লাল-হলুদের সর্বকালের সেরা একাদশে ক্লেন্টন থেকে বিষ্ণু, জায়গা পেলেন স্প্যানিশ ‘হেড স্যার’

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। ২০২০-২১ মরসুমে লিভারপুল (Liverpool) কিংবদন্তি রবি ফাউলারের (Robbie…

East Bengal FC all time ISL best XI

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (ISL) যোগ দেওয়ার পর থেকেই নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি (East Bengal FC)। ২০২০-২১ মরসুমে লিভারপুল (Liverpool) কিংবদন্তি রবি ফাউলারের (Robbie Fowler) কোচিংয়ে যাত্রা শুরু করলেও, এখনও পর্যন্ত একবারও প্লে-অফে জায়গা করে নিতে পারেনি লাল-হলুদ শিবির। তবুও খেলার মাঠে মাঝে মাঝে উজ্জ্বলতা ছড়ানো এই ক্লাব কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে সামনে এনে দিয়েছে। সম্প্রতি ক্লাবের আইএসএল যাত্রার উপর ভিত্তি করে ‘সর্বকালের সেরা একাদশ’ ঘোষণা করা হয়েছে আইএসএলের তরফে।

   

গোলরক্ষক: প্রভসুখন সিং গিল (Prabhsukhan Singh Gill)

অভিজ্ঞ গোলরক্ষকদের ভিড়ে নিজের জাত চিনিয়েছেন তরুণ প্রভসুখন সিং গিল। কেরালা ব্লাস্টার্সে নজরকাড়া পারফরম্যান্সের পর ২০২৩ সালে ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়ে ১৩টি ক্লিন শিটের সাহায্যে দলের শেষ প্রহর রক্ষার দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন।

রাইট ব্যাক: মহম্মদ রাকিপ (Mohammad Rakip)

দলের রক্ষণভাগ সবসময়ই দুর্বলতার জায়গা ছিল। তবে ২০২২ সাল থেকে নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠেন রাকিপ। ইতিমধ্যে ৪০টি ম্যাচে খেলে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন।

সেন্টার ব্যাক: হিজাজি মাহের (Hijazi Maher) ও লালচুংনুঙ্গা (Lalchungnunga)

বিদেশি ও দেশীয় বহু সেন্টার ব্যাক এলেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। তবে জর্ডানের মাহের হিজাজি এবং মিজোরামের লালচুংনুঙ্গা রক্ষণের মেরুদণ্ড হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। মাহের ৩০ ম্যাচে ৯টি ক্লিন শিট ও ২টি গোল করেছেন, অন্যদিকে লালচুংনুঙ্গা ৫৪ ম্যাচে ১১টি ক্লিন শিট ও বিভিন্ন পজিশনে খেলার দক্ষতা দেখিয়েছেন।

লেফট ব্যাক: নিশু কুমার (Nishu Kumar)

২০২৩-২৪ মরসুমে কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে লোনে এসে দুর্দান্ত পারফর্ম করেন নিশু কুমার। ২০টি ম্যাচে তিনটি ক্লিন শিট, ১০টি সুযোগ তৈরি ও ১৭টি সফল ড্রিবল তাঁর কার্যকর ভূমিকার প্রমাণ।

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার: সৌভিক চক্রবর্তী (Souvik Chakrabarti)

২০২২ সালে দলে যোগ দিলেও ২০২৩-২৪ সিজন থেকে নিয়মিত মুখ হন সৌভিক। পজিশনাল ডিসিপ্লিন ও বল ছিনিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার জন্য দলের মাঝমাঠে নির্ভরযোগ্য মুখে পরিণত হন।

সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার: সাউল ক্রেসপো (Saul Crespo)

Advertisements

২০২৩ সালে ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর থেকেই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সাউল ক্রেসপো খেলার ছন্দ এবং আক্রমণে গতি আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। ২৭টি ম্যাচে ৫টি গোল করে তিনি নিজেকে সেরা হিসেবে প্রমাণ করেছেন।

লেফ্ট মিডফিল্ডার: নাওরেম মাহেশ সিং (Naorem Mahesh Singh)

ইস্টবেঙ্গলে আসার পর থেকে নিজের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন মাহেশ। বাম দিক থেকে আক্রমণ গড়ে তোলায় এবং নির্ভুল পাস দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম।

রাইট মিডফিল্ডার: পি ভি বিষ্ণু (PV Vishnu)

২০২৩ সালে আইএসএলে অভিষেকের পর থেকেই নজর কেড়েছেন বিষ্ণু। ২০২৪-২৫ সিজনে চারটি গোল ও তিনটি অ্যাসিস্ট করে নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন তিনি। ১ভি১ সিচুয়েশনে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার দক্ষতা তাঁকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখে।

ফরোয়ার্ড: ক্লেন্টন সিলভা (Cleiton Silva) ও আন্তোনিও পেরোসেভিচ (Antonio Perosevic)

ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ক্লেন্টন সিলভা ২০২২ সালে ইস্টবেঙ্গলে যোগ দিয়ে ২০টি গোল ও ছয়টি অ্যাসিস্ট করেছেন। তিন মরসুমে ক্লাবের সবচেয়ে সফল বিদেশি স্ট্রাইকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর সঙ্গী হবেন ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড আন্তোনিও পেরোসেভিচ, যিনি ১৪টি ম্যাচে ৪টি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করেছেন। তাঁর উচ্চ গতির খেলা ও কর্মঠতা তাঁকে এগিয়ে রেখেছে।

হেড কোচ: কার্লেস কুয়াদ্রাত (Carles Cuadrat)

২০২৩-২৪ মরসুমে ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়া কুয়াদ্রাতের কোচিংয়ে ইস্টবেঙ্গল দীর্ঘ ১২ বছর পর ট্রফি জেতে কালিঙ্গ সুপার কাপ। যদিও আইএসএলে প্লে-অফে উঠতে পারেননি, তবুও খেলোয়াড়দের মধ্যে লড়াই করার মানসিকতা গড়ে তোলায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।

এই একাদশ দলটি ইস্টবেঙ্গল এফসির আইএসএল যাত্রার শ্রেষ্ঠতম প্রতিচ্ছবি। যদিও ট্রফি জয় এখনও স্বপ্নই রয়ে গিয়েছে, এই খেলোয়াড়রাই ভবিষ্যতের আশার আলো দেখিয়েছেন লাল-হলুদের সমর্থকদের।

East Bengal FC all time ISL best XI who won title of Kalinga Super Cup 2023