মঙ্গলবার রাতে চেন্নাইয়ের (Chennai) জওহরলাল নেহরু ইন্ডোর স্টেডিয়ামে (Jawaharlal Nehru Stadium, Chennai) মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG) নামবে চেন্নাইয়িনের (Chennaiyin FC) বিরুদ্ধে। তবে এই ম্যাচে চেন্নাইয়ের দলকে শুধু প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা যাবে না। বরং তাদের মধ্যে এমন কিছু প্রাক্তন খেলোয়াড় থাকবেন, যাঁরা একসময় বাগান দলের মূল ভরসা ছিলেন। একদিকে, লিগ শীর্ষে অবস্থান দৃঢ় করতে সবুজ মেরুন ব্রিগেড চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে। অন্যদিকে চেন্নাইয়ের খেলোয়াড়দের জন্য এই ম্যাচটি অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে, কারণ তাদের দলেই রয়েছেনা কয়েকজন প্রাক্তন মোহনবাগান তারকা।
গত ম্যাচে জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে মোহনবাগান আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেও শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাচে জিততে পারেনি। ম্যাচ শেষ ফলাফল ছিল ১-১ । তবে তাদের কোচ হোসে মোলিনা জানিয়েছেন যে, এই ম্যাচে তার দলকে জয়ের সারণিতে ফিরিয়ে আনতে তিনি প্রস্তুত। বিশেষ করে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে এই ম্যাচে প্রাক্তন খেলোয়াড়রা বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
প্রাক্তনদের সঙ্গে মোকাবিলা
চেন্নাইয়ের কোচ ওয়েন কোয়েল এই ম্যাচে অংশ নিতে পারবেন না কারণ তিনি কার্ড সমস্যায় ভুগছেন। তবে তার সহকারী কোচ নোয়েল উইলসন দলের দায়িত্বে থাকবেন। নোয়েল একসময় মোহনবাগানে খেলে ছিলেন এবং মাঝমাঠে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন। তার অভিজ্ঞতা অবশ্যই চেন্নাইকে সাহায্য করবে। তাছাড়া চেন্নাইয়ের দলে রয়েছেন তিন প্রাক্তন মোহনবাগান খেলোয়াড় প্রীতম কোটাল, অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় এবং কিয়ান নাসিরি।
প্রথমবারের মতো চেন্নাইয়ের জার্সিতে খেলতে নামবেন প্রীতম কোটাল, যিনি কয়েকদিন আগে কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে চেন্নাইয়ে যোগ দিয়েছেন। এক সময় মোহনবাগানের রক্ষণে তার উপস্থিতি ছিল অপরিহার্য। এখন, চেন্নাইয়ের ডিফেন্সে তাকে দেখে মোহনবাগান যে কতটা সতর্ক থাকবে, তা বলা মুশকিল নয়। নোয়েল উইলসন আশা করছেন যে, প্রীতম কোটালের অভিজ্ঞতা তাদের দলের রক্ষণে সাহায্য করবে, বিশেষ করে যখন তারা মোহনবাগানের শক্তিশালী আক্রমণশক্তির বিরুদ্ধে খেলবে।
চেন্নাইয়ের ডিফেন্স ও গোল খাওয়া
চেন্নাইয়ের ডিফেন্স নিয়ে একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অতীত ম্যাচগুলিতে দেখা গেছে, দলের ডিফেন্স যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সোমবার নোয়েল উইলসন জানান, “আমরা ৯৪ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও ম্যাচ জিততে পারিনি। এটা খুব হতাশাজনক।” মহামেডান এবং ওডিশা এফসির বিরুদ্ধে চেন্নাই ঠিক এমনই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল। সেই কারণে চেন্নাইয়ের কোচিং স্টাফ এখন ডিফেন্সের উন্নতি নিয়ে চিন্তা করছেন।
চেন্নাই এই ম্যাচে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পাচ্ছে না—ডিনপুইয়া, ব্রামবিলা এবং রায়ান। এই সমস্যাগুলো চেন্নাইয়ের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তাদের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, তারা যেন লিগ টেবলে ১০ নম্বর স্থান থেকে উঠে সুপার সিক্সে যাওয়ার জন্য উপযুক্ত ফলাফল পায়।
মোহনবাগানের পরিস্থিতি
মোহনবাগান শিবিরে চোট সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় যেমন সাহল আব্দুল সামাদ চোট সারিয়ে দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করেছেন এবং চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন। যদিও অনিরুদ্ধ থাপা এবং আশিক কুরুনিয়ন এই ম্যাচে থাকতে পারছেন না, তবে মোহনবাগান কোচ মোলিনা তার দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে মোহনবাগান অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করলেও শেষ পর্যন্ত জয় পায়নি। তবে মোলিনা বিশ্বাস করেন, “আমার ছেলেরা চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে গোল করতে পারবে।”
তবে, গোল খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে মোহনবাগান ডিফেন্ডারদের, বিশেষ করে ড্যানিয়েল চিমাচুকু ও কিয়ান নাসিরির প্রতি। কিয়ান মরশুমের শুরুতে ব্রিটিশ কোচের প্রেসিং ফুটবল খেলার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় নিয়েছিলেন, কিন্তু এখন তিনি দলের সঙ্গে সপ্রতিভ হয়ে উঠেছেন। মোহনবাগান তাদের পুরনো দলের জালে বল জড়ানোর জন্য মরিয়া এবং এই ম্যাচে তারা যে সাফল্য পাবে, তা নিয়ে আশাবাদী।
মঙ্গলবারের ম্যাচটি মোহনবাগান এবং চেন্নাইয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চেন্নাইয়ের কাছে বেশ কিছু প্রাক্তন মোহনবাগান তারকা থাকায়, তাদের জন্য এটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। মোহনবাগান, যাদের দলও শক্তিশালী, সতর্কভাবে খেলতে হবে যাতে তারা কোন ভুল থেকে মুক্ত থাকতে পারে এবং জয়ের পথ অনুসরণ করতে পারে।