রেফারি বিতর্কের মধ্যে ISL নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ সেলিস

ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ফুটবল ভক্তদের জন্য নতুন বছরের শুরুর দিনগুলো কিছুটা বিশেষ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি লাল-হলুদ শিবির নিজেদের দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে ভেনেজুয়েলার জাতীয় দলের ফুটবলার…

East Bengal FC Footballer Mohammad Rakip

ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ফুটবল ভক্তদের জন্য নতুন বছরের শুরুর দিনগুলো কিছুটা বিশেষ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি লাল-হলুদ শিবির নিজেদের দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে ভেনেজুয়েলার জাতীয় দলের ফুটবলার রিচার্ড সেলিসকে (Richard Celis)। ২৮ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড-উইঙ্গার, যিনি কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা রেখেছেন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) প্রথম দুই ম্যাচেই নিজের দক্ষতা দেখিয়ে দলের জন্য নতুন আশার সৃষ্টি করেছেন।

   

রিচার্ড সেলিসের ফুটবল জীবন বেশ সমৃদ্ধ। তিনি ভেনেজুয়েলার শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলোতে খেলেছেন, যেমন আতলেতিকো ভেনেজুয়েলা সিএফ, দিপোর্তিভো জেবিএল এবং কারাকাস এফসি, এছাড়াও কলম্বিয়ার মিলিওনারিওস এফসি এবং স্লোভাকিয়ার এফকে সেনিকার মতো ক্লাবেও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এর পাশাপাশি, ভেনেজুয়েলা জাতীয় দলের হয়ে ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব এবং কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টে খেলেছেন। তার এই অভিজ্ঞতা কার্যত আইএসএলে নতুন সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত দেয়।

ভারতে আসার আগে তিনি মিকু ফেদরের সঙ্গে খেলেছেন। যিনি একসময় বেঙ্গালুরু এফসির হয়ে আইএসএলে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন। মিকুর কাছ থেকে ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর সেলিসের মধ্যে আগ্রহ জন্ম ভারতীয় ফুটবল নিয়ে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত মিকুর সঙ্গে খেলার মাধ্যমে সেলিস ভারতে ফুটবল খেলার প্রস্তুতি শুরু করেন। এরপর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের প্রস্তাব পেয়ে তিনি ক্লাবে যোগ দেন।

লাল-হলুদ জার্সি গায়ে সেলিস প্রথম দুই ম্যাচে মাঠে নামলেও গোল বা অ্যাসিস্টের দেখা পাননি। তবে তার পারফরম্যান্স মন জিতে নিয়েছে মশাল সমর্থকদের। এই দুই ম্যাচে তাকে গোলের সেরা উদযাপন করতে না দেখা গেলেও, তার খেলার ধরন এবং প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মাঠে যে পরিশ্রম দেখা গেছে। তা স্পষ্টভাবে ইস্টবেঙ্গলের জন্য এক নতুন শক্তি হিসেবে পরিণত হতে পারে।

ভারতীয় ফুটবল নিয়ে তার অভিজ্ঞতা বেশ ইতিবাচক। সেলিস জানান, “আইএসএলে খেলার মান দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছি। এখানে শারীরিক সক্ষমতার অনেক গুরুত্ব রয়েছে এবং বল নিয়ে দ্রুত ওঠা-নামা হয়।” তিনি আরও বলেন, “কলম্বিয়ার ফুটবলের সঙ্গে আইএসএলের তুলনা করলেই বুঝতে পারি, শারীরিক শক্তির পাশাপাশি দ্রুত ট্রানজিশন এবং দৌড়ানোর ব্যাপারটি এখানে প্রায় একইরকম।”

এদেশে আসার পর সেলিসের প্রথম অভ্যর্থনাও ছিল বেশ উষ্ণ। তিনি সেই প্রসঙ্গে বলেন, “ক্লাব কর্তৃপক্ষ, সতীর্থরা এবং কোচিং স্টাফদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইতিবাচক পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছি। সমর্থকদের চিৎকার শুনে মনে হচ্ছে যেন আমার ঘরের মাঠে রয়েছি।”

আইএসএলে তার প্রথম মরসুমের প্রসঙ্গে বলেন, “এ বছর হয়ত আমাদের সফলতা না আসুক, তবে আগামী বছর দলকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত রাখব।” ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান অবস্থা যদিও কিছুটা সংকটপূর্ণ, তবে সেলিস এবং দলের কোচ অস্কার ব্রুজো বিশ্বাস করেন যে, দলকে শীর্ষে তুলতে কিছু সময় লাগবে। সেলিসের অভিজ্ঞতা সেই লক্ষ্যে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।