মিলন পণ্ডা, নন্দীগ্রাম: পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) নন্দীগ্রামে নিজেকে ‘ছোট চৌকিদার’ হিসেবে দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘বড় চৌকিদার’ আখ্যা দিয়ে। ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘প্রাক্তন’ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। রবিবার নন্দীগ্রাম থানার সামনে বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শুভেন্দু এই মন্তব্য করেন, যেখানে তিনি স্থানীয় নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের চৌকিদার ছিলেন। আমি নন্দীগ্রামের মানুষের ছোট চৌকিদার। আপনাদের আনন্দে একবার আসব, কিন্তু দুঃখে সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যাব।” তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল ২৬ হাজার চাকরি চুরি করেছে। আগামী দিনে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার পথে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৬-এ প্রাক্তন হবেন। নন্দীগ্রাম তাঁকে হারিয়েছে, আর আমরা তাঁকে বিসর্জন দেব।”
নন্দীগ্রামের কালীচরণপুর সমবায়ের নির্বাচন রবিবার হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা স্থগিত হয়। শুভেন্দু অভিযোগ করেন, তৃণমূল কংগ্রেস পুলিশকে ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা চারবার হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট করে জিতেছি। এবারও হাইকোর্টে যাব, ভোট করব, আর আমাদের নেতারা জিতবে।” তিনি স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাদেরও কটাক্ষ করেন, বলেন, “আইসি, আপনার বেতন কে দেয়? মমতা না ভাইপো? আমরা ট্যাক্সের টাকায় বেতন দিই। আপনি জনগণের দাস, তৃণমূলের নয়।”
শুভেন্দু তৃণমূলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের অভিযোগ তুলে বলেন, “তৃণমূল ভাবে মুসলিম ভোট থাকলে তারা সুরক্ষিত। কিন্তু কাঞ্চননগরে আমাদের হারাতে পারেনি। সনাতনী শক্তি অপরাজেয়।” তিনি উত্তর প্রদেশের মডেল অনুসরণ করে বাংলায় বিজেপির জয়ের আশা প্রকাশ করেন।
২০২১-এ নন্দীগ্রামে শুভেন্দু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১,৯৫৬ ভোটে পরাজিত করেছিলেন। এই জয় তাঁকে রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপির মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। ২০২৬-এর নির্বাচনের আগে তিনি নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ আরও তীব্র করেছেন। বিজেপির এই বিক্ষোভে অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন, যারা তৃণমূলের শাসনের বিরুদ্ধে সরব হন। শুভেন্দুর এই ‘চৌকিদার’ দাবি এবং মমতাকে ‘প্রাক্তন’ করার হুঁশিয়ারি রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।