নিশ্চিতভাবেই ভারতের ক্রিকেট মহলে আবারও বদলের হাওয়া। গৌতম গম্ভীরকে (Gautam Gambhir) ঘিরে জল্পনা থাকলেও, ভারতীয় ‘এ’ দলের কোচ হিসেবে তাঁকে দেখা যাবে না। বরং ইংল্যান্ড সফরে (Engalnd Tour) ভারতীয় ‘এ’ দলের (India Cricket Team) দায়িত্ব প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার হৃশিকেষ কানিতকরকে দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। বিসিসিআই (BCCI) ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, অভিমন্যু ঈশ্বরণের নেতৃত্বে এই দল ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলবে।
নীরজের মাইলফলক নিয়ে বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা প্রধানমন্ত্রী মোদীর
কে এই হৃশিকেষ কানিতকর?
হৃশিকেষ কানিতকর ভারতের জার্সিতে খেলেছেন টেস্ট এবং ওয়ান ডে— দুই ফর্ম্যাটেই। দেশের হয়ে ২টি টেস্ট ও ৩৪টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। যদিও জাতীয় দলে খুব বেশি সময় তিনি খেলতে পারেননি, তবুও ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর অবদান ছিল অসাধারণ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর নামের পাশে রয়েছে আট হাজারেরও বেশি রান। এই অভিজ্ঞতাই তাঁকে কোচিং দুনিয়ায় এনে দিয়েছে সাফল্য।
কানিতকর বহু বছর ধরেই ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে কোচিং স্টাফ হিসেবে যুক্ত। তিনি এনসিএতে (ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমি) ভিভিএস লক্ষ্মণের সঙ্গে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। পাশাপাশি আইপিএলে কোচি টাস্কার্স কেরালার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও, মহারাষ্ট্রের ঘরোয়া ক্রিকেটে প্লেয়ার গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ক্রিকেটার চেনার চোখ, ক্ষুরধার কৌশলগত বিশ্লেষণ এবং প্লেয়ারদের সঙ্গে খোলামেলা সম্পর্ক গড়ে তোলার দক্ষতাই তাঁকে বারবার বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে।
দল গোছাতে গিয়ে বড়সড় ধাক্কা খেল ইস্টবেঙ্গল! ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া কোচ অস্কার
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সফর?
এই সফরকে নিছক ‘এ দল’-এর সফর বলে ভাবার সুযোগ নেই। কারণ, ভারতের সিনিয়র টেস্ট দলের একটি বড় সিরিজ রয়েছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে, যা শুরু হবে আগামী ২০ জুন থেকে। তার আগে ‘এ’ দলের এই দুটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ হল একপ্রকার ‘ড্রেস রিহার্সাল’। এই ম্যাচগুলোয় যারা ভালো পারফর্ম করবে, তাদের মধ্য থেকেই অনেকেই সিনিয়র দলে জায়গা করে নিতে পারে। তাই কোচ হিসেবে কানিতকরের দায়িত্ব যে কতটা গুরুতর হতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।
ভারতীয় ‘এ’ দলের স্কোয়াডে কারা কারা?
এই সফরের জন্য ঘোষিত ভারতীয় এ দলে রয়েছেন একাধিক প্রতিভাবান এবং সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার। অভিমন্যু ঈশ্বরণকে দলের অধিনায়ক করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে যশস্বী জয়সওয়ালকে। মিডল অর্ডারে রয়েছেন করুণ নায়ার, নীতীশ কুমার রেড্ডি, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, সরফরাজ খান ও ঈশান কিষাণ। উইকেটরক্ষকের দায়িত্বে থাকবেন ধ্রুব জুরেল ও ঈশান কিষাণ।
বোলিং বিভাগে রয়েছে একগুচ্ছ তরুণ মুখ— মুকেশ কুমার, আকাশ দীপ, তুষার দেশপাণ্ডে, খলিল আমেদ ও হর্ষিত রানা। স্পিন বিভাগে আছেন মানব সুতার, তনুশ কোটিয়ান ও হর্ষ দুবে। অলরাউন্ডার হিসেবেও রয়েছে বেশ কিছু বিকল্প, যারা দলে ভারসাম্য আনতে সাহায্য করবে।
এই ইংল্যান্ড সফর শুধুমাত্র তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য সুযোগের দরজা খুলে দিচ্ছে না, বরং হৃশিকেষ কানিতকরের জন্যও এটি একটি বড় মঞ্চ। জাতীয় দলের ভবিষ্যতের জন্য তিনি কতটা কার্যকরভাবে তরুণদের তৈরি করতে পারেন, সেটাই হবে দেখার বিষয়। একথা নিশ্চিত, এই সফরের পারফরম্যান্স ভারতের মূল দলের নির্বাচনেও বড় প্রভাব ফেলবে।