মেঘের দেখা মিলেছে তবে বৃষ্টির নয়। বর্তমানে এমনই অবস্থা কলকাতা ময়দানের এক প্রধানের। মরসুম শুরুর প্রথমেই টানা ছয় ম্যাচ হেরে ছন্দ পতন ঘটেছিল ইস্টবেঙ্গল এফসির (East Bengal FC)। আইএসএল (ISL) পয়েন্ট টেবিলে লাস্ট বয়ের তকমা তুলতে গিয়ে কালঘাম ছুটেছিল মশাল বাহিনীর। এরপর সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোর হাত ধরে পরিবর্তন এসেছে লাল-হলুদ ফুটবলারদের পারফরম্যান্সে। যত দিন যাচ্ছে ততই যেন নিভে যাওয়া মশাল ধীরে ধীরে জ্বলে উঠছে। তবে পিছু ছাড়ছে না চোট সমস্যা। একের পর এক গুতুত্বপূর্ণ ফুটবলার ছিটকে যাচ্ছেন চোটের কারণে।
সিডনি টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে ইতিহাস গড়লেন অজি অধিনায়ক
নতুন বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গলের জন্য। কারণ জানুয়ারি মাসে হোম এবং ওয়ে ফরম্যাট মিলিয়ে মোট পাঁচ ম্যাচ খেলবেন অস্কার ব্রুজোর ছাত্ররা। তবে, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ের আগে চোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশিত হয়েছে। আসন্ন ম্যাচগুলোর দিকে তাকালে, এটি স্পষ্ট যে, ইস্টবেঙ্গলকে নিজেদের দলের ফুটবলারদের ফিটনেস ও ফর্ম বজায় রাখতে হবে, বিশেষ করে মুম্বই সিটি এফসির (Mumbai City FC) বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে যে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একী কান্ড! ২০২৪ সালে ভারতীয় ফুটবলে সেরা পাঁচ বিতর্কে নাম রয়েছে কলকাতার তিন প্রধানের?
ইস্টবেঙ্গলের দলের কাছে এই ম্যাচের গুরুত্ব অনেক বেশি। বর্তমানে তারা ১৩ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে রয়েছে। ছয়টি শীর্ষস্থানীয় দলের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার জন্য তারা মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট পেতে চাইবে। এর পরেই বড় মঞ্চ ডার্বি। তাই, ফুটবলারদের চোট, আঘাত থেকে বাঁচাতে হবে। মুম্বই ম্যাচ থেকে জয় তুলে নিতে হবেএবং পাশাপাশি ডার্বির জন্য পরিকল্পনা সাজাতে হবে।
প্রসঙ্গত, লাল-হলুদ শিবিরে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারের চোট ও বিশ্রাম নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আনোয়ার আলি এবং লালচুননুঙ্গা দুদিন ধরে অনুশীলন করতে পারছেন না। তাদের ফিজিওথেরাপির রিহ্যাব চলছে। শোনা যাচ্ছে, চোট নয়, ক্লান্তির কারণে তাদের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তবে, তাদের রিহ্যাবের পর বল নিয়ে অনুশীলন করার কথা শোনা যাচ্ছে। মিডফিল্ডার সৌভিক চক্রবর্তীও মাঠে আসছেন, কিন্তু কিছু সময়ের জন্য বেরিয়ে যাচ্ছেন। দলের থিঙ্কট্যাঙ্কের মধ্যে এই শঙ্কা আর অস্বস্তি দেখা যাচ্ছে, যদিও কোনো অফিসিয়াল ঘোষণা এখনও করা হয়নি।
কলকাতা ডার্বির আগে বাগান-শুভাশীষ চুক্তির নয়া তথ্য ফাঁস
কোচ অস্কার ব্রুজো অবশ্য আশাবাদী, দলের ফুটবলাররা যতটা সম্ভব সুস্থ হয়ে উঠবেন। তাঁর মতে, ডার্বি কিংবা তার পরের ম্যাচে সাউল ক্রেসপোকে পাওয়া যাবে। কিন্তু বর্তমানে চোট-আঘাতের মাঝে কিছু আশার আলোও রয়েছে। হেক্টর ইউস্তে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তিনি এখন একদম ফিট, আর তিনি চোট সমস্যা ও কার্ড সমস্যা দুইই কাটিয়ে উঠেছেন। এই পজিটিভ খবরের মাঝে, দলটির প্রতিটি সদস্যই আশা করছে যে, আগামী ম্যাচগুলোতে তারা নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারবে।
এদিকে, আনোয়ার আলি এবং লালচুননুঙ্গার না থাকলে রক্ষণভাগে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। ইস্টবেঙ্গল ইতিমধ্যে নিশুকুমারকে ফিট করে তুলেছে এবং মার্কের অর্ন্তভুক্তিও হয়েছে। তবে, মাদিহ তালালের পরিবর্তে নতুন খেলোয়াড় নিয়ে সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি। ক্লাবের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার এবং লগ্নিকারী সংস্থার শীর্ষকর্তা বিভাস আগরওয়ালও কোচ অস্কার ব্রুজোর সঙ্গে আলোচনা করেছেন, তবে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
লাল-হলুদ জার্সিতে খেলবেন সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের এই সদস্য!
সব মিলিয়ে, ইস্টবেঙ্গলের পরবর্তী ম্যাচগুলো এমন একটা সময়ে আসছে যখন একদিকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর সুযোগ রয়েছে, তবে অন্যদিকে চোট এবং বিশ্রামের কারণে কিছুটা অস্বস্তি রয়েছে। দলটির ফুটবলাররা যদি তাদের চোট এবং ক্লান্তি কাটিয়ে ওঠে, তবে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে জয় পেয়ে ডার্বির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবে। তবে, সাফল্যের জন্যে, সবকিছুই নির্ভর করছে ফুটবলারদের ফিটনেস এবং কোচের কৌশলগত পরিকল্পনার ওপর।