অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (Glenn Maxwell) আরও একটি বড় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। ব্রিসবেনের গাব্বায় ১৪ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ম্যাক্সওয়েল ১০,০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেছেন। এই ম্যাচে তিনি মাত্র ১৯ বলেই ৪৩ রান করেন, যার মধ্যে ছিল পাঁচটি বাউন্ডারি ও তিনটি বিশাল ছক্কা। এর মধ্য দিয়েই অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে ১০,০০০ রানের ক্লাবে প্রবেশ করেছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এর আগে ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। সারা বিশ্বের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ম্যাক্সওয়েল হলেন ১৬তম ব্যাটার যিনি ১০,০০০ রানের মাইলফলক পার করলেন। তবে অস্ট্রেলিয়ার জন্য এটি একটি বিশাল অর্জন। এই কৃতিত্বের ফলে ম্যাক্সওয়েল এখন তাঁর দেশের দুই কিংবদন্তী ক্রিকেটারের সাথে সমপর্যায়ে চলে এসেছেন, যা অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে।
১০,০০০ রান অতিক্রমের পথ
ম্যাচ শুরুর সময় ম্যাক্সওয়েলকে ১০,০০০ রানে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১২ রান। পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার নাসিম শাহের বিপক্ষে এক ওভারেই তিনটি চারের মাধ্যমে তিনি এই মাইলফলক স্পর্শ করেন, যা তাঁর ব্যাটিং দক্ষতার প্রমাণ। এর মাধ্যমে তিনি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আবারও প্রমাণ করলেন যে, তাঁর ব্যাটিং দেখতে দর্শকরা কেন এত অর্থ ব্যয় করে স্টেডিয়ামে আসেন।
ক্রিকেটে একের পর এক রেকর্ড তৈরি করে যাওয়া ম্যাক্সওয়েলের এই ১০,০০০ রানের মাইলফলকটি স্পর্শ করতে সময় লেগেছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাঁর মারকাটারি ব্যাটিং পারফরম্যান্স ও অসাধারণ স্ট্রাইক রেট তাঁকে সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রিয় খেলোয়াড়ে পরিণত করেছে।
বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটারদের তালিকা
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের নাম যুক্ত হয়েছে সেই বিরল কিছু ক্রিকেটারের সাথে, যারা ১০,০০০ বা তার বেশি রান করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। এই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল, যিনি করেছেন সর্বোচ্চ ১৪,৫৬২ রান। এর পরেই আছেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক (১৩,৩৬০ রান) এবং কাইরন পোলার্ড (১৩,৩৫৫ রান)। ভারত থেকে এই তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছেন বিরাট কোহলি, যাঁর সংগ্রহ ১২,৮৮৬ রান।
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটের জন্য এটি একটি গর্বের মুহূর্ত। ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চের পর ম্যাক্সওয়েলের এই অর্জন আরও একবার প্রমাণ করে দেয় যে, অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দল কতটা শক্তিশালী। গেইল ও শোয়েব মালিকের মতো কিংবদন্তীদের সাথে নিজের নাম বসিয়ে ম্যাক্সওয়েল দেখিয়ে দিলেন যে, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররাও কম নন।
দর্শকদের কাছে ম্যাক্সওয়েলের বার্তা
ম্যাচের পরপরই সামাজিক মাধ্যমে তাঁর ব্যাটিং এর কিছু বিশেষ মুহূর্ত ভাইরাল হয়। ক্রিকেটপ্রেমীরা আবারও তাঁর ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়েছেন। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দক্ষতা, স্ট্রাইকিং ক্ষমতা এবং সাহসিকতার কোন বিকল্প নেই। তাঁর এই মাইলফলকটি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি ও অবদানেরই নিদর্শন।
এছাড়া ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ম্যাক্সওয়েলের মত খেলোয়াড়দের জন্যই এই ফরম্যাটটি এত জনপ্রিয়। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে যেভাবে তিনি নিজের জায়গা তৈরি করেছেন, তা অন্য ক্রিকেটারদের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সামনের লক্ষ্য
মাইলফলক ছুঁলেও, ম্যাক্সওয়েল জানিয়ে দিয়েছেন যে তাঁর লক্ষ্য এখন আরও উচ্চতায় পৌঁছানো। আইসিসি ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসন্ন টুর্নামেন্টগুলিতে তিনি অস্ট্রেলিয়াকে সাফল্য এনে দিতে চান। তাঁর এই পারফরম্যান্স আগামী দিনগুলিতে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের এই অসাধারণ কীর্তি অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।