পাঞ্জাব জিতে এই টুর্নামেন্টকে প্রধান গুরুত্ব অস্কারের

ইস্টবেঙ্গল এফসির (East Bengal FC) স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজো (Oscar Bruzon) সম্প্রতি দলের পারফরম্যান্স নিয়ে অভিমত প্রকাশ করেছেন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) তাঁদের উত্থান একদিকে…

Oscar Bruzon coaching East Bengal FC qualified into AFC Challenge League Quarter Final

ইস্টবেঙ্গল এফসির (East Bengal FC) স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজো (Oscar Bruzon) সম্প্রতি দলের পারফরম্যান্স নিয়ে অভিমত প্রকাশ করেছেন। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) তাঁদের উত্থান একদিকে যেমন রোমাঞ্চকর, তেমনি দলের সার্বিক উন্নতির জন্য নতুন কোচের অদম্য চেষ্টার ফল। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ী হয়ে মশাল ব্রিগেড ধীরে ধীরে লিগ টেবিলে উন্নতি করতে শুরু করেছে, আর তার পেছনে রয়েছে ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার রাফায়েল মেসি বৌলির অপরিসীম ভূমিকা।

গত শনিবার নয়াদিল্লিতে পাঞ্জাব এফসিকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের নয় নম্বরে উঠে এসেছে ইস্টবেঙ্গল। দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসের প্রথম গোলের পর নাওরেম মহেশ সিং এবং লালচুঙ্গনুঙ্গার গোলের মাধ্যমে দলের জয় নিশ্চিত হয়। প্রথমার্ধে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুটি গোল করে এগিয়ে যান লাল-হলুদ বাহিনী। পাঞ্জাব এফসি এক গোল শোধ করলেও শেষ পর্যন্ত আর কোনও গোল করতে পারেনি।

   

এটি ছিল ইস্টবেঙ্গলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জয়, কারণ টানা তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচে অপরাজিত থাকার পর তারা লিগ টেবলে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে ৯ নম্বরে উঠে এসেছে। এমন পারফরম্যান্সের জন্য কোচ অস্কার ব্রুজো দলের সঙ্ঘবদ্ধতা এবং আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “এখন আমরা এক দল হিসেবে খেলছি, প্রত্যেক খেলোয়াড় তাদের কাজটি জানে এবং মাঠে সঠিক ফর্মেশনে খেলে।” তার মতে, মেসির মতো খেলোয়াড়ের দলে যোগ দেওয়ার ফলে খেলোয়াড়দের মধ্যে এক নতুন শক্তি এসেছে এবং তারা আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে।

তবে অস্কারের কথা অনুযায়ী, এই মরসুমের জন্য আইএসএল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ (AFC Challenge League) আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে আইএসএল (ISL) আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চাই, টেবিলের শীর্ষে উঠতে এবং এই মরসুমে বাকি ম্যাচগুলোতে ভাল ফলাফল অর্জন করতে।” ডার্বি জয় এবং পরবর্তীতে পাঞ্জাব এফসিকে হারানোর পর কোচ ব্রুজোর এই মন্তব্য আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।

এদিকে, ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার মেসি বৌলির পারফরম্যান্সেও সবার নজর কেড়েছে। তিনি দলের জন্য এক দারুণ সহায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনটি ম্যাচে মেসি নটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন, আট গোলের পাস দিয়েছেন এবং ১৪ বার প্রতিপক্ষের বক্সে বল ধরে গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন। তাঁর অবদান শুধু গোল না, তার মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে। ব্রুজো বলেন, “মেসি আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে, যার ফলে তারা আরও বেশি করে বক্সে ঢুকতে পারছে এবং সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে।”

দলের অন্যতম ফরোয়ার্ড দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসও এবারের ম্যাচে গোল করে এক বিশাল মনোবল ফিরে পেয়েছেন। দীর্ঘ আট ম্যাচ পর গোল করা দিমি এই ম্যাচে দৃঢ়ভাবে পারফর্ম করেন। কোচ ব্রুজো তাঁকে নিয়ে বলেন, “দিমি এখন অনেক শক্তিশালী, আত্মবিশ্বাসী এবং দলের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। তার গোলটা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”

এমন পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গল এখন আশাবাদী। দলের উন্নতি এবং আত্মবিশ্বাসে যে পরিবর্তন এসেছে, তার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন কোচ অস্কার ব্রুজো এবং ক্যামেরুনের মেসি বৌলি। দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ইস্টবেঙ্গলকে আইএসএল-এর শেষ পর্যায়ে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে এবং আশা করা যাচ্ছে, তারা শীর্ষে উঠতে পারবে। এখন শুধু অপেক্ষা, এই ধারাবাহিকতা তারা ধরে রাখতে পারে কিনা এবং আইএসএলের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারে কিনা।