ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) মানেই শুধুমাত্র মাঠের লড়াই নয়, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বারবার নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলার প্রয়াস। ময়দানের গ্যালারিতে ভিভিআইপি বক্স, এক্সিকিউটিভ লাউঞ্জ, দোতলা তাঁবু থেকে শুরু করে ক্যাফেটেরিয়া। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হচ্ছে আরও এক যুগান্তকারী সংযোজন অ্যাস্ট্রো টার্ফ প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড (Astro Turf Practice Ground)।
প্রথমবারের জন্য ময়দানের নিজস্ব র্যাম্পার্টে তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক এই টার্ফ প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড। ক্লাব সূত্রে খবর, প্র্যাকটিসের ক্ষেত্রে বারবার সল্টলেকের মাঠে যেতে হয় বলে খেলোয়াড়দের মাঝে মাঝেই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বর্ষার সময়ে কাদা জলে অনুশীলন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই এই সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে শতাব্দী প্রাচীন এই ক্লাব।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই টার্ফ আনা হয়েছে সুদূর লন্ডন থেকে। ক্লাব কর্তারা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মানের এই অ্যাস্ট্রো টার্ফের স্থায়িত্ব কমপক্ষে দশ বছর। অর্থাৎ, এক দশক ধরে নিশ্চিন্তে অনুশীলন চালাতে পারবে লাল-হলুদ ফুটবলাররা। এর ফলে মাঠের পরিকাঠামো যেমন উন্নত হবে, তেমনই খেলোয়াড়দের শারীরিক চাপও অনেকটাই কমবে।
ইতিমধ্যেই মাঠ ঘিরে ফেলা হয়েছে মজবুত লোহার জালে। ক্লাব চাইছে, যত দ্রুত সম্ভব কাজ সম্পূর্ণ করতে। জানা গিয়েছে, এই প্রজেক্টে খরচ হচ্ছে কোটি টাকারও বেশি। কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। ক্লাবের কর্তা জানান, “প্র্যাকটিসের মাঠে কাদা, জল জমে থাকা, খারাপ আবহাওয়ার কারণে অনুশীলন বন্ধ হওয়া, এসবই অতীত হতে চলেছে। আন্তর্জাতিক মানের টার্ফ বসিয়ে আমাদের ফুটবলারদের জন্য একটা সর্বোচ্চ মানের অনুশীলনের পরিবেশ তৈরি করছি।”
ইস্টবেঙ্গল প্রাক্তনীরাও এই উদ্যোগে উচ্ছ্বসিত। তাঁদের মতে, ক্লাবের ইতিহাসে এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই অত্যাধুনিক টার্ফ বসানো হলে ময়দানেই অনুশীলনের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা পাবে ফুটবলাররা। ঘন ঘন সল্টলেক বা অন্যত্র যেতে হবে না। একই সঙ্গে বর্ষার সময় কাদা, জলে ডুবে থাকা মাঠে অনুশীলনের দুর্ভোগও থাকবে না।
প্রাক্তন এক ফুটবলার বলেন, “যে পরিস্থিতিতে আমাদের সময় অনুশীলন করতে হতো, এখনকার ছেলেরা অনেকটাই ভাগ্যবান। ক্লাব আধুনিকতার দিকে এগোচ্ছে, এটা খুব ভালো পদক্ষেপ।” ফুটবলবিশ্বে অ্যাস্ট্রো টার্ফ নতুন কিছু নয়। তবে ময়দানের বুকে এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত। কলকাতার মত আবহাওয়ায় বর্ষাকালে অনুশীলনের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এই টার্ফ মাঠ সেই সমস্যার সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গল মাঠে চলছে টার্ফ বসানোর কাজ। মাঠ প্রস্তুত হয়ে গেলে শুধু সিনিয়র দলই নয়, যুব এবং রিজার্ভ দলগুলিও এখানে অনুশীলন করতে পারবে। ফুটবলপ্রেমী থেকে শুরু করে ক্লাব সমর্থক—সবাই এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, কবে সম্পূর্ণ হবে এই যুগান্তকারী উদ্যোগ।
East Bengal installs London imported Astro Turf Practice Ground to modernize training