অবসরের আগে অবশেষে সাকিবের এই ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে বাংলাদেশ

সদ্য ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হেরেছে তাঁর দেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের কোনোটিতেই ব্যাটিং এবং বোলিং দুই বিভাগেই অভিজ্ঞতার ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এছাড়াও…

Bangladesh Cricket Board Agrees to Protect Shakib Al Hasan in His Final Test Match

সদ্য ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হেরেছে তাঁর দেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের কোনোটিতেই ব্যাটিং এবং বোলিং দুই বিভাগেই অভিজ্ঞতার ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এছাড়াও কানপুরে দ্বিতীয় টেস্ট চলাকালীন অবসরের ঘোষণা করেন সাকিব আল হাসান। মূলত টি টোয়েন্টি ফর্ম্যাট থেকে অবসর নিলেও দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলে তবেই লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চান বলেই জানিয়েছিলেন এই অভিজ্ঞ বাংলাদেশি অলরাউন্ডার।

যাঁর কারণে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য বিসিবির কাছে নিরাপত্তারও দাবি করেন এই বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। প্রথমদিকে সাকিবের এই প্রস্তাবে রাজি না হলেও অবশেষে গতকাল রাজি হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

   

ভারতের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মুখোমুখি হবেন টাইগাররা। এই মহুর্তে ভারতের বিরুদ্ধে টি টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। এই সিরিজ শেষ হলেই আগামী ২১ শে অক্টোবর থেকে ফের সাদা জার্সি গায়ে চড়াবেন সাকিব-লিটন-শান্তরা।

তাই কানপুরের টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজে মিরপুর টেস্ট দিয়ে বিদায় নিতে চান টেস্ট ক্রিকেট থেকে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর দেশে এসে খেলার এবং খেলা শেষে প্রয়োজনে নির্বিঘ্নে দেশ ছাড়ার ব্যবস্থা করবে বিসিবি।

তবে সাকিব তাঁর বক্তব্য জানালেও এই বিষয়ে প্রথমে সেভাবে আগ্রহ দেখায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিসিবি সভাপতি ফারুক জানিয়েছিলেন যে সাকিবের নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কিছু করার নেই। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যাপারে তারকা অলরাউন্ডারকে কোনো সাহায্য করতে পারবেন না তাঁরা।

তবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট নেতিবাচক ধারণা পোষণ করলেও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনিও চান সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে খেলে অবসর নিন। এ ব্যাপারে তিনি নিজে ফারুকের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করবেন বলেও জানান গণমাধ্যমে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে ঘরের মাঠে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলা নিয়ে ফারুক আজ বলেছেন, ‘সাকিবের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। সাকিবের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ থেকে অবসর নেওয়ার।’ তবে সাকিবের প্রত্যাশাপূরণ করাটা যে খুব সহজ একটা বিষয় নয় ; সেব্যাপারেও নিজের মতামত রাখেন তিনি। এদিন বিষয়টিকে আরও বিস্তারিত জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার হাতে ক্ষমতা খুব কম। সাকিবের ব্যাপারটা পুরোপুরি সরকারি পর্যায় থেকে আসতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে, উপদেষ্টা আছেন, প্রধান উপদেষ্টা আছেন। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে সরকার পরিবর্তনের পর ঢাকার আদাবর থানায় হওয়া এক হত্যা মামলায় আসামী করা হয়েছে মাগুরা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিবকে। এছাড়াও বর্তমানে অর্থ কেলেঙ্কারির মধ্যেও নাম জড়ায় তাঁর। তবে বিভিন্ন অভিযোগ উঠলেও বর্তমানে সেগুলির সাপেক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও তিনি যে হোটেলের চেন সিরিজটি বাংলাদেশে উদ্বোধন করেছিলেন সেটিও দুর্নীতির কারণে সরকারের নজরবন্দি হয়ে রয়েছে। তাই নিরাপত্তা দাবি করেছিলেন সাকিব। তবে সাকিবের প্রস্তাবে রাজি হলেও আগামী মিরপুর টেস্টে এই কিংবদন্তিকে কতটা নিরাপত্তা দিতে পারে বাংলাদেশ বোর্ড সেটাই এখন আলোচ্য বিষয়।