ভারতীয় ক্রীড়া ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়, ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ (Bhaag Milkha Bhaag)। আবার ফিরতে চলেছে বড় পর্দায়। ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি শুধুমাত্র বায়োপিক নয়, বরং অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মানুষের আত্মার জয়গান। আগামী ১৮ জুলাই সীমিত সংখ্যক পিভিআর ইনক্স প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি পুনঃপ্রদর্শিত হবে। যেন ভারতীয় অ্যাথলিট মিলখা সিং প্রতি আরেকবার সশ্রদ্ধ প্রণাম।
‘দ্য ফ্লাইং শিখ’ নামে খ্যাত মিলখা সিং ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি নিজের অতীতের জ্বালা, পারিবারিক ক্ষয়, ও দেশের বিভক্তর যন্ত্রণাকে পরিণত করেছিলেন নিজের গতির জ্বালানিতে। ছোটবেলায় পাঞ্জাবের রক্তাক্ত বিভাজন থেকে পালিয়ে আসা এক বালক, কীভাবে নিজেকে গড়ে তুললেন কমনওয়েলথ ও এশিয়ান গেমসে স্বর্ণজয়ী অ্যাথলিট হিসেবে, সেই গল্পই চিত্রিত হয়েছে এই ছবিতে।
মিলখা সিং চরিত্রে ফারহান আখতারের অভিনয় করেছিলেন। তিনি শুধু একজন অভিনেতা হিসেবে নয়, যেন মিলখা সিংয়ের আত্মাকে ধারণ করে পর্দায় হাজির হয়েছিলেন। তার শারীরিক প্রস্তুতি থেকে মানসিক তপস্যা—সব কিছুই সিনেমাটিকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে অভিনেতা ফারহান বলেন, “মিলখা সিংজিকে পর্দায় জীবন্ত করে তোলা আমার জীবনের অন্যতম দায়িত্ব ও গর্বের কাজ। আবারও দর্শকরা এই গল্প বড় পর্দায় দেখতে পাবেন, এটাই আমার কাছে বড় পুরস্কার।”
ছবির অন্যতম প্রাণশক্তি হল সঙ্গীত। শঙ্কর-এহসান-লয় এর সুরে ‘জিনদাগি কা রং’, ‘হওয়াওয়াঁ’ কিংবা ‘ও রংরেজ’ এখনও মানুষকে আবেগে ভাসিয়ে তোলে। অভিনেত্রী সোনম কাপুর, যিনি ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।তিনি জানান “এই সিনেমা শুধুই এক খেলোয়াড়ের গল্প নয়, এটা মানবচেতনার শক্তির কাব্য। ‘ও রংরেজ’ গানটি আজও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছে। এটা আমাদের সবার প্রাপ্তি।”
পরিচালক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ ছবিকে বলেছিলেন “ব্যথা থেকে বুনে ওঠা প্রত্যয়ের প্রতিমূর্তি।” সিনেমাতে দেখানো হয়
আর্মিতে যোগদান, ১৯৬০ সালের অলিম্পিক রেস, এরপর ধাপে ধাপে মিলখা সিং চরিত্র। সবশেষে পাকিস্তানের অ্যাথলিট আবদুল খালিকের বিরুদ্ধে জয়।
এই পুনঃপ্রদর্শন শুধুমাত্র সিনেমা দেখা নয়, বরং এক আত্মদর্শনের সুযোগ। আজকের তরুণ প্রজন্ম, যারা হয়তো মিলখা সিংয়ের নামটা বইয়ে পড়েছে, তারা এবার এই গল্পটি চোখে দেখবে, হৃদয়ে অনুভব করবে। দেশের ইতিহাস, ক্রীড়া, এবং সংগ্রামের এই সমন্বয় যেন আগামী দিনের স্বপ্নদ্রষ্টাদের চেতনায় আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
১৮ জুলাই, যখন বড় পর্দায় আবার ভেসে উঠবে সেই ঐতিহাসিক দৌড়, তখন শুধু একজন দৌড়বিদ নয়, পুরো এক জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ছুটবে স্ক্রিনজুড়ে। ভাগ মিলখা ভাগ শুধুই একটা ডাক নয়, যেন এক অদম্য উদ্দীপনার নাম।