ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) চলতি মরসুমে ঘরের মাঠেই প্লে-অফের স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal FC)। গত রবিবার বেঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে প্রথমার্ধে অস্কার ব্রুজোর (Oscar Bruzon) দল বেশ দাপটের সাথে খেলছিল। এক গোলে এগিয়েও ছিল, তবে শেষমেষ ম্যাচে নিজেদের হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়াল দিয়ামান্তোকোসের (Dimitrios Diamantakos) লাল কার্ড। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে এ কার্ডটি লাল-হলুদ শিবির সব কিছু গুঁড়িয়ে দেয় এবং দলটি দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনে খেলতে বাধ্য হয়। শেষে সুনীল ছেত্রী পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান, যা নিশ্চিত করে ইস্টবেঙ্গলের প্লে অফে যাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাওয়াকে।
প্লে-অফের স্বপ্ন শেষে ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজো বলেন, “আমাদের সেরা ছয়ে থাকার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। দলের একজন খেলোয়াড়ের অপ্রত্যাশিত আচরণ সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিয়েছে। যখন দল আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল এবং খেলার নিয়ন্ত্রণও আমাদের হাতে ছিল, ঠিক তখনই এই ভুলটা ঘটে গেল।” তার কথায়, দিয়ামান্তোকোসের লাল কার্ডই পুরো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল ভালো খেলছিল এবং বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে তাদের আক্রমণ বেশ কার্যকরী ছিল। তারা এক গোলে এগিয়ে থাকলেও, সেই এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়াতে পারত, কিন্তু খেলোয়াড়ের অপ্রত্যাশিত আচরণ তাদের সুযোগ নষ্ট করে দেয়। অস্কার ব্রুজো পরের দিকে আরও বলেন, “যখন দল আক্রমণ করছিল এবং খেলাটি তাদের হাতে ছিল, তখন এই ভুলটি ঘটল, এবং সেটি আমাদের সেরা ছয়ে জায়গা পাওয়ার আশা শেষ করে দিল।”
তবে ইস্টবেঙ্গল কোচ তার খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে, এই ম্যাচ জিতলে প্লে অফে যাওয়ার পথ খুলে যেতে পারত, কিন্তু এখনও আমার খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে গর্বিত। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনে লড়াই করে দল যা খেলেছে, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি বিশ্বাস করি, যদি আমরা এভাবে খেলতে থাকি এবং কিছু কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু করতে পারব।”
তবে দল এখন সেরা ছয়ে যাওয়ার জন্য আর সুযোগ পাবে না। এক ম্যাচ বাকি থাকলেও, তাদের লক্ষ্য পরিবর্তন হয়ে গেছে। অস্কার ব্রুজো স্পষ্ট জানান, “বর্তমানে আমাদের সামনে একটাই লক্ষ্য আছে, সেটা হল এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ। আমরা আইএসএলে সেরা ছয়ে জায়গা পাওয়ার লক্ষ্যেই ছিলাম, কিন্তু এখন সেটি আর সম্ভব নয়। তাই আমাদের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ভালো কিছু করা। আমাদের এখন খেলোয়াড়দের মানসিক এবং শারীরিকভাবে প্রস্তুত করা জরুরি, যাতে তারা এই নতুন লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।”
এছাড়া, এই ম্যাচে আরও এক বড় ক্ষতি হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের জন্য, তা হল দলের ম্যান ডিফেন্ডার আনোয়ার আলির চোট। আনোয়ার আলি যে দলের শক্তিশালী অংশ, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তিনি ধীরে ধীরে নিজের ফর্মে ফিরছিলেন এবং তার খেলা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে এই ম্যাচে তার হ্যামস্ট্রিংয়ে গুরুতর চোটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্রুজো বলেন, “আনোয়ার আলির চোট আমাদের জন্য এক বড় ধাক্কা। তিনি ভালো ফর্মে ফিরছিলেন, এবং তার চোটে দলের সামগ্রিক শক্তি কমে গেছে।”