মাত্র তিন বছরের পথচলা। কিন্তু সেই অল্প সময়েই ভারতীয় ফুটবলের মানচিত্রে শক্তিশালী ছাপ ফেলে দিয়েছে ডায়মন্ড হারবার এফসি (Diamond Harbour FC)। ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল, বাংলা নববর্ষের দিন আত্মপ্রকাশ করা এই ক্লাব অল্প সময়ের মধ্যেই কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশন পেরিয়ে আই-লিগ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আর এবার ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপে (Durand Cup 2025) অভিষেকের অপেক্ষায় ‘চতুর্থ জায়ান্ট’ হিসেবে পরিচিত ডায়মন্ড হারবার।
২৮ জুলাই, ডুরান্ড কাপের ১৩৪তম সংস্করণে (Durand Cup 2025) ডায়মন্ড হারবার অভিষেক ম্যাচে মুখোমুখি হবে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের (Mohammedan SC)। এটি শুধু দুই দলের লড়াই নয়, বরং কলকাতা ফুটবলের দুই প্রজন্মের মুখোমুখি হওয়ার মুহূর্ত।
প্রবীণ ও ঐতিহ্যবাহী মহামেডান এসসি যেখানে শতবর্ষের অভিজ্ঞতা নিয়ে নামছে, সেখানে তরুণ ডায়মন্ড হারবার এফসি নতুন অধ্যায় শুরু করতে চাইছে সাহস ও পরিকল্পনাকে সম্বল করে। স্প্যানিশ কোচ কিবু ভিকুনার নেতৃত্বে দল এখন একেবারে নতুনভাবে সাজানো। বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে জাতীয় স্তরের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সংমিশ্রণে গড়ে তোলা হয়েছে দল। আইএসএলে খেলা লুকা মাজসেন, স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মিকেল কার্তোজা, ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের সঙ্গে হালচাল ফেলে দেওয়া চুক্তি হোলিচরণ নার্জারিকে দলে টেনে চমক দিয়েছে ক্লাব।

অন্যদিকে, মহামেডান এসসির তরফে এই ম্যাচে দেখা যাবে একঝাঁক তরুণ প্রতিভাবান ফুটবলার ও রিজার্ভ দলভুক্ত খেলোয়াড়দের। বাংলার স্থানীয় প্রতিভা ও ক্লাবের ভবিষ্যৎ ভরসা হিসেবে উঠে আসা কিছু নাম এদিন প্রথম একাদশে সুযোগ পেতে পারেন। গ্রুপ ‘বি’তে তারা রয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট, বিএসএফ এবং ডায়মন্ড হারবারের সঙ্গে। গ্রুপ পর্ব থেকে কেবল সেরা দলই পরবর্তী রাউন্ডে যেতে পারবে, ফলে প্রতিটি ম্যাচই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়মন্ড হারবার এফসির কোচ কিবু ভিকুনা বলেন, “মহামেডান এসসিকে আমরা একটুও হালকাভাবে নিচ্ছি না। ওরা অভিজ্ঞ দল, শক্ত প্রতিপক্ষ। ডুরান্ড কাপ আমাদের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ওদের কাছেও তেমনি অনুপ্রেরণার উৎস। আমাদের যদি জয় পেতে হয়, তবে সেরা খেলাটা খেলতেই হবে।”
ডুরান্ড কাপে অভিষেকের আগেই ডায়মন্ড হারবার যে পেশাদারিত্ব এবং স্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, তা এবার চোখে পড়েছে ফুটবল মহলেও। কলকাতার ফুটবল মানচিত্রে ‘চতুর্থ জায়ান্ট’ হিসেবে পরিচিত এই ক্লাব এবার দেশের বৃহত্তর মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করতে চায়। পাল্টা ফিফার ট্রান্সফার ব্যান থাকা সত্বেও ডুরান্ডের মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে মরিয়া সাদা-কালো জায়ান্টরা।