Asteroid Bennu: ধেয়ে আসছে জলে ভরা গ্রহাণু বেনু, শক্তিতে হিরোশিমার পরমাণু বোমা যেন শিশু

দৈত্যাকার এক উল্কাপিণ্ডের তাণ্ডবে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছিল ডাইনোসরের প্রজাতি। এবার একই আতঙ্ক নিয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বেনু নামে ৭ হাজার ৫০০ কেজি ওজনের…

দৈত্যাকার এক উল্কাপিণ্ডের তাণ্ডবে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছিল ডাইনোসরের প্রজাতি। এবার একই আতঙ্ক নিয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বেনু নামে ৭ হাজার ৫০০ কেজি ওজনের একটি গ্রহাণু। প্রতি ৬ বছর পর পর পৃথিবীর কক্ষপথের কাছ দিয়ে ঘেঁসে বেরিয়ে যায় বেনু। প্রতিবারই একটু একটু করে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে গ্রহাণুটি। নাসার বিজ্ঞানীরা জানান প্রতি সেকেন্ডে ৭ মাইল বেগে আসছে এটি। আর এই ভাবে পৃথিবীর কাছে আসতে আসতে ২১৯২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে এটি।

তবে এমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ২৭০০ ভাগের মধ্যে মাত্র এক ভাগ সম্ভাবনা রয়েছে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার। কিন্তু এক ভাগ আশঙ্কাও যদি সত্যি হয় তাহলে আমাদের এ গ্রহের ধ্বংস প্রায় অনিবার্য। ৭,৫০০ কেজি ওজনের এই গ্রহাণু প্রথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হলে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া হবে প্রায় ১২০০ মেগাটনের কাছাকাছি, যা হিরোশিমার ‘দ্য লিটল বয়’ বোমের থেকেও কয়েকশো গুণ বেশি ক্ষতি করতে সম্ভব। আছড়ে পড়ার পর গ্রহাণুটি থেকে এক হাজার ৮০০ মেগাটন শক্তি নিষ্কৃত হবে যা পারমাণবিক অস্ত্রের চেয়েও কমপক্ষে ২৪ গুণ শক্তিশালী। এমনটা হলে পৃথিবীর যেকোন স্থানে অন্তত ১.৫ কিলোমিটার গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা গত সম্প্রতি ৪.৫ বিলিয়ন বছরের পুরনো একটি গ্রহাণু বেনুর (Asteroid Bennu) সন্ধান প্রকাশ করেছে, যার নমুনাগুলি ওএসআইআরআইএস-রেক্স মিশনের (OSIRIS-REx mission) মাধ্যমে পৃথিবীতে আনা হয়েছিল। গ্রহাণুর নমুনায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কার্বনই নয়, সেখানে প্রচুর পরিমাণে জলও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে এই মহাকাশ সংস্থা। প্রাথমিক অনুসন্ধানের মাধ্যমে, নাসা পরামর্শ দিয়েছে যে পৃথিবীতে জীবনের রহস্য এই গ্রহাণুর পাথরে লুকিয়ে থাকতে পারে। এই বিষয়ে নাসা একটি ট্যুইটও করে।

NASA প্রশাসক বিল নেলসন বলেছেন, “OSIRIS-REx নমুনা পৃথিবীতে পাওয়া সবচেয়ে বড় কার্বন-সমৃদ্ধ গ্রহাণু নমুনা এবং বিজ্ঞানীদের আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের নিজস্ব গ্রহে প্রাণের উৎপত্তি অনুসন্ধান করতে সাহায্য করবে।” মহাকাশ অভিযানের লক্ষ্য ছিল ৬০ গ্রাম গ্রহাণুর নমুনা ফিরিয়ে আনা। যাইহোক, সংগৃহীত নমুনাগুলির ওজন ২৫০ গ্রামের বেশি এবং সেগুলি আদি অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই নমুনাগুলি আমাদের সৌরজগতের উৎস্য সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মূল অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মহাকাশযান, যা “অরিজিনস, স্পেকট্রাল ইন্টারপ্রিটেশন, রিসোর্স আইডেন্টিফিকেশন, সিকিউরিটি-রেগোলিথ এক্সপ্লোরার” বোঝায়, ২৪ সেপ্টেম্বর একটি গ্রহাণু থেকে নমুনা সংগ্রহ এবং ফেরত দেওয়ার প্রথম মার্কিন মিশন হিসাবে ইতিহাস তৈরি করেছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চালু করা মহাকাশযানটি ২০১৮ সালে বেনুতে পৌঁছেছিল এবং ২০২০ সালে প্রায় ৮.৮ আউন্স (২৫০ গ্রাম) ওজনের একটি নমুনা সংগ্রহ করেছিল।