NASA: গল্প নয় সত্যি সোনার অরণ্য আছে এক দেশে! নাসার উপগ্রহ দিল চমকপ্রদ তথ্য

রূপকথার গল্প হোক কিংবা পৌরাণিক কাহিনী সোনার শহরের কথা কম বেশি সব জায়গায় শোনা যায়। যে শহরে নাকি সোনার অভাব নেই। সেসব নাকি লোক কথা…

রূপকথার গল্প হোক কিংবা পৌরাণিক কাহিনী সোনার শহরের কথা কম বেশি সব জায়গায় শোনা যায়। যে শহরে নাকি সোনার অভাব নেই। সেসব নাকি লোক কথা তবে বাস্তবে কি এমন কোনও শহর আছে? শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও বাস্তবে এই পৃথিবীতেই রয়েছে এমন একটি স্থান। তবে তা শহর নয় বরং জঙ্গল।

বিশাল অরণ্যে ছড়িয়ে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনা। সেই সোনার ভান্ডার আবার দেখা যায় মহাকাশ থেকেও। সোনার এই জঙ্গল রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে। মাদ্রে দে দিয়স নামে সোনার একটি বিশাল খনি রয়েছে লাতিন আমেরিকার বিশাল এই দেশটিতে।

মহাকাশ সংস্থা নাশা মহাকাশ থেকে সেই ছবি প্রকাশ করেছে। মহাকাশ থেকে দেখলে মনে হয় ভূপৃষ্ঠের সেই অংশটা সোনা দিয়ে মোরা। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনা উৎপাদনকারী দেশগুলির মধ্যে এটি ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। তবে পেরুর এই সোনা খনির কারণে অ্যামাজনের বিপুল জঙ্গল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি পরিবেশ বিজ্ঞানীদের।

এখানে সোনা নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহার করা হয় পারদ। পরিবেশবীদদের দাবি এত পরিমান পারদ ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। তবে এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সোনার খনিতে কাজ করে এখানকার বহু পরিবার তাদের জীবন নির্বাহ করে। পেরুর সোনার খনি সম্পর্কে অনেক তথ্যই পাওয়া যায় কিন্তু উপর থেকে আসলে এই খনি দেখতে কেমন তা নিয়ে কোনও তথ্যই ছিল না।

আর সোনার ভান্ডারের ছবি সম্প্রতি মহাকাশ থেকে তোলা হয়েছে। পুরো খনির দৃশ্য এর আগে প্রকাশ্যে আসেনি। মহাকাশ থেকে তোলা ছবিতে বোঝা যায় সেই বিশাল খনিটি কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সোনালী রং ধরা পড়েছে নাসার সেই ছবিটিতে। খনিটি বিশাল এলাকা জুড়ে থাকায় সূর্যের আলো পড়ে পুরো এলাকাটি যেন ঝলমল করে।

তবে অতি সুন্দর ও নজরকাড়া মনে হলেও এই সোনার ভান্ডারের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাজনের বিস্তীর্ণ জঙ্গল। আর মূলত এই নিয়েই নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। ১৫ কিলোমিটারের জুড়ে এই সোনার খনি। যেখানে অবৈধভাবে কাজ করে এলাকাবাসী বহু মানুষ। যার জেরে প্রতিনিয়ত বিপদ বাড়ছে এই এলাকায়।

আমাজনের মধ্যে থাকা এই খনি নদী ও হ্রদ দিয়ে ঘেরা। নাসার প্রকাশ করা ছবিতে জঙ্গলের মধ্যে বহু জলভরা বড় বড় গর্ত দেখা যায়। স্থানীয়রা অবৈধভাবে সোনা খুঁজতে গিয়ে এই গর্তগুলো বানিয়েছে। ভিতরে জানান এই সোনা খননে মিথাইল মার্কাইড নামে এক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। যে রাসায়নিক এখানকার নদী ও জলাশয় গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে।

এই সোনা খনন অঞ্চলের কিছু অংশ তেম্বপাতা উদ্যানের মধ্যে পড়ে। তবে ওই জায়গার মধ্যে থাকা সোনার ভান্ডারটি সুরক্ষিত। নাসার প্রকাশিত ছবির নিচের অংশে রয়েছে নুয়েবা এরেকিয়া। এটি সাউদার্ন ইন্টানিক ওসেনিক হাইওয়ের পাশে রয়েছে। ২০১১ সালে এই হাইওয়ে বানানো হয়েছিল। এটি একমাত্র রাস্তা যেটি পেরুকে ব্রাজিলের সঙ্গে সড়ক পথে সংযুক্ত করেছে। এই রাস্তাটির মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য বানানো হয়েছিল কিন্তু যতদিন গড়াচ্ছে তত এটি অবৈধ অ্যামাজনের গাছ পাচার ও সোনা খনন কারবারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।।