গত মরসুমের মাঝামাঝি সময় হুয়ান ফেরেন্দোকে বিদায় জানিয়েছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG)। তাঁর পরিবর্তে দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় আন্তোনিও লোপেজের (Antonio Lopez Habas)হাতে। যা অনেকটাই চিন্তামুক্ত করেছিল সমর্থকদের। বলাবাহুল্য, এই স্প্যানিশ কোচের তত্ত্বাবধানেই সেবার খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। একটা সময় টানা তিনটি ম্যাচ হেরে পয়েন্ট টেবিলের অনেকটাই নিচে নেমে গিয়েছিল কলকাতা ময়দানের এই প্রধান। সেখান থেকেই দলকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিলেন হাবাস ।
যারফলে সেই মরসুমে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও জয় নিশ্চিত করেছিল মোহনবাগান। এমনকি দুইটি লেগেই তাঁরা আটকে দিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে। যা নিঃসন্দেহে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল দলের ফুটবলারদের। সেবার এগিয়ে থেকেও আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব না হলেও অনায়াসেই দল জিতে নেয় টুর্নামেন্টের লিগ শিল্ড। যারফলে এবার এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান দল। সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আইএসএলের অন্যতম সফল কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের।
শোনা গিয়েছিল নয়া ফুটবল সিজনে ও নাকি তাঁর সঙ্গে চুক্তি বাড়াবে ম্যানেজমেন্ট। সময়ের সাথে সাথে ক্রমশ জোড়ালো হয়ে উঠেছিল সেই সম্ভাবনা। কিন্তু সেটা পরিণতি পায়নি। এই নয়া সিজন শুরু হওয়ার আগেই দলের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় এটিকে দলের আইএসএল জয়ী কোচ জোসে মোলিনার হাতে। পূর্বে স্পেনের জাতীয় দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন এই হাইপ্রোফাইল কোচ। এবার তাঁকেই দেওয়া হয়েছে দলের দায়িত্ব। যা কিছুটা হলেও হতাশ করেছিল আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে।
পরবর্তীতে বারাণসীর ইন্টার কাশী দলের দায়িত্ব নেন আইএসএলের এই সফলতম কোচ। নয়া সিজনে দলকে আইলিগ চ্যাম্পিয়ন করাই অন্যতম লক্ষ্য হাবাসের। সেজন্য তাঁর পছন্দকে গুরুত্ব দিয়েই একের পর এক দাপুটে ফুটবলারদের দলে টেনেছে ম্যানেজমেন্ট। সেইমতো দলে আনা হয় বাগানের প্রাক্তন তারকা জনি কাউকোকে। উল্লেখ্য, গত সিজনে বাগানের সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল জনি কাউকোর। কিন্তু নতুন সিজনে আর তাঁকে দলে রাখেনি ম্যানেজমেন্ট। সেটা যথেষ্ট হতাশ করেছিল সকলকে। এবার ইন্টার কাশীর জার্সিতে নিজের সেরাটা দিতে চাইবেন ফিনল্যান্ডের এই তারকা ফুটবলার।
অপরদিকে নতুন সিজনে নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন হাবাস। মোহনবাগান এখন অতীত। তবুও কিছুটা হলেও যেন অভিমান রয়ে গিয়েছে কলকাতার এই প্রধানকে নিয়ে। ইন্টার কাশীর মিডিয়া ডেতে মোহনবাগান ছাড়ার প্রসঙ্গে হাবাস বলেন, ” আইএসএলের ফাইনালের পরেই আমাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল নয়া চুক্তি সই করার জন্য। কিন্তু তারপরে প্রায় একমাস আমার সাথে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।” তাঁর এই মন্তব্য কিছুটা হলেও চমকে দিয়েছে বাগান সমর্থকদের। একটা সময় সবুজ-মেরুনের জন্য নিজের সবটা উজাড় করে দিয়েছিলেন হাবাস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে ফর্মাল বিদায় জানিয়ে আরেক স্প্যানিশ কোচের হাতে তুলে দেওয়া হয় দলের দায়িত্ব। স্বাভাবিকভাবেই যা হতাশ করতে পারে সকলকে।