ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) ডার্বিতে (Derby) হার ভুলতে ভুলতে, ফের ডার্বিতে পরাজিত ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। গত শনিবার গুয়াহাটিতে মুখোমুখি হয়েছিল কলকাতার দুই প্রধান। সেই ম্যাচে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে মোহনবাগান (Mohun Bagan)। সিনিয়রদের ডার্বিতে হারের জ্বালা ভুলতে ভুলতে বুধবার এআইএফ অনূর্ধ্ব ১৭ ইয়ুথ লিগের (AIFF U-17 Elite Youth League) ম্যাচে ১-০ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে পরাজিত করেছে বাগান শিবির। যদিও এর মধ্যে সুখবর লাল-হলুদ সমর্থকদের জন্য। ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগের (IWL) এই মরসুমের অপ্রতিরোধ্য ভাবে দ্বিতীয় জয় পেল ইস্টবেঙ্গল এফসি।
এদিন নিজেদের ঘরের মাঠে ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগে নব নিযুক্ত তথা বাংলার আরেক দল শ্রীভূমি এফসির (Sribhumi FC) মুখোমুখি হয়েছিল মশাল ব্রিগেডের মহিলা বাহিনী। এই ম্যাচেই ১-০ গোলে তাদের হারিয়ে তিন পয়েন্ট ঘরে তুলল ইস্টবেঙ্গল। ৭৬ মিনিটে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন সৌমিও গুগুলথ। এই জয়ের ফলে ইস্ট বেঙ্গল দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় পেয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে রয়েছে। অন্যদিকে শ্রীভূমি তাদের দ্বিতীয় ম্যাচেও পরাজিত হল।
ইস্ট ঙ্গলের শক্তিশালী স্কোয়াড আগের ম্যাচে তেমন সাফল্য না পেলেও, এবার তারা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে। একের পর এক আক্রমণ তৈরি করলেও, গোলের সুযোগ তৈরি করতে অনেক সময় ব্যর্থ হয়েছিল তারা। শ্রীভূমির রক্ষণভাগ বেশ দৃঢ় ছিল, যা লাল-হলুদ শিবিরের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছিল। তবে, ১৪তম মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের এক দুর্দান্ত সুযোগ আসে। মাঝমাঠ থেকে বাড়ানো লম্বা বল নিয়ে রেস্টি গোলের দিকে এগিয়ে আসে। কিন্তু শ্রীভূমির গোলকিপার মনালিশা দেবী বেরিয়ে এসে গোল বাঁচানোর চেষ্টা করেন, এবং সেই সুযোগে নানজিরি গোলকিপারকে কাটিয়ে বক্সের ভিতরে ঢুকে যান, কিন্তু গোলের দিকে শট নেন এবং তা ভুলভাবে বাইরে চলে যায়।
এরপর ১৮ মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল আরও একটি চমৎকার সুযোগ মিস করে। সৌমিও ডান দিক থেকে একটি সুন্দর ক্রস দেন, যা নানজিরির পায়ের কাছে চলে আসে। একটু টাচ দিলেই গোল হয়ে যেতে পারত, কিন্তু নানজিরি তা করতে পারেননি। এরপর, শ্রীভূমির গোলকিপার এক দারুণ সেভ করেন।
তবে শ্রীভূমি ম্যাচের শেষ দিকে একটু আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং ৭২তম মিনিটে একটি দারুণ সুযোগ পায়। রিম্পা হালদার বক্সের মধ্যে প্রবেশ করে গোল করার সুযোগ তৈরি করেন, তবে তার শটটি তেমন শক্তিশালী ছিল না এবং ইস্ট বেঙ্গলের গোলকিপার পন্থোই চানু সহজেই সেই শটটি প্রতিহত করেন।
এই সুযোগটি মিস করার পর, ইস্ট বেঙ্গল তাদের আক্রমণাত্মক খেলা চালিয়ে যেতে থাকে। ৭৬ মিনিটে, একটি কর্নার থেকে বল বক্সের মধ্যে ঘুরে ফিরে আসছিল। নানজিরির ক্রসটি ব্লক হয়ে সুলঞ্জনা রাউলের পায়ে চলে আসে। সুলঞ্জনা রাউল সেই বলটি সতর্কতার সাথে ডান দিকে ক্রস করে, এবং সেখানে সৌমিও গুগুলথ গোলের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। একদম মুক্ত অবস্থায় সৌমিও গোল করে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন। যদিও এরপর আর শ্রীভূমির মেয়েদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব ছিল না। কারণ লাল-হলুদ শিবিরের মহিলা ব্রিগেড তাদের সজাগ প্রতিরোধের মাধ্যমে ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ১-০ ব্যবধানে জিতে মরসুমের দ্বিতীয় জয় অর্জন করে।
এই জয়টি ইস্ট বেঙ্গলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা দ্বিতীয় ম্যাচে জিততে সক্ষম হয়েছে এবং তাদের মনোবল অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। শ্রীভূমি কোচ সুজাতা কর আজকের ম্যাচে রেফারিং নিয়েও প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি, দলের ফুটবলারদের গোল করার সুযোগ হারানোর বিষয়টি আগামী ম্যাচে লক্ষ্য দেবেন বলে জানান।