বিশেষ প্রতিবেদন: “ধর্ষণ” বর্তমান সমাজের সবথেকে নিকৃষ্টতম অন্যায়। প্রত্যেকদিন দেশে-বিদেশে কত কত নারীদের ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে, তা ধারণার বাইরে। কিছু কিছু ঘটনা আমাদের নজরের সামনে আসে, কিছু কিছু ধামাচাপা পড়ে যায়। নারী নির্যাতনের এই গূঢ় বিষয়কেই দুর্গোৎসবের অঙ্গ করেছে বালুরঘাটের স্বর্গধাম ক্লাব।
৭৫ তম বর্ষে এই নিবেদন সমস্ত নারী জাতির উপর উৎসর্গ করা হয়েছে। মা দুর্গা কীভাবে এক নির্যাতককে শাস্তি দিচ্ছেন তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিমা সজ্জার মাধ্যমে। প্রতিমা শিল্পী, শিল্পশ্রী যামিনী পালের পৌত্র শিল্পী অসীম পাল। প্রতিমা পরিকল্পনায় সৌমাভ পাল। ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “নারীর এক রূপ যদি “সৃষ্টি” হয় তবে তারই অন্যরূপ “বিনাশের ইতি”। আমাদের মনে হয়েছে বর্তমান সমাজে দাঁড়িয়ে ধর্ষকের থেকে বড় অসুর আর কেউ নেই। আমাদের মতে অসুর কেবল “মহিষাসুর” নয়,, সে এক “অশুভ” শক্তি। সেই হিসেবে “অশুভ পৈশাচিকশক্তি” হিসেবে আমরা “ধর্ষক” কে তুলে ধরেছি। এদের নির্মমতায় আজ কত মেয়ে তাদের পরিবার হারিয়েছে, মা-বাবারাও হারিয়েছে তাদের মেয়েকে।। এই বর্বরতার থেকে কি নারী সমাজের মুক্তি নেই??
মহাভারতের সময় দ্রৌপদীকে আমরা দেখেছি এই অন্যায়ের শিকার হতে কিন্তু সেখানে শ্রীকৃষ্ণ লজ্জা নিবারণ করেছিলেন,, কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যুগে নারীরা সেরম সৌভাগ্যবতী নন।”
স্বর্গধাম পুজো প্যান্ডেলে আমরা এরকমই একটি দৃশ্য কল্পনা করা হয়েছে, যেখানে গোটা দেশ দুর্গাপুজো নিয়ে মেতে আছেন, সেই উৎসবের মরসুমে বিপদের কালো ছায়ায় ঘেরা এক অসহায় মা তার নির্যাতিতা সন্তানের জন্য মহামায়ার কাছে ভিক্ষা চাইছেন, ন্যায় বিচার চাইছেন। সপরিবারে মর্তে আশা মা দুর্গার কন্যা দেবী সরস্বতীও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। একটা ছোট মেয়ে, যার পড়াশোনা করার বয়স, হয়তো সে ভবিষ্যতের একজন ভালো ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার তাকে এক নর পিশাচরূপী ধর্ষকের জন্য অকালে প্রাণ ত্যাগ করতে হল। এই নির্যাতককে মহামায়া মাতৃরুপে নয়, অন্যতম ভয়ংকরী রক্তবীজঅসুর বিনাশিনী মহাকালী রূপে তার উপযুক্ত শাস্তি দিচ্ছেন।
শিল্পী অসীম পাল জানিয়েছেন, “এখানেও আমাদের মনে হয়েছে ধর্ষকের শাস্তি হওয়া উচিত একমাত্র মৃত্যুদণ্ড। এটা যেমন ঠিক, তেমনি একজন ধর্ষককে ঠিক ততটাই কষ্ট দিয়ে মারা উচিত যতটা ধর্ষণের সময় একটা মেয়েকে সহ্য করতে হয়। আমাদের মতে ধর্ষকরূপী অসুর যত কষ্ট পেতে পেতে মারা যাবে হয়তো ঠিক ততই মৃত মেয়েগুলির আত্মার শান্তি ঘটবে। যে চোখ দিয়ে খারাপ নজরে একটি মেয়েকে দেখা হয়, সেই চোখ উপড়ে ফেলা উচিত। যে হাত দিয়ে ধর্ষক একটি মেয়েকে স্পর্শ করে- সেই হাত কেটে ফেলা উচিত। মৃত্যুর সময় যাতে একটি ধর্ষকের প্রাণ বিষের জ্বালায় নিজে থেকে প্রত্যেক মুহূর্তে মৃত্যু ভিক্ষা চাই তার ব্যবস্থা করা উচিত। অবশেষে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া উচিত।। তবে যদি এই ধর্ষক রূপী অসুরের সংখ্যা কমে।”