HomeSports Newsবাগানের তরুণ ব্রিগেডের বিরুদ্ধে দাপুটে জয়ে ফাইনালে মনোলোর গোয়া

বাগানের তরুণ ব্রিগেডের বিরুদ্ধে দাপুটে জয়ে ফাইনালে মনোলোর গোয়া

- Advertisement -

কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সুপার কাপ ২০২৫ (Super Cup 2025) এক উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসকে (Mohun Bagan) ৩-১ গোলে পরাজিত করে ফাইনালে পৌঁছে গেল এফসি গোয়া (FC Goa)। গোয়ার স্প্যানিশ কোচ মানোলো মার্কুয়েজের দল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে এবং মোহনবাগানের রক্ষণভাগকে প্রবল চাপে ফেলে। শুরুর থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, লিগ শিল্ড হাতছাড়া হওয়ার পর এই ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া গোয়া।

প্রথমার্ধ: গোল, সমতা ও আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ

   

ম্যাচের শুরু থেকেই এফসি গোয়া আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাত্র ৩ মিনিটেই জয় গুপ্তার একটি শট এবং এরপর বোরহার ক্রস থেকে বাগান ডিফেন্স চাপে পড়ে। মোহনবাগান মাঝেমধ্যে পাল্টা আক্রমণে উঠলেও গোয়ার মাঝমাঠের দখল বেশি ছিল। ম্যাচের ২১ মিনিটে বোরহার নেওয়া কর্নার থেকে হেডে দুর্দান্ত গোল করেন ব্রিসন ফার্নান্দেজ। বাগানের ডিফেন্ডাররা এক্ষেত্রে মার্কিং করতে ব্যর্থ হন।

তবে পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি সবুজ-মেরুন শিবির। মাত্র চার মিনিটের মধ্যেই আশিক কুরুনিয়ানের বাম দিক থেকে বাড়ানো নিখুঁত ক্রসে পা ছুঁইয়ে গোল করে সমতা ফেরান সুহেল ভাট। এই জুটির বোঝাপড়া এবার সুপার কাপে বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। প্রথমার্ধে দু’দলই একাধিক আক্রমণ করেছে। ইকের এবং সাহাল গোয়ার পক্ষে বেশ কয়েকবার গোলের কাছাকাছি পৌঁছান। একবার তো ইকারের হেডার বারেও লেগে ফিরে আসে।

প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ১-১। গোয়ার আক্রমণ প্রবণতা চোখে পড়ার মতো হলেও মোহনবাগানের স্বদেশি ফুটবলাররা জমি ছাড়ছিলেন না সহজে।

দ্বিতীয়ার্ধ: গোয়ার আধিপত্য ও মোহনবাগানের ব্যর্থতা

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আবার আক্রমণে উঠে গোয়া। ৫০ মিনিটের মধ্যেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় এক পেনাল্টি সিদ্ধান্ত। মোহনবাগানের গোলরক্ষক ধীরজ একটি ফাউল করে বসেন বক্সের ভিতরে, আর সেই সুযোগেই স্পট কিক থেকে গোল করে গোয়াকে আবার এগিয়ে দেন ইকের গুয়ারক্সেনা। এরপর ৬০ মিনিটে বোরহা কর্নার থেকে সরাসরি গোল করে ব্যবধান ৩-১ করে ফেলেন।

এই সময় থেকেই মোহনবাগানের খেলায় ধীরে ধীরে ছন্দপতন ঘটে। মাঝমাঠে বল কন্ট্রোল ও ডিস্ট্রিবিউশনের ঘাটতি প্রকট হয়ে ওঠে। এই সময় মোহনবাগান একাধিক পরিবর্তন আনলেও তাতে ম্যাচের গতি বদলানো যায়নি।

৮৫ মিনিটে একটি সুযোগ পেলেও সুহেল ভাটের দ্বিতীয় গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। দীপেন্দু বিশ্বাসের একটি ভুল পাস প্রায় চতুর্থ গোলটি করিয়ে দিচ্ছিল, তবে ইকেরের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ মুহূর্তে টাইসন ও সার্টোকে নামিয়ে কোচ সব চেষ্টা করলেও তাতে লাভ হয়নি।

ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই নির্ধারিত হয় – সুপার কাপের ফাইনালে উঠল এফসি গোয়া। মোহনবাগানের রক্ষণভাগ বারবার চাপে পড়ে এবং গোলরক্ষকের একাধিক ভুল ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় সবুজ-মেরুন দলকে।

এই হারের মাধ্যমে মোহনবাগানের সুপার কাপ অভিযান থেমে গেল সেমিফাইনালেই। যদিও প্রথমার্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও দ্বিতীয়ার্ধে তারা প্রায় নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। গোয়ার দাপট, পরিকল্পনা ও ধারাবাহিক আক্রমণ শেষমেশ ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। এখন দেখার, ফাইনালে গিয়ে এই ফর্ম ধরে রেখে ট্রফি তুলতে পারে কি না ম্যানোলো মার্কুয়েজের দল।

- Advertisement -
Subhasish Ghosh
Subhasish Ghoshhttps://kolkata24x7.in/author/sports-news-desk
শুভাশীষ ঘোষ এক প্রাণবন্ত ক্রীড়া সাংবাদিক, বর্তমানে Kolkata24X7.in ক্রীড়া বিভাগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ। ক্রিকেট থেকে ফুটবল, হকি থেকে ব্যাডমিন্টন প্রতিটি খেলাতেই তাঁর দখল প্রশংসনীয়। তিনি নিয়মিত ফিল্ড রিপোর্টিং করেন এবং ISL, I-League, CFL, AFC Cup, Super Cup, Durand Cup কিংবা Kolkata Marathon মতো মর্যাদাসম্পন্ন ইভেন্টে Accreditation Card প্রাপ্ত সাংবাদিক। ২০২০ সালে সাংবাদিকতার জগতে আত্মপ্রকাশ, আর তখন থেকেই বাংলার একাধিক খ্যাতিমান সাংবাদিকের সাহচর্যে তালিম গ্রহণ। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ইতিহাস ও রাজনীতির প্রতি রয়েছে অগাধ টান, যার প্রমাণ তাঁর অফবিট যাত্রাপথ ও অনুসন্ধিৎসু মন। পেশাগত প্রয়োজনে কিংবা নিতান্ত নিজস্ব আগ্রহে ছুটে যান অজানার সন্ধানে, হোক পাহাড়ি আঁকাবাঁকা গলি কিংবা নিঃসঙ্গ ধ্বংসাবশেষে ভরা প্রাচীন নিদর্শন। ছবি তোলার নেশা ও লেখার প্রতি দায়বদ্ধতা মিলিয়ে শুভাশীষ হয়ে উঠেছেন সাংবাদিক।
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular