এবছর অলিম্পিকের শুরু থেকেই চোট সমস্যায় ভুগছিলেন। অলিম্পিকে রূপো জেতার পরই চোট সমস্যা আরও বাড়তে থাকে। শেষপর্যন্ত চোট নিয়েই ডায়মন্ড লিগ ফাইনাল খেলতে নামেন ‘ভারতের সোনার ছেলে’ নীরজ চোপড়া (Neeraj Chopra)। সেখানেও অল্পের জন্য খেতাব জেতা হয়নি তাঁর; বাড়ি ফিরেছিলেন বাঁ পায়ে প্লাস্টার নিয়ে। এবার ভারতের হয়ে জোড়া অলিম্পিক পদকজয়ী তারকার সঙ্গ ছাড়লেন ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে তাঁর অন্যতম কোচ ক্লজ বার্তোনিৎজ় (Klaus Bartonietz)।
বিগত দুটি অলিম্পিক্স এবং দু’টি বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে নীরজের কোচিং টিমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন বার্তোনিৎজ। এছাড়াও জার্মানির এই ফিটনেস কোচ হরিয়ানার অ্যাথলিটের অন্যতম প্রিয় ছিলেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে নীরজ ছাড়া আরও অন্যান্য জ্যাভলিন থ্রোয়ারদেরও কোচিং করিয়েছেন তিনি। তবে এই মুহূর্তে ৭৫ বছর বয়সী এই জার্মান কোচ নিজের পরিবারের সঙ্গেই বেশি সময় কাটাতে চাইছেন। যাঁর জন্যই ভারতীয় তারকার সঙ্গে বছর পাঁচেক কাজ করার পর তিনি নিজেই আর কাজ করতে চাইছেন না। এছাড়া শুধু নীরজের সাথেই নন, ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাথেই আর কোনো কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০১৯ সাল থেকে বার্তোনিৎজের সঙ্গে প্রথম চুক্তি করেছিল অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া। তবে সেসময় পুরোপুরি ভাবে কোচের রূপে আবির্ভূত হননি এই জার্মান ভদ্রলোক। প্রথমে তিনি একজন বায়মেকানিকাল বিশেষজ্ঞ হিসেবেই ভারতের মাটিতে পা রাখেন। এরপর নীরজের প্রাক্তন কোচ উয়ে হন হাঁটুর চোট পেয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়লে তিনি এই দায়িত্ব পান। তবে উয়ে হনের কোচিংয়ে টোকিয়া অলিম্পিকে সোনা জিতলেও বার্তোনিৎজের সঙ্গে থেকেও নীরজের পদকের ঝুলি পূর্ণ হতে থাকে। তাঁর কোচিংয়ে অলিম্পিক পদক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা ও রুপো, এশিয়ান গেমসে সোনা এবং ডায়মন্ড লিগ খেতাব পান হরিয়ানার এই কিংবদন্তি তারকা।
তবে বার্তোনিৎজ অবশ্য প্যারিস অলিম্পিকের আগেই ভারতীয় ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলেন যে তিনি বয়সজনিত কারণেই আর থাকতে চান না। নীরজকে সময় দিতে হলে তাঁর প্রায় সারাবছরই ভারতে বা নির্দিষ্ট টুর্নামেন্টের আসরেই কেটে যায়। তাই শেষ পর্যন্ত এবছর ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ডায়মন্ড লিগের পরই চুক্তি শেষ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এই জার্মান ফিটনেস বিশেষজ্ঞ। তাই অনিচ্ছা সত্বেও তাঁকে গতকাল একপ্রকার নিষ্কৃতি দিয়েছে ভারতীয় বোর্ডের কর্মকর্তারা।
তবে বার্তোনিৎজের সিদ্ধান্তকে সম্মান করলেও তাঁকে পুরোপুরি ছাড়তে নারাজ ভারতের অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন। সিনিয়রদের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করার পর জুনিয়রদের কোচিংয়ের দায়িত্বে তাঁকে রাখতে চায় ভারত। তবে এক্ষেত্রে জার্মান কোচকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে ভারতীয় বোর্ড। জুনিয়র টিমের কোচিং করাতে হলে সারাবছর তাঁকে পরিবারের থেকে দূরে থাকতে হবে না। প্রয়োজনমতো তিনি দেশে আসবেন। সেরকম হলে জুনিয়র অ্যাথলিটদের জার্মানিতে পাঠিয়েও তাঁর কাছে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করতে পারেন কর্তারা।