দুর্গাপুজো ও মহরমের মিছিল একই রাস্তায় চলবে, সম্প্রীতির বার্তা শমীকের

বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya) একটি শক্তিশালী বার্তা দিলেন। তিনি বললেন, “বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়, বরং আমরা লড়ছি…

West Bengal BJP Rift Widens as Conflict Between Old and New Guard Intensifies

বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya) একটি শক্তিশালী বার্তা দিলেন। তিনি বললেন, “বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়, বরং আমরা লড়ছি সংখ্যালঘুদের জন্য, তাদের উন্নতির জন্য।” তার এই বক্তব্য শুধুমাত্র দলের ভিতরের সদস্যদের জন্য নয়, বরং পুরো রাজ্যবাসীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।(Shamik Bhattacharya) 

আজ, বৃহস্পতিবার, সায়েন্স সিটি-তে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের উপস্থিতিতে শমীক ভট্টাচার্যকে বঙ্গ বিজেপির পরবর্তী সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শমীক ভট্টাচার্য স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে বিজেপির মূল উদ্দেশ্য কখনোই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের সমর্থন ও উন্নতির জন্য কাজ করা।(Shamik Bhattacharya) 

   

বিজেপির লড়াই: সংখ্যালঘুদের পাশে(Shamik Bhattacharya) 

শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা চাই, যে সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেরা আজ পাথর হাতে নিয়েছে, তাদের হাতে বই দিতে। যারা তলোয়ার হাতে তুলে নিয়েছে, তাদের হাতে কলম দিতে চাই। এটাই বিজেপির লড়াই, এবং আমরা সেটা করে দেখাব।” তাঁর এই বক্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, বিজেপি আসলে একটি উন্নত সমাজের দিকে যেতে চায়, যেখানে প্রতিটি সম্প্রদায় সমান সুযোগ পাবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়, তাদের পাশে লড়াই করছি। তাদের জন্য আমরা কাজ করতে চাই। তাদের মধ্যে যে চেতনাগত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।” এর মাধ্যমে শমীক ভট্টাচার্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বিজেপির অনুগত মনোভাব প্রকাশ করেছেন এবং তাদের উন্নত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছেন।

ধর্মীয় সম্প্রীতি ও বহুত্ববাদ

শমীক ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, “দুর্গা পুজো এবং মহরমের মিছিল একসাথে একই রাস্তায় চলবে। বাংলায় ধর্মীয় বিভাজন নয়, বহুত্ববাদকে বাঁচাতে হবে। আমরা চাই না কোনো ধর্মীয় বিভেদ আমাদের সমাজে হানিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করুক।” শমীক এই বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরেছেন, এবং বাংলার ঐতিহ্যবাহী শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিন শমীক ভট্টাচার্য সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা যদি নিজেদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করেন, তবে বুঝবেন যে, যারা আমাদের ভোট দেন না, তাদের ভোট আমরা নেব না। তবে, নিজেদের প্রশ্ন করুন, যারা খুন হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ মুসলমান ছিল। আমাদের লক্ষ্য, বাংলাকে এই সহিংসতা থেকে মুক্ত করা।”

Advertisements

ভোটের রাজনীতিতে নতুন দিশা

শমীক ভট্টাচার্য ভোটের রাজনীতিকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, বিজেপি কখনোই সংখ্যালঘুদের শত্রু হিসেবে দাঁড়াবে না, বরং তাদের উন্নতির জন্য কাজ করবে। তাঁর মতে, মুসলিম সম্প্রদায়ও বিজেপির উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা থেকে বাদ যাবে না। তিনি বলেন, “বাংলার পরবর্তী প্রজন্ম কী করবে, সেটা আপনারা ভাবুন। সেই প্রজন্ম যাতে অন্ধকারে না চলে যায়, তার জন্য আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।”

শমীক আরও যোগ করেন, “বাংলার মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এককাট্টা হয়ে সেই বিভাজনকে প্রতিহত করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত বাংলা গড়ে তোলা।”

শমীক ভট্টাচার্য: একটি নতুন রাজ্য সভাপতির পথচলা

বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য তাঁর দলের উদ্দেশ্য এবং পরিকল্পনা সম্পর্কে বেশ স্পষ্ট। তিনি জানিয়ে দেন, বিজেপি একটি ন্যায্য, সাম্যবাদী এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে। তার এই বার্তা রাজ্য রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সূচিত করবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিজেপির প্রতি যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ ছিল, তার বিরুদ্ধে শমীক ভট্টাচার্য আজকের বক্তব্যের মাধ্যমে অনেকটা স্পষ্টতা এনেছেন। তিনি কেবল তার দলের দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার করেছেন, বরং বাংলার মানুষের জন্য একটি নয়া দিশা দেখানোর প্রয়াসও চালিয়েছেন।