricket Psychology, Handling pressure,sports Krishnaraj Srinath, author, Anil Kumble ,

short-samachar

প্রাক্তন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার কৃষ্ণরাজ শ্রীনাথ শুক্রবার এক নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনি মনোবিজ্ঞানী এমএন বিশ্বনাথের সঙ্গে যৌথভাবে লিখিত বই ‘হ্যান্ডবুক অফ ক্রিকেট সাইকোলজি’-র (Handbook of Cricket Psychology) প্রকাশনের মাধ্যমে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। বেঙ্গালুরুতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই বইটির উন্মোচন করা হয়। ক্রীড়াবিদদের মানসিক চাপ এবং আবেগের ঝড় মোকাবিলার ক্ষমতা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করা এই গ্রন্থটি তাদের পারফরম্যান্স উন্নত করতে সাহায্য করার লক্ষ্য নিয়ে রচিত হয়েছে। বইটির ভূমিকা লিখেছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ও কোচ অনিল কুম্বলে।

   

‘হ্যান্ডবুক অফ ক্রিকেট সাইকোলজি’ ক্রিকেটের মাঠে খেলোয়াড়দের মানসিক দিকগুলিকে বিশ্লেষণ করার একটি প্রয়াস। কৃষ্ণরাজ শ্রীনাথ, যিনি নিজে একজন ক্রিকেটার হিসেবে মাঠের চাপের সঙ্গে পরিচিত, এবং মনোবিজ্ঞানী এমএন বিশ্বনাথ মিলে এই বইয়ে ক্রীড়াবিদদের মানসিক শক্তি বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বইটিতে চাপের মুহূর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, হতাশা কাটিয়ে ওঠা এবং আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার মতো বিষয়গুলি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শ্রীনাথ বলেন, “ক্রিকেট শুধু শারীরিক দক্ষতার খেলা নয়, এটি মানসিক শক্তিরও পরীক্ষা। আমরা এই বইয়ে সেই দিকটির উপর আলোকপাত করতে চেয়েছি।”

অনিল কুম্বলে তাঁর ভূমিকায় লিখেছেন, “আমি নিজে খেলোয়াড় হিসেবে দেখেছি যে মানসিক চাপ কীভাবে একজন ক্রিকেটারের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে। এই বইটি তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী হবে।” কুম্বলের এই সমর্থন বইটির গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে।

ক্রিকেটে মানসিক দৃঢ়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আন্তর্জাতিক ম্যাচে হোক বা আইপিএলের মতো উচ্চ-চাপের টুর্নামেন্টে, খেলোয়াড়দের প্রায়ই তীব্র চাপের মুখোমুখি হতে হয়। শ্রীনাথ, যিনি কর্ণাটকের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন, বলেন, “আমি মাঠে অনেকবার দেখেছি, দক্ষতা থাকলেও অনেক খেলোয়াড় চাপের মুখে ভেঙে পড়েন। এই বইটি তাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।” বিশ্বনাথ যোগ করেন, “মনোবিজ্ঞানের কৌশল ব্যবহার করে আমরা খেলোয়াড়দের আবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং ফোকাস বজায় রাখার পদ্ধতি শেখাতে চেয়েছি।”

বইটিতে বিভিন্ন ক্রিকেটারের উদাহরণ দিয়ে বোঝানো হয়েছে কীভাবে তারা চাপের পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। এছাড়াও, তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য ব্যায়াম ও কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা তারা তাদের প্রশিক্ষণে প্রয়োগ করতে পারেন।

বেঙ্গালুরুতে আয়োজিত প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ক্রিকেট বিশ্বের বেশ কিছু পরিচিত মুখ উপস্থিত ছিলেন। শ্রীনাথ এবং বিশ্বনাথ বইটির উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং ক্রিকেটে মনোবিজ্ঞানের ভূমিকা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন ক্রিকেট কোচ বলেন, “এই বইটি ক্রিকেট কোচদের জন্যও উপকারী। আমরা এটি আমাদের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণে ব্যবহার করতে পারি।” বইটি ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়েছে এবং শীঘ্রই এটি অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

ক্রিকেটে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে আগেও বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে, তবে এটি ভারতীয় প্রেক্ষাপটে একটি উল্লেখযোগ্য সংযোজন। ভারতীয় ক্রিকেটে যেখানে তরুণ প্রতিভারা প্রতিনিয়ত চাপের মুখে পড়েন, সেখানে এই বইটি তাদের জন্য একটি গাইড হিসেবে কাজ করতে পারে। সম্প্রতি, ভারতীয় দলের অস্ট্রেলিয়া সফরে হার এবং খেলোয়াড়দের মানসিক চাপ নিয়ে আলোচনার পর এই বইটির প্রকাশ আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

‘হ্যান্ডবুক অফ ক্রিকেট সাইকোলজি’ ক্রিকেটারদের মানসিক দিককে শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কৃষ্ণরাজ শ্রীনাথ এবং এমএন বিশ্বনাথের এই প্রয়াস ক্রিকেটের শুধু খেলোয়াড়দের নয়, কোচ ও সমর্থকদেরও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। অনিল কুম্বলের মতো কিংবদন্তির সমর্থন এই বইটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে এটি ক্রিকেট প্রশিক্ষণের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে এটি নিঃসন্দেহে ক্রীড়া মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।