সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৫ জুনিয়র লিগের (AIFF Junior League) কোয়ার্টার ফাইনালে বুধবার দুটি বড় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ও বিকেলের দুই ভিন্নধর্মী ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি ও ইস্টবেঙ্গল এফসি নিশ্চিত করল সেমিফাইনালের টিকিট।
সকালের ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে ১০-১ গোলে বিধ্বস্ত করে একপ্রকার ‘স্টেটমেন্ট পারফরম্যান্স’ উপহার দিল তারা। শুরু থেকেই ম্যাচের রাশ নিজের দখলে নিয়ে নেয় বেঙ্গালুরু। প্রথম মিনিটেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হৃষীকেশ চরন। এরপর একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙে ফেলে বেঙ্গালুরু। ম্যাচের প্রথমার্ধের আগেই স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৭-০।
হৃষীকেশ চরন একক দক্ষতায় চারটি গোল (১’, ৪’, ৩৭’, ৪৮’) করে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নজর কাড়েন। বেঙ্গালুরুর বাকি গোলগুলো করেন পৃথ্বীরাজ, শ্রেয়স, অর্ণব, সাহিল ও আদিত্য। মোহনবাগানের হয়ে সান্ত্বনার একটি গোল আসে দ্বিতীয়ার্ধে, তবে এত বড় ব্যবধানে হার দলের জন্য কঠিন ধাক্কা।
অপরদিকে, বিকেলের ম্যাচে চরম উত্তেজনার সাক্ষী থাকল ফুটবলপ্রেমীরা। ইস্টবেঙ্গল বনাম মুম্বই সিটি এফসির ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। শুরুতেই মুম্বই এগিয়ে যায়, পঞ্চম মিনিটে গোল করেন বিরাজ অরোরা। কিন্তু ২৪ মিনিটে মুম্বইয়ের গোলরক্ষকের ভুলে গোলের সুযোগ পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল, গোলটি করেন আভারা দে। তার ঠিক দুই মিনিট পরেই দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন শিশির সরকার।
ম্যাচে সমতা ফেরাতে অবশ্য বেশিক্ষণ লাগেনি মুম্বইয়ের। ৩৪ মিনিটে বীর চোথানির গোলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-২। এরপর দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি শুটআউটে ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা একের পর এক সফল শট নিয়ে ৫-৪ ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয়। দলের গোলরক্ষক অর্জুন ঘোষের দুটি দুর্দান্ত সেভ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই জয়ের ফলে ইস্ট বেঙ্গল হয়ে উঠলো সেমিফাইনালে পৌঁছন একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের দল। তাদের এই সাফল্যে রাজ্যের ক্রীড়ামহলে খুশির হাওয়া বইছে।
এখনো দুটি কোয়ার্টার ফাইনাল বাকি রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রুপ ‘সি’ চ্যাম্পিয়ন মিনার্ভা একাডেমি এফসি মুখোমুখি হবে গ্রুপ ‘ডি’-এর রানারআপ কিকস্টার্ট এফসির। দুপুরে পাঞ্জাব এফসি খেলবে পিএফসি কেরালার বিরুদ্ধে। এই দুটি ম্যাচের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই নির্ধারিত হবে সেমিফাইনালের বাকি দুই দল।
AIFF জুনিয়র লিগের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ঘিরে এখন তৈরি হচ্ছে চূড়ান্ত উত্তেজনা। যুব ফুটবলারদের এই প্রতিযোগিতা আগামী দিনে ভারতের সিনিয়র ফুটবলকে নতুন প্রতিভা উপহার দিতে পারে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।