Nasa: মহাকাশের প্রাচীনতম অন্ধকার গুহাপথ পেল নাসা, সেখানে আছে ভয়াল রহস্য

মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পাওয়া গেছে। নতুন আবিষ্কৃত ব্ল্যাক হোলের বয়স আনুমানিক ১ হাজার ৩২০ কোটি বছর। এখন থেকে এক হাজার ৩৭০ কোটি…

মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পাওয়া গেছে। নতুন আবিষ্কৃত ব্ল্যাক হোলের বয়স আনুমানিক ১ হাজার ৩২০ কোটি বছর। এখন থেকে এক হাজার ৩৭০ কোটি বছর আগে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়ে থাকলে সদ্য আবিষ্কৃত এই ব্ল্যাক হোলের জন্ম হয় ৪৭ বছর পরে। অর্থাৎ মহাবিশ্বের সৃষ্টির সূচনা লগ্নে গঠিত হয়েছিল ব্ল্যাক হোল। UHZ1 নামের এই ব্ল্যাক হোলের আবিষ্কার এই ধারণাকে আরও স্পষ্ট করেছেন।

নাসা বলছে এর আগে এত পুরনো ব্ল্যাক হোল কখনই দেখা যায়নি। এটি মানুষের অনুমানের তুলনায় অনেক বেশি বড়। আমাদের ছায়া পথ মিল্কি ওয়ের কেন্দ্রে যে স্যাজিটেরিয়াস নামের যে ব্ল্যাক হোলটি রয়েছে তার চেয়েও সদ্য আবিষ্কৃত এই ব্ল্যাক হোলটি প্রায় ১০ গুণ বেশি বড়। যার ব্যাস ১৪.৬ মিলিয়ন মাইল। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস এই ব্ল্যাক হোলটি ঘন গ্যাসের মেঘ থেকে তৈরি হয়েছে, যা পরে আবার পুরো একটি ছায়াপথ ও বেশ কিছু তারাকেই গিলে ফেলেছে। পরে আরও অন্তত দুটি ছায়াপথ পরস্পরের সঙ্গে মিশে যাওয়ার পর ব্ল্যাক হোলটি সম্মিলিত ছায়া পথকেও গিলে ফেলেছে।

   

ব্ল্যাক হোল নিয়ে বিগত এক শতক ধরে চলছে নানারকম গবেষণা, বেরিয়েছে নতুন নতুন তথ্য। মিলেছে অদ্ভুত সব প্রশ্নের উত্তর। নানারকম প্রশ্নের মধ্যে বহু আলোচিত একটি প্রশ্ন হল ব্ল্যাক হোলে পড়ে গেলে তার পরিণতি কী হয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা ব্ল্যাক হোলে পড়ে গেলে মানুষ নুডলস বা স্প্যাগেটি অথবা টিউব থেকে বের হওয়া টুথপ্যাস্টের মতন হয়ে যাবে। বিষয়টি বোঝানোর জন্য আরও কিছু বিষয়ে ব্যখ্যা করা প্রয়োজন। কোন বস্তু ব্ল্যাক হোলে একবার পড়ে গেলে যেহেতু ফিরে আসেনা তাই ভিতরের অবস্থা সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়না। তবে ব্ল্যাক হোলের অভ্যন্তরীন অবস্থা আঁচ করা যায় বাইরের পারিবার্শিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে।
পৃথিবীর নিকটবর্তী ব্ল্যাক হোলটির দূরত্ব ১৫ হাজার ৬৬ আলোকবর্ষ। এই ব্ল্যাক হোলের চার দিকের ইভেন্ট হরাইজন পার হয়ে এলে একজন নভচারী প্রবল মহাকর্ষীয় টান অনুভব করবে। নভচারী অথবা কোন বস্তুর শরীরের প্রতিটি অংশ ব্ল্যাক হোলের কেন্দ্র থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করেনা, মহাকর্ষবলয় জায়গার সমান অনুভূত হয়না। ফলে হোলটির কেন্দ্র থেকে যে অংশটি নিকটবর্তী সে অংশটি অধিক প্রসারিত হয়। অন্যগুলো সমান হারে প্রসারিত হতে পারেনা। একেকটা অংশ একেক রকম আকার ধারণ করে।

মজার ব্যপার হল এই ধরণের মহাজাগতিক ঘটনা পৃথিবীতেও ঘটে। কিন্তু পৃথিবীর মহাকর্ষবল তলনামূলকভাবে দুর্বল এবং আমাদের জন্য যথেষ্ট শোভনীয় তা আমরা টের পাইনা। কিন্তু ব্ল্যাক হোলের ক্ষেত্রে মহাকর্ষবল অত্যাধিক শক্তিশালী যা কোন বস্তুকে রীতিমত স্প্যাগেটির মতন বানিয়ে ফেলে। এই পর্যায়টিকে বলা হয় স্প্যাগেটিফিকেশন। এই স্প্যাগেটিফিকেশন কখন শুরু হতে পারে তা নির্ভর করে ব্ল্যাক হোলের আকারের উপর। ছোট আকারের একটি হোলের ক্ষেত্রে ইভেন্ট হরাইজন পেরোবার আগেই এই প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। আবার সুপার জায়েন্ট আকারের ব্ল্যাক হোলের বেলায় ঘটনার দ্বিগন্ত পেরিয়ে গেলেও বেশ কিছুক্ষণ বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে। নভচারী যখন পা সামনের দিকে বাড়িয়ে হোল বরাবর ঝাঁপ দেন তাহলে তার পা শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় দ্রুত গতিতে প্রসারিত হতে থাকবে। এক সময় শরীর ভেঙে চুরচুর হয়ে লম্বা নুডলস বা টুথপেস্টের মত আকার ধারণ করবে।