চেন্নাই সুপার কিংসের সহজ জয়, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হারের ধারা অব্যাহত

আইপিএল ২০২৫-এর (IPL 2025) প্রথম ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) রবিবার চেপক স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (এমআই) বিরুদ্ধে (CSK vs MI) চার উইকেটের সহজ জয় তুলে…

CSK Dominate MI in IPL 2025 Opener as Mumbai’s Losing Streak Continues

আইপিএল ২০২৫-এর (IPL 2025) প্রথম ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংস (সিএসকে) রবিবার চেপক স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (এমআই) বিরুদ্ধে (CSK vs MI) চার উইকেটের সহজ জয় তুলে নিয়েছে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে সিএসকে তাদের এবারের আইপিএল অভিযান শুরু করল দুর্দান্তভাবে, অন্যদিকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রথম ম্যাচে হারের ১৩ বছরের পুরনো অবাঞ্ছিত রেকর্ড অব্যাহত রইল। মুম্বই শেষবার তাদের আইপিএল অভিযানের প্রথম ম্যাচ জিতেছিল ২০১২ সালে, তারপর থেকে প্রতি বছরই তারা উদ্বোধনী ম্যাচে হেরে আসছে।

এই ম্যাচে রাচিন রবীন্দ্র সিএসকের জয়ের নায়ক হয়ে উঠলেন। তিনি অপরাজিত ৬৫ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এছাড়াও সিএসকে অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কওয়াড় মাত্র ২৬ বলে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে দলের জয়কে আরও সহজ করে তোলেন। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের বোলারদের মধ্যে অভিষেককারী ২৪ বছর বয়সী বিগ্নেশ পুথুর হারের মধ্যেও আলোর রেখা হয়ে উঠেছেন। তিনি ৩২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।

   

Also Read | আইপিএলে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়ের সেরা পাঁচ সর্বোচ্চ রান, জানুন বিস্তারিত 

Advertisements

ম্যাচের শুরুতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কিন্তু সিএসকের বোলারদের দাপটে তারা ২০ ওভারে মাত্র ১৫৫ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে আটকে যায়। সিএসকের তরুণ স্পিনার নূর আহমেদ মুম্বইয়ের ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। তিনি ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন, যা ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। তার সঙ্গে খলিল আহমেদও ২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে মুম্বইকে চাপে ফেলে দেন। মুম্বইয়ের ব্যাটসম্যানরা সিএসকের বোলিং আক্রমণের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যানরা একের পর এক প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, ফলে মুম্বই মাঝারি রানে আটকে যায়।

১৫৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সিএসকে শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। রাচিন রবীন্দ্র এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান। তার অপরাজিত ৬৫ রানের ইনিংসে ছিল দৃঢ়তা এবং দক্ষতার মিশ্রণ। অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কওয়াড় দ্রুতগতির ৫৩ রান করে ম্যাচে গতি এনে দেন। মাত্র ২৬ বলে এই রান করা তার আক্রমণাত্মক মনোভাবের প্রমাণ দেয়। দুজনের জুটি মুম্বইয়ের বোলারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সিএসকে ৪ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

মুম্বইয়ের বোলারদের মধ্যে বিগ্নেশ পুথুর ছাড়া আর কেউ তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি। তার ৩ উইকেট সত্ত্বেও মুম্বই দলকে হার থেকে বাঁচাতে পারেনি। সিএসকের ব্যাটসম্যানরা মুম্বইয়ের বোলিং আক্রমণকে সহজেই মোকাবিলা করে জয় ছিনিয়ে নেয়।

চেপক স্টেডিয়ামে সিএসকের এই জয় তাদের ঘরের মাঠে দাপটের আরেকটি প্রমাণ। ভক্তদের উচ্ছ্বাসের মধ্যে দলের খেলোয়াড়রা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন। নূর আহমেদ এবং খলিল আহমেদের বোলিং দক্ষতা এবং রাচিন-রুতুরাজের ব্যাটিং দলের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের জন্য এই হার আরও একটি ধাক্কা। প্রথম ম্যাচে হারের এই ধারা ভাঙতে না পারা দলের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ম্যাচ শেষে সিএসকে ভক্তরা চেপকে উৎসবের আমেজে মেতে ওঠেন। সামাজিক মাধ্যমে রাচিন রবীন্দ্র এবং রুতুরাজ গায়কওয়াড়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন সমর্থকরা। অন্যদিকে, মুম্বইয়ের সমর্থকরা দলের এই ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেকে মনে করছেন, দলের ব্যাটিং কৌশল এবং প্রথম ম্যাচে জয়ের মানসিকতা নিয়ে কাজ করা দরকার।

এই জয়ের মধ্য দিয়ে সিএসকে আইপিএল ২০২৫-এ তাদের অভিযান শুরু করল শক্তিশালীভাবে। দলের তরুণ এবং অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সমন্বয় এবারের মরশুমে তাদের জন্য বড় সম্পদ হতে পারে। অন্যদিকে, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আইপিএলের এই উত্তেজনাপূর্ণ শুরুর পর ভক্তরা এখন পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।