২০২৫ সালের আইপিএল (IPL 2025) ফাইনাল কোথায় হবে? এই নিয়ে তৈরি হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও ক্ষোভ। শুক্রবার ইডেন গার্ডেন্সের সামনে ব্যানার, পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কলকাতার ক্রিকেট প্রেমীরা (Cricket Fans)। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, চলতি বছরের ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল কলকাতার (Kolkata) ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens)। কারণ, গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)। আইপিএলের অলিখিত রীতি অনুযায়ী, চ্যাম্পিয়ন দলের শহরই পায় পরের বছরের উদ্বোধনী ম্যাচ ও ফাইনাল আয়োজনের সুযোগ। সেই অনুযায়ীই চলতি বছর ইডেন গার্ডেন্সে ফাইনাল ও একটি কোয়ালিফায়ার আয়োজনের দায়িত্ব পায়।
শিশিরের চার গোলে ইয়ং চ্যাম্পসের বিরুদ্ধে ঝড় তুলল মশাল ব্রিগেড
কিন্তু সীমান্তে ভারত-পাক সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে আইপিএল ২০২৫ এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। এরপরই পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ায়। নতুন করে সূচি প্রকাশিত হলেও ফাইনালের কোন ভ্যেনু উল্লেখ নেই। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, ফাইনাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। যদিও BCCI এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে এই সম্ভাবনা নিয়েই এখন উত্তাল হয়ে উঠেছে কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমী মহল।
শুক্রবার ইডেন গার্ডেন্সের সামনে ব্যানার, পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কলকাতার ক্রিকেট প্রেমীরা (Cricket Fans)। তাদের বক্তব্য, ‘ক্রিকেটের নন্দন কানন’ ইডেন গার্ডেন্সকে বঞ্চিত করা চলবে না। বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা দীর্ঘ ১০ বছর পর ফাইনাল ম্যাচ ঘরে বসে দেখার স্বপ্ন দেখছিলেন। আর সেই স্বপ্নেই যেন জল ঢেলে দিল BCCI।
KKR ম্যাচের আগেই ‘বিরাট’ সুখবর কোহলিদের
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক তরুণ সমর্থকের কথায়, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করছি। পশ্চিমবঙ্গে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় আছে। তাহলে কোন যুক্তিতে ফাইনাল সরিয়ে নেওয়ার ভাবনা? পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনও সীমান্ত নেই। গুজরাটে আছে। তাহলে ফাইনাল কেন সেখানে আয়োজনের কথা ভাবা হচ্ছে?’
সমর্থকদের এই ক্ষোভ যে যথেষ্ট যৌক্তিক, তা মেনে নিচ্ছেন বাংলা ক্রিকেট মহলের অনেকে।ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল ইতিমধ্যেই বিসিসিআইকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ইডেন গার্ডেন্স ৩ জুনের ফাইনাল আয়োজনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। শহরের সম্ভাব্য আবহাওয়ার পূর্বাভাস, মাঠের নিকাশি ব্যবস্থা, সুপার সপার-সহ সমস্ত পরিকাঠামোর তথ্য জমা দেওয়া হয়েছে বোর্ডকে।
সিএবির এক কর্তা জানান, ‘ইডেন গার্ডেন্সে অল্প বা মাঝারি বৃষ্টিতেও খেলা আয়োজন করা যায়। আমাদের সুপার সপার ও নিকাশি ব্যবস্থার মান দেশের মধ্যে সেরা। BCCI চাইলেই এই ফাইনাল আয়োজন সফলভাবে করা সম্ভব।”
বিরাট-রোহিতের অবসরে ইংল্যান্ড সফরে প্রত্যাবর্তন দুই তারকা প্রাক্তনীর!
তবে আইপিএল নতুন সূচিতে ইডেনের নাম না থাকায় প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রাজনৈতিক প্রভাবেই ফাইনালের ভেন্যু বদলের পরিকল্পনা? অনেকে বলছেন, নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের প্রতি এক ধরনের পক্ষপাতিত্বই দেখাচ্ছে BCCI। যদিও এই অভিযোগে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি বোর্ড।
এদিনের বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন বহু মহিলা ক্রিকেটপ্রেমীও। তারা বলেন, “আমরা বছরের পর বছর ইডেনে খেলা দেখে এসেছি। এবার আমাদের সুযোগ ছিল ফাইনাল দেখার। সেটাও কেড়ে নিচ্ছে বোর্ড। এটা শুধু বঞ্চনা নয়, অবিচার।”
আইপিএলে বড় ধাক্কা দিল্লির, তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে টানাপোড়েনে দল
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, সমর্থকদের এই প্রতিক্রিয়া বোর্ডের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে। সিএবি ইতিমধ্যেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এখন দেখার, BCCI শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয়।
ক্রিকেট শুধুমাত্র একটি খেলা নয়, বাংলায় এটি আবেগ। আর সেই আবেগে আঘাত লাগলে প্রতিবাদ হবেই। ইডেন থেকে আইপিএল ফাইনাল সরানোর চেষ্টাকে বাংলার মানুষ মেনে নিচ্ছেন না। এখন সময় বলবে, এই বিক্ষোভের পর BCCI আদৌ তাঁদের অবস্থান বদলায় কি না। আপাতত ক্রিকেট দুনিয়ার চোখ ইডেন ও বিসিসিআই-এর সিদ্ধান্তের দিকে।