Durga Puja: ‘বদর বদর’ বলে ইছামতিতে দুই বাংলার দেবী বিসর্জন, পাহারায় সীমান্তরক্ষীরা

একূল বাংলা বলে আবার এসো মা। ওকুল বাংলাদেশ বলে আবার এসো মা। মাঝে ইছামতি তোলপাড় করে তলিয়ে যায় দেবী মূর্তি। উমা যান শ্বশুরবাড়ি-হিমালয়ে। দুই বাংলার…

একূল বাংলা বলে আবার এসো মা। ওকুল বাংলাদেশ বলে আবার এসো মা। মাঝে ইছামতি তোলপাড় করে তলিয়ে যায় দেবী মূর্তি। উমা যান শ্বশুরবাড়ি-হিমালয়ে। দুই বাংলার মাঝে বহমান ইছামতির মাঝিরা তাদের জলীয় ভাষায় বলেন ‘বদর বদর’। আরবি ভাষার এই শব্দের মানে জলযাত্রা শুভ হোক।

উমার বিদায়বেলায় ইছামতীর পাড়ে এপার-ওপার দুই বাংলার মিলন। উত্তর ২৪ পরগনার টাকিতে প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে উৎসবের মেজাজ।এপারে বসিরহাটের টাকি, ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা। মাঝখানে বয়ে চলেছে ইছামতী। দশমীর সকালে ইছামতীতে শুরু হয় দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন। টাকি রাজবাড়ি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়।

কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে চলছে বিজয়া দশমী। নদীতে নৌকা চললেও সেটা ছিল নিজেদের সীমানায়। বাংলাদেশ ও ভারতের কোনো নৌকা নিজেদের জল সীমারেখা অতিক্রম করতে পারেনি। আর এজন্য কঠোর নজরদারিতে ছিল বিজিবি ও বিএসএফ।

জানা যায়, দেশ বিভাগের অনেক আগে থেকেই বিজয়া দশমীতে দুই বাংলার মানুষ আয়োজন করে আসছিল এ মিলনমেলার। এ ছাড়া দেশ বিভাগের পরেও বিসর্জনের দিন ইছামতী নদীর এ জলসীমা রেখা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বিভিন্ন সময়ে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি মিলনমেলা। প্রতিবছর ইছামতী নদীতে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ হাজির হতো প্রাণের দুর্গোৎসবের প্রতিমা বিসর্জনে। সকল ভেদাভেদ ভুলে আনন্দ উপভোগ করে সবাই একত্রে।

তবে বেশ কিছু বছর দিয়ে মিলনমেলায় ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যার কারণে এক দেশের মানুষ অন্য দেশের জলসীমা অতিক্রম করতে পারেনি। ইছামতী নদীর মাঝ বরাবর ছিল বিজিবি ও বিএসএফের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নজরদারি। এ বছর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনকে অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবির সহায়তা নিতে হয়েছে।

উল্লেখ্য, এক সময় দেবহাটা উপজেলার টাউনশ্রীপুর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় দুর্গা পূজার বিজয়া দশমীর দিনে দুই দেশের মানুষের মিলনমেলা বসত। তখন অবাধে এক দেশের মানুষ অন্য দেশে যেতে পারতো। কিন্তু বছর কয়েক আগে এক নৌকা দুর্ঘটনায় ভারতের কলকাতার যাদবপুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব ক্যামিকেল বায়োলজির জুনিয়র রিসার্স ফেলো সুজয় দাশ  মৃত্যুবরণ করেন। এ নিয়ে সেসময় উভয় দেশের সংবাদ মাধ্যমে মিলনমেলা সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক কথা উঠে আসে। পরে সক দিক বিশ্লেষণ করে গত কয়েক বছর বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষ থেকে সকল ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অপরাধ নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।