বাংলার ক্রিকেটের উন্নয়নে সিএবি (Cricket Association of Bengal) এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে। সিএবি এর পক্ষ থেকে এক বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে বাংলার ক্রিকেটের ভবিষ্যত আম্পায়ারদের পরীক্ষা (Umpire Exam) নেওয়া হচ্ছে। এই পরীক্ষাটি আইসিসি আম্পায়ার নীতিন মেননের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এর আগে সিএবি’তে কখনও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
প্রতিযোগিতার এই পরীক্ষায় মোট ৪১ জন আম্পায়ার অংশগ্রহণ করেছেন, এবং তাদের মধ্যে ৩ জন মহিলা আম্পায়ারও রয়েছেন। এই পরীক্ষাটি চারটি বিভাগে বিভক্ত—লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা, ভিডিও বিশ্লেষণ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা। পরীক্ষার পর, চারজন প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হবে, যারা পরবর্তীতে বিসিসিআই আম্পায়ার হিসেবে কাজ করার জন্য প্রস্তুত হবেন। সিএবি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচিত এই চারজনকে পরে বিসিসিআই-এর কাছে পাঠানো হবে, এবং সেখান থেকে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ পাবে।
এক নতুন পদক্ষেপ: আইসিসি আম্পায়ার নীতিন মেননের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষা
আইসিসি আম্পায়ার নীতিন মেননের উপস্থিতি এই উদ্যোগের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রসেনজিৎ ব্যানার্জী, সিএবির আম্পায়ার কমিটির চেয়ারম্যান, আমাদের প্রতিনিধির কাছে জানিয়েছেন যে সিএবি সভাপতি স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এটাই প্রথমবার, যখন সিএবি-তে আইসিসি পর্যায়ের আম্পায়ারদের নিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে বাংলার ক্রিকেট আরও উন্নতি লাভ করতে পারে।
প্রসেনজিৎ ব্যানার্জী বিশেষভাবে সিএবির সভাপতি স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান, যিনি আম্পায়ারদের প্রতি এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং তাদের উন্নতির জন্য কাজ করছেন।
সিএবি’র সামাজিক উদ্যোগ
এই পরীক্ষাটি শুধু ক্রিকেটের জন্য নয়, বরং এটি সিএবির একটি সামাজিক উদ্যোগও। সিএবির পর্যবেক্ষক শ্রীমন্ত কুমার মল্লিক বলেন, “এটি একটি মহান উদ্যোগ। সিএবি ছেলেমেয়েদের প্রতি সমান গুরুত্ব দিচ্ছে, এবং মহিলাদেরও সমান সুযোগ দিচ্ছে আম্পায়ার হওয়ার জন্য। সিএবি-র এই উদ্যোগ সমাজের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছাবে, এবং মহিলাদের জন্য আরও পথ উন্মুক্ত করবে।” তিনি আরও বলেন, এটি সিএবির একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক পদক্ষেপ, যা বাংলার ক্রিকেটের বিকাশে সহায়ক হবে।
বাংলার অদম্য ভবিষ্যত: আম্পায়ারিংয়ে মহিলাদের এগিয়ে আসা
সিএবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আশা করেন বাংলার আঞ্চলিক আম্পায়াররা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করবেন। বিশেষ করে মহিলা আম্পায়ারদের আইসিসি পর্যায়ে উঠে আসা এক গর্বের বিষয় হবে বাংলার ক্রিকেটের জন্য। সিএবির এই নতুন উদ্যোগ বাংলার ক্রিকেটের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে সক্ষম হতে পারে এবং ক্রিকেটের প্রতি মহিলাদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সিএবি’র বৃহৎ পরিকল্পনা
এটি শুধু একটি পরীক্ষা নয়, বরং সিএবির বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ। সিএবি ভবিষ্যতে আরো এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে চায়, যা ক্রিকেটের উন্নতির পাশাপাশি আম্পায়ারিং খাতেও বাংলাকে সম্মানিত করবে। বিশেষভাবে মহিলাদের জন্য এ ধরনের উদ্যোগ এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে, এবং সিএবি’র এই পদক্ষেপ অন্যদের কাছে একটি মডেল হিসেবে কাজ করবে।
ক্রিকেটের এই নতুন পদক্ষেপ বাংলার ক্রিকেটকে আলাদা পরিচিতি প্রদান করবে। সিএবি’র এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে যে, তারা শুধু পুরুষদেরই নয়, মহিলাদের জন্যও সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে বদ্ধপরিকর। ভবিষ্যতে, বাংলার আঞ্চলিক ক্রিকেট এবং আম্পায়ারিং খাতের জন্য এটি একটি গৌরবের মুহূর্ত হতে চলেছে।