বোলিং-অলরাউন্ডারকে ওপেনার হিসেবে নামিয়েই বাংলাদেশের বাজিমাত, জেনে নিন আসল প্ল্যান

গত ৩ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট করতে নেমে নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

Bangladesh's Strategic Success

গত ৩ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট করতে নেমে নিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বোলিং অলরাউন্ডার মেহেদি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় আট নম্বরে ব্যাট করেছেন। তবে এই ম্যাচে পদোন্নতি হয়েছিল তার।

২০২৩ এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হারের পর একাদশে তিনটি পরিবর্তন এনেছিল বাংলাদেশ। গত ম্যাচে অভিষেক হওয়া বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ হাসানের জায়গায় দলে নেওয়া হয় শামীম হোসেনকে। তানজিদের জায়গায় শীর্ষে নিয়ে আসা হয় অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে। তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় কেটেছে লোয়ার মিডল অর্ডারে। তার খেলা ৫১ টি ইনিংসের মধ্যে তিনি সাতে ১১ বার, আটে ৩১ বার এবং নয় নম্বরে সাতবার ব্যাট করেছেন। এর আগে মাত্র দু’বার তিনি শীর্ষ ছয়ে ব্যাট করেছিলেন।

তাহলে বিশ্বকাপের মাত্র এক মাস বাকি থাকতেই টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ কেন এই আমূল পরিবর্তনের পথ বেছে নিল? মেহেদী মূলত অফ স্পিনার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু তার সব সময়ই ব্যাটিং সম্ভাবনা ছিল। ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ৬০.৫০ গড়ে পাঁচ ইনিংসে ২৪২ রান করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি।

লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে এশিয়া কাপে ওপরের দিকে ব্যাট করার সুযোগ চলে এসেছিল মেহেদী হাসান মিরাজের সমানে। পিঠের চোটের কারণে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যান তামিম ইকবাল, আর ফ্লু থেকে সেরে উঠতে না পারায় শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়াতে হয় লিটনকে। মোহাম্মদ নাঈম ও তানজিদকে মূল স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে এবং লিটনের পরিবর্তে এনামুল হককে দলে নেওয়া হয়েছে। এশিয়া কাপে ওপেনিংয়ের জন্য বাংলাদেশের হাতে রয়েছে তিনটি অপশন।

নাঈম ও তানজিদ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুরু করলেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। গত বছর ২০২২ টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের ত্রিদেশীয় সিরিজে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন মেহেদী। তার গড় ২২, স্ট্রাইক রেট ১১৯। তবে ভারতের বিপক্ষে ৮ নম্বর পজিশনে নেমে তার ওয়ানডে সেঞ্চুরি এবং ওপেনার হিসেবে তার সম্ভাবনা বদলে দিয়েছিল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রণনীতি।

রবিবারের ইনিংসটি (১১৯ বলে ১১২ রান, পরে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন) ছিল মেহেদীর ব্যাটিং দক্ষতার প্রমাণ। এটি এশিয়া কাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের ওপেনার হিসেবে তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি এবং ২০২০ সালের পর ওয়ানডেতে তামিম ও লিটন ছাড়া বাংলাদেশের কোনো ওপেনারের প্রথম সেঞ্চুরি।

এই ইনিংসটি বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টকে বিশ্বকাপে খাঁটি ব্যাটসম্যানের পরিবর্তে অতিরিক্ত স্পিন-বোলিং অলরাউন্ডার বেছে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।