কলকাতা: জীবন বড় অনিশ্চিত। জগন্নাথ সানা, শুভঙ্কর সানা, হীরা মন্ডলরা ভাবতেও পারেননি তাঁদের শুনতে হবে এই খবর। যে ব্যক্তি তাঁদের হাতে ধরে মাঠে নিয়ে এসেছিলেন, সেই অরূপ ভট্টাচার্য ওরফে ‘দুষ্টু কাকা’ প্রয়াত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেবেলার কথা তুলে ধরেছেন কলকাতা ময়দানের তারকারা।
হীরা মন্ডল তাঁর আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আমি যে ফুটবল প্লেয়ার হবো এই স্বপ্ন তুমি দেখিয়েছিলে, বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে। একটা বুট, জার্সি, প্যান্ট কেনার সামর্থ ছিল না, তুমি জোগাড় করে দিতে। ফুটবলে কীভাবে লাথি মারতে হয় সেটা তোমার হাত ধরেই শেখা..।”
নির্বাসিত সোনাজয়ী অ্যাথলিট, বড় ধাক্কা ভারতের
শুভঙ্কর সানা তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “দুষ্টু কাকা আমাকে বলল বুট পরে, জার্সি, প্যান্ট পরে আসবি পরের দিন। সেই দিন থেকে ফুটবল খেলা শুরু। কুড়ি বছর ধরে এখনও পেশাদার ফুটবল খেলছি শুধু ‘দুষ্টু কাকার’ জন্য। উনি আমাকে দিয়েছিলেন ফুটবলে হাতেখড়ি। কিন্তু তিনি আর এই পৃথিবীতে নেই, চলে গেলেন।”
একেবারে ক্যাপ্টেন হয়ে ফিরছেন ঈশান কিষাণ! সামনেই ভারতের একাধিক সিরিজ
জগন্নাথ বলেছেন, “উনিই আমাকে, আমার ভাইকে (শুভঙ্কর সানা) মাঠে নিয়ে গিয়ে ফুটবল প্রথম শিখিয়েছিলেন। আমার মতো আরও অনেক ছেলে ওঁনার কাছে ফুটবল শিখেছে। ফুটবলের প্রতি ওনার ভালবাসা ছিল সর্বদা। উনি না থাকলে আমরা হয়তো এটা দূর আসতে পারতাম না।”
এক ম্যাচে কত টাকা স্যালারি পান বিরাট? শুনলে চোখ উঠবে কপালে
কে এই ‘দুষ্টু কাকা’?
জানা গিয়েছে, চাঁপদানি ভিটিভিটি মাঠে ফুটবল অনুশীলন করাতেন। দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত ছিলেন মাঠের সঙ্গে। নিজেও এক সময় ফুটবল খেলেছেন। তাঁকে ফুটবল অন্ত প্রাণ বলা চলে। বিনামূল্যে প্র্যাকটিস করাতেন। যাদের আর্থিক অবস্থা দুর্বল ছিল তাঁদের কিনে দিতেন ফুটবল খেলার সরঞ্জাম। জগন্নাথ সানা, শুভঙ্কর সানা, হীরা মন্ডলদের ফুটবল মাঠে নিয়ে এসেছিলেন এই অরূপ ভট্টাচার্য। এছাড়াও তাঁর কাছে অনুশীলন করার পর আরও অনেকে ফুটবলার হিসেবে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এহেন একজন ফুটবল প্ৰেমী মানুষের প্রয়ানে স্বভাবতই শোকাহত ফুটবলাররা।