এবছর আইএসএলে জঘন্যতম শুরু করার পরেও ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে শেষপর্যন্ত উপেক্ষিতই থেকে গেল ‘অভিজ্ঞতা’। বিগত রবিবার কোচিতে কেরালার কাছে ভরাডুবির পরও, আজকের ম্যাচে তারুণ্যের ওপরই আস্থা রাখতে চলেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লোস কুয়াদ্রাত। আজ যুবভারতীতে গোয়ার (East Bengal vs FC Goa) বিরুদ্ধে ‘ঘুরে দাঁড়ানোর’ ম্যাচে মাঠে নামবে লাল-হলুদ শিবির। আর এই ম্যাচেও অভিজ্ঞ গোলরক্ষক দেবজিৎকে বসিয়ে রেখে প্রবসুখন গিলকেই তেকাঠির দায়িত্ব দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বিগত রবিবার গোয়া ম্যাচে দুটি গুরুত্ব পূর্ণ সেভ করলেও অভিজ্ঞতার বিচারে দেবজিৎ অনেকেটাই এগিয়ে। আর এই বিষয়টি নিয়েই নিন্দার ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যমে।
বেশ কিছুদিন আগেই ডুরান্ড কাপের বদলা নিয়ে আইএসেএলে নর্থইস্টকে পরাজিত করেছে মোহনবাগান। স্বদেশী-বিদেশী ফুটবলারদের মিলিত সাফল্যেই এই জয় পেয়েছে সবুজ-মেরুন শিবির। স্বভাবতই ঘরের মাঠে এই জয়ে খুশি হয়েছে কলকাতাবাসী। তবে প্রতিপক্ষের ঘরে জয় এলেও এখনও মশাল জ্বলে ওঠেনি লাল-হলুদ শিবিরে। এবছর শুরুতে ডুরান্ডে চরম ব্যর্থ হয়েছিল বাঙালব্রিগেড। এরপর এ মরশুমে আইএসএল খেলতে নেমে শুরুতেই পরপর দুটি ম্যাচেই হারতে হয়েছে কার্লোস কুয়াদ্রাতের দলকে। বিগত আইএসএলে সবথেকে বেশি গোল করা গ্রিক স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়াস ইস্টবেঙ্গলের হয়ে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। এছাড়াও দলের আক্রমনভাগে আরেক বিদেশী ফরোয়ার্ড সেল্টন সিলভাও ব্যর্থ। এমনকি কেরালার বিরুদ্ধে ভালো রেকর্ড থাকা ক্রেসপোও শুরু থেকে শেষ অবধি নিষ্প্রভ ছিলেন। রবিবার তেকাঠির নিচে দাঁড়িয়ে সিদ্দিকি এবং পেপরার শর্ট তালুবন্দি করতে পারেননি গিল। তাই তাঁকে নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
“We have been waiting for this moment. We hope to make our supporters proud.” 💬
The boss shared his thoughts on #EBFCFCG. Full press conference 📽️👉 https://t.co/ibcHt8V2ak#JoyEastBengal #EastBengalFC #ISL pic.twitter.com/qzzG7IZxho
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) September 27, 2024
এবছর আইএসএলের শুরুতেই দেবজিৎ মজুমদারকে সই করিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। তারপর থেকে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেললেও বড় ম্যাচে সেভাবে দেখা যায়নি হিন্দমোটরের এই গোলকিপারকে। পাঞ্জাবি তরুণ গোলকিপার গিলকেই ম্যাচের জন্য বেছে নিয়েছেন কুয়াদ্রাত। এক ম্যাচে ১৩খানা গোল সেভ করার রেকর্ড থাকলেও তাঁর ওপরে এখনও আস্থা দেখতে পারেননি লাল-হলুদ কোচ। ফলস্বরূপ ম্যাচের পর ম্যাচ তেকাঠিতে ‘অনভিজ্ঞতাই’ পার্থক্য করে দিচ্ছে মশাল ব্রিগেডের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে ইস্টবেঙ্গলই প্রথম বড় ক্লাব ছিল দেবজিৎ মজুমদারের। কালীঘাট থেকে এসেছিলেন খুব সম্ভবত। বয়স বোধ হয় একুশ কি বাইশ হবে। একটা খারাপ ম্যাচ। সেভাবে সুযোগ না পেয়ে ভবানীপুর। সেখান থেকে মোহনবাগান। সংগ্রাম মুখার্জির গ্লাভসে তখন বাগান জনতার বাজপাখি শিল্টন পাল। সেই শিল্টন পাল যেবার চোটের কবলে পড়েন, ত্রাতার ভূমিকায় এসেছিলেন তরুণ তুর্কি দেবজিত। সঞ্জয় সেনের হাত ধরে আইলিগ জয়ের পরের ক’টা সিজন দেবজিতের নামই হয়ে উঠল সেভজিত। এরপর আবার ফিরে আসেন ইস্টবেঙ্গলেই। আর রবি ফাওলারের ইস্টবেঙ্গল,যে দলটা কিনা গড়ে আড়াইখানা করে গোল খেত,সেই দলের গোলের নিচে দাঁড়িয়ে একা কুম্ভের মতো লড়তেন দেবজিত। সেই বাইশ-তেইশের দেবজিত এখন পঁয়ত্রিশ। প্রায় কেরিয়ার সায়াহ্নে এসেও সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। কিন্তু যুবভারতী, যা কিনা তিনি নিজেই একবার মোহনবাগানে থাকাকালীন মোহনভারতী বলে সম্বোধন করেছিলেন, সেই মোহনভারতীর শব্দব্রহ্মকে থামাতে শেষ মুহূর্তে দুটো সেভ করে আজ (East Bengal vs FC Goa) নিজের জাত চেনাতে পারেন কিনা সেটা দেখাতেই মুখিয়ে আছে সমগ্র ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা।