হায়দরাবাদের জিমখানা মাঠে শনিবার যেন এক অচেনা বাংলা দলকে দেখা গেল। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির (Syed Mushtaq Ali Trophy) গুরুত্বপূর্ণ লিগ ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়ে পণ্ডিচেরীর কাছে ৮১ রানের বিরাট ব্যবধানে হারল অভিমন্যু ঈশ্বরনের নেতৃত্বাধীন দল। এই হার নকআউটে ওঠার অঙ্ককে জটিলই নয়, প্রায় অসম্ভব করে তুলল বাংলার সামনে।
১৭৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলার শুরুটা ছিল দারুণ। মাত্র ৪ ওভারে স্কোরবোর্ডে উঠে যায় ৪৪ রান। মনে হচ্ছিল সহজেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেবে ব্যাটাররা। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে চতুর্থ ওভারের শেষ বলেই ১১ রান করা অভিষেক পোড়েল ফেরার পর শুরু হয় ধস।অপ্রতিরোধ্য, ভয়াবহ এবং হতাশাজনক।
বাংলার শেষ ৮ উইকেট পড়ে মাত্র ২৬ রানে, সময় লাগে মাত্র ৬.২ ওভার। এর মধ্যে শেষ ৬ উইকেট পড়ে মাত্র ১৬ রানে, টি২০ ক্রিকেটে একেবারেই অকল্পনীয়।
একাই লড়াই চালান করণ লাল। ২৩ বলে ৪০ রানের সাহসী ইনিংস খেললেও বাকিদের ব্যর্থতায় ১৩.৫ ওভারেই ৯৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলা। ওপেনার অভিমন্যু করেন ৬ বলে ১২, কিন্তু দলের পতন আর ঠেকাতে পারেননি কেউই। সাত ব্যাটার ফেরেন সিঙ্গল ডিজিটে।
পণ্ডিচেরির ব্যাটিংয়ে ঝড় তুললেন আমন খান
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিং নিতে চেয়েছিল বাংলা। শুরুটা খারাপ না হলেও পণ্ডিচেরির দুই ব্যাটার অধিনায়ক আমন খান (৪০ বলে ৭৪) ও যশবন্ত শ্রীরাম (৩৪ বলে ৪৫) বাংলার বোলারদের চাপে ফেলেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে।
শামি তাঁর অভিজ্ঞতা ও গতি দিয়ে ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে নেন তিনটি উইকেট। ডট বল করেন সর্বাধিক ১৩টি। ঋত্ত্বিক চট্টোপাধ্যায়ের ঝুলিতে আসে ২ উইকেট, তবে খরচ হয় ৫৩ রান। মুকেশ, আকাশ দীপ ও প্রদীপ্ত উইকেটশূন্য থেকে যান। ১৭৭/৫ টি২০ ক্রিকেটে লড়াই করার মতো রান তো বটেই, কিন্তু বাংলার ব্যাটিং বিপর্যয়ের সামনে তা পাহাড় হয়ে দাঁড়ায়।
বাংলার হার অনেকটা পণ্ডিচেরির বোলারদের কান্ডারিত্বেরই ফল। জয়ন্ত যাদব একাই নেন ৪ উইকেট, সিদাক সিং শিকার করেন ৩ উইকেট। দুই প্রান্ত থেকেই বোলাররা চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন, আর বাংলার ব্যাটাররা বোল্ড, ক্যাচ, ভুল শট সব ধরনের ভুলে এদিন পরাস্ত।
নকআউটের অঙ্ক প্রায় অসম্ভব
এই বড় হারের ফলে বাংলার নেট রান রেট ভয়ঙ্করভাবে নেমে গেছে। শেষ ম্যাচে হরিয়ানাকে হারালেও নেট রান রেটের হিসেব এখন বাংলার বিপক্ষে। ফলে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছনো হয়ে দাঁড়িয়েছে কার্যত অসম্ভব এক সমীকরণ। টুর্নামেন্টের শুরুটা দুর্দান্ত করেও লিগ পর্বের শেষ দিকে এসে যে ভাবে ব্যাটিং ভেঙে পড়েছে, তা চিন্তায় ফেলছে বাংলার দল ব্যবস্থাপনাকে।


