কোনেরু হাম্পিকে হারিয়ে বিশ্বসেরার খেতাব ১৯ বছরের দিব্যার

ভারতীয় দাবায় রচিত হল ইতিহাস ! (Divya)১৯ বছর বয়সী দিব্যা দেশমুখ জর্জিয়ার বাটুমিতে অনুষ্ঠিত এফআইডিই (FIDE) মহিলা দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে স্বদেশী গ্র্যান্ডমাস্টার কোনেরু হাম্পিকে হারিয়ে…

Divya chess championship

ভারতীয় দাবায় রচিত হল ইতিহাস ! (Divya)১৯ বছর বয়সী দিব্যা দেশমুখ জর্জিয়ার বাটুমিতে অনুষ্ঠিত এফআইডিই (FIDE) মহিলা দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে স্বদেশী গ্র্যান্ডমাস্টার কোনেরু হাম্পিকে হারিয়ে বিশ্বসেরার খেতাব জিতেছেন। এই জয়ের মাধ্যমে দিব্যা ভারতের প্রথম মহিলা দাবা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম লিখিয়েছেন, যা ভারতীয় ক্রীড়া ইতিহাসে একটি মাইলফলক।

তাঁর এই অভূতপূর্ব সাফল্য দেশের দাবা জগতে নতুন প্রজন্মের উত্থানের সাক্ষ্য বহন করছে।দিব্যা দেশমুখ, যিনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারতের ৮৮তম গ্র্যান্ডমাস্টার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন, ফাইনালে ৩৮ বছর বয়সী কোনেরু হাম্পির বিরুদ্ধে দুর্দান্ত লড়াই করে জয় ছিনিয়ে নেন। ফাইনাল ম্যাচে দুটি গেম ড্র হওয়ার পর র‌্যাপিড টাইব্রেকারে দিব্যা ১.৫-০.৫ ব্যবধানে হাম্পিকে পরাজিত করেন।

   

এর আগে সেমিফাইনালে তিনি চিনের গ্র্যান্ডমাস্টার টান ঝোনগেই-কে ১.৫-০.৫ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিলেন। হাম্পিও সেমিফাইনালে চিনের লেই টিংজেই-কে পরাজিত করে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলেন, যা ভারতীয় দাবার শক্তি প্রদর্শন করেছিল।

নাগপুরে জন্মগ্রহণকারী দিব্যা দেশমুখ একটি মারাঠি পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। তাঁর বাবা-মা, জিতেন্দ্র ও নম্রতা দেশমুখ, দুজনেই চিকিৎসক। দিব্যা ভবানস ভগবানদাস পুরোহিত বিদ্যা মন্দির থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। ২০২১ সালে তিনি ভারতের ২১তম মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার হন এবং ২০২২ সালে মহিলা ভারতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন।

এছাড়াও, তিনি ২০২০ সালের এফআইডিই অনলাইন দাবা অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদক বিজয়ী দলের সদস্য ছিলেন এবং ২০২২ সালের দাবা অলিম্পিয়াডে ব্যক্তিগত ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন। ২০২৩ সালে তিনি আলমাটিতে এশিয়ান মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ এবং টাটা স্টিল ইন্ডিয়ার র‌্যাপিড বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ২০২৪ সালে তিনি শারজা চ্যালেঞ্জার্স এবং এফআইডিই অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব বালিকা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ইতিহাস গড়েন।

Advertisements

দিব্যার এই জয় শুধু তাঁর ব্যক্তিগত কৃতিত্বই নয়, বরং ভারতীয় মহিলা দাবাড়ুদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রমাণ। এই টুর্নামেন্টে ভারতের চারজন মহিলা দাবাড়ু—দিব্যা দেশমুখ, কোনেরু হাম্পি, হরিকা দ্রোনাভল্লি এবং রমেশবাবু বৈশালী—কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছিলেন, যা ভারতের দাবায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। দিব্যা কোয়ার্টার ফাইনালে হরিকা দ্রোনাভল্লিকে পরাজিত করে সেমিফাইনালে উঠেছিলেন, যেখানে তিনি চিনের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারান।

কোনেরু হাম্পি, যিনি ২০১৯ সালে ওয়ার্ল্ড র‌্যাপিড দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে ইতিহাস গড়েছিলেন, এই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। তবে, তাঁর ছাত্রী দিব্যার কাছে ফাইনালে পরাজয় তাঁর ক্যারিয়ারে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। হাম্পি বলেন, “দিব্যার জয় ভারতীয় দাবার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করেছে। তাঁর এই কৃতিত্ব আমাদের সকলের জন্য গর্বের।”

জম্মুতে পুলিশের গুলিতে নিহত পারভেজের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন ওমর আবদুল্লাহ

সোশাল মিডিয়ায় দিব্যার এই জয় ঘিরে উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। এক্স-এ অনেকে লিখেছেন, “দিব্যা দেশমুখ ভারতের গর্ব! ১৯ বছর বয়সে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া অবিশ্বাস্য।” এই জয় ২০২৬ সালের ক্যান্ডিডেটস টুর্নামেন্টে দিব্যার স্থান নিশ্চিত করেছে, যা তাঁর ক্যারিয়ারে আরেকটি বড় পদক্ষেপ।দিব্যার এই কৃতিত্ব ভারতীয় দাবায় নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে। তাঁর জয় ভারতীয় মহিলা দাবাড়ুদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা এবং বিশ্ব মঞ্চে ভারতের শক্তির প্রমাণ।