চোটে-বিভ্রান্তির মধ্যে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) আসন্ন সাত ম্যাচে যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে তা স্পষ্ট। তবুও এরমধ্যে সুপার সিক্সে (Super Six) পৌঁছানোর আশা এখনও জিইয়ে রেখেছে অস্কার ব্রুজোর (Oscar Bruzon) দল। গত শুক্রবার ঘরের মাঠে কেরালা ব্লাস্টার্সের (Kerala Blasters) বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয় পাওয়ায় ড্রেসিং রুমের পরিবেশ বদলে গিয়েছে। কিন্তু প্লে অফের (Play OFF) জায়গা নিশ্চিত করতে হলে প্রতিটি ম্যাচেই নিশ্চিত করতে হবে তিন পয়েন্ট। পাশাপাশি অন্যান্য দলের পয়েন্ট নষ্ট হওয়ার দিকে নজর রাখতে হবে মশাল ব্রিগেডকে। চলুন এক নজরে দেখা যাক, ইস্টবেঙ্গলের সামনে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং কীভাবে তারা প্লে অফে পৌঁছাতে পারে।
মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে পরাজিত করে কী বললেন পেট্র ক্র্যাটকি?
ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান পরিস্থিতি :
ইস্টবেঙ্গল বর্তমানে ১৭ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে অবস্থান করছে। দীর্ঘদিন পর কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে জয় লাভ করায় দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়েছে। তবে সবার নজর এখন বাকি সাতটি ম্যাচে। লাল-হলুদ শিবিরের জন্য পরিস্থিতি এমন যে, শুধুমাত্র নিজেদের জয়ের উপর নির্ভর করলে চলবে না। পাশাপাশি অন্যান্য দলের পারফরম্যান্সও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। কারণ, প্লে অফে যাওয়ার জন্য ইস্টবেঙ্গলকে ছয় নম্বরে উঠে আসতে হবে এবং তার জন্য যেকোনো মূল্যে আরও ১৫ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে।
মুম্বাইয়ে কাছে পরাজিত হয়ে কী সাফাই দিলেন চেরনিশভ?
বাকি সাতটি ম্যাচ এবং চ্যালেঞ্জ :
ইস্টবেঙ্গলের বাকি সাতটি ম্যাচ যথাক্রমে মুম্বই সিটি এফসি, চেন্নাইয়িন, মহামেডান স্পোর্টিং, হায়দরাবাদ এফসি, পঞ্জাব এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি এবং নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড। এগুলোর মধ্যে মুম্বই সিটি, চেন্নাইয়িন এবং বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ম্যাচগুলো অত্যন্ত কঠিন হতে চলেছে। এই সব দলগুলো বর্তমানে লিগে শীর্ষে অবস্থান করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে জয় পাওয়া যে খুব সহজ হবে না, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে ইস্টবেঙ্গল যদি নিজের সব ম্যাচ জেতার চেষ্টা করে এবং নিজেদের সর্বোচ্চ পারফরম্যান্স দেয়, তাহলে তাদের ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করা সম্ভব হতে পারে। তবে তাদের পক্ষে প্লে অফে যাওয়ার রাস্তা এত সহজ নয়, কারণ ইস্টবেঙ্গলকে শুধু নিজের ম্যাচগুলো জিততে হবে না, অন্য দলের ফলাফলেরও সহায়তা প্রয়োজন।
টিফো বিতর্ক! আইএসএল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ বাগানের
কোচ অস্কার ব্রুজোর চিন্তা :
ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজো প্লে অফে যাওয়ার আশাবাদী হলেও তিনি জানেন যে, এখনও অনেক পথ বাকি। দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় চোটে পড়েছেন, যার মধ্যে আনোয়ার আলি, সাউল ক্রেসপো, মহম্মদ রকিপ, প্রভাত লাকরা এবং হেক্টর উস্তেরা রয়েছেন। এই চোটগুলির কারণে দলের কাঠামো অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে, তবে কোচ অস্কার ব্রুজো তার দলের মনোবল বাড়াতে এবং খেলার পরিকল্পনা ঠিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমি নামী কোচ নই। তবে আমি ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দলের উন্নতি করতে চাই।”
কি করলে প্লে অফে যাওয়ার আশা থাকবে?
সব ম্যাচ জেতা : ইস্টবেঙ্গলকে বাকি সাতটি ম্যাচে জয়ী হতে হবে। এর মধ্যে মুম্বই, চেন্নাইয়িন এবং বেঙ্গালুরু ম্যাচটি খুব কঠিন হবে। কিন্তু এই ধরনের দলগুলোর বিরুদ্ধে জেতা তাদের প্লে অফের আশা জীবিত রাখবে।
বেঙ্গালুরু ম্যাচেই ফিরতে পারেন বাগানের এই তারকা ফুটবলার
অন্য দলের পয়েন্ট নষ্ট হওয়া : শুধু নিজেদের ম্যাচ জেতা দিয়ে হবে না। অন্যান্য প্রতিপক্ষের ম্যাচগুলোতেও কিছু পয়েন্ট নষ্ট হতে হবে। এমনকি, কিছু দলকে হারিয়ে দেওয়া প্রয়োজন, যাতে তারা প্লে অফের দিকে এগিয়ে না যেতে পারে।
মনের জোর ধরে রাখা : ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়দের চোট এবং বিপর্যয়ের মধ্যেও যদি মনোবল অটুট থাকে, তাহলে তারা শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের বিপক্ষেও লড়াই করতে পারবে। কোচ অস্কার ব্রুজো তার দলের কাছ থেকে সেটাই আশা করছেন।
ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যত
এখনও ইস্টবেঙ্গলের সামনে অনেক বাধা রয়েছে, কিন্তু প্রতিটা ম্যাচের মাধ্যমে তারা তার দলের সক্ষমতা প্রমাণ করার সুযোগ পাবে। দলের খেলোয়াড়েরা জানেন, সামনের সাতটি ম্যাচই তাদের জন্য রেকর্ড গড়ার সুযোগ হতে পারে। প্লে অফে যাওয়ার মতো কঠিন লক্ষ্য হলেও, দলটির লড়াই চলবে। আর যদি তারা এই লড়াইয়ে সফল হতে পারে, তাহলে তা তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্জন হবে। এভাবে, ইস্টবেঙ্গলের সুপার সিক্সে যাওয়ার সম্ভাবনা এখনও জীবিত রয়েছে, যদিও এই পথ অত্যন্ত কঠিন।