‘বৃহত্তর ইজরায়েল’ (Greater Israel) বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের মাধ্যমে। ৬ জানুয়ারি, নেতানিয়াহুর বিদেশ মন্ত্রক আরবি ভাষায় একটি টুইট পোস্ট করে, যেখানে ইজরায়েলের নতুন মানচিত্র প্রকাশ করা হয়। এই মানচিত্রে প্যালেস্টাইন, জর্ডন, লেবানন, সিরিয়া এবং অন্যান্য কিছু অঞ্চলের একাংশকে ইজরায়েলের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে আরব বিশ্বের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং সারা আরব দুনিয়া জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
এই নতুন মানচিত্র প্রকাশের পরই আরব দেশগুলির মধ্যে একযোগ প্রতিবাদের সুর বেজেছে। সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কাতার, সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব এই মানচিত্রের তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের মতে, এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং পূর্ব তীরে থাকা প্যালেস্টাইনি জনগণের অধিকার লঙ্ঘন করছে। বিশেষ করে, প্যালেস্টাইন এবং এর আশপাশের দেশগুলো এই মানচিত্রকে তাদের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ হিসেবে দেখছে।
এছাড়া, আরব বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংগঠন ‘আরব লিগ’-ও নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছে। তারা ঘোষণা করেছে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন দ্বন্দ্বের সমাধান আরও জটিল করে তুলবে। নেতানিয়াহুর সরকারের এমন একপেশে পদক্ষেপ শুধু প্যালেস্টাইন বা আরব দেশগুলির জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্যও একটি গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইজরায়েলের ‘বৃহত্তর ইজরায়েল’ ধারণার বিরুদ্ধে আরব দুনিয়ার প্রতিবাদ নতুন নয়। গত কয়েক দশক ধরে, ইজরায়েল এবং প্যালেস্টাইনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে নানা প্রচেষ্টা হয়েছে, কিন্তু এই ধরনের পদক্ষেপ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে, প্যালেস্টাইনে ইজরায়েলের চলমান সামরিক অভিযান এবং স্থায়ী বসতি স্থাপন দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমাজে ক্ষোভ বাড়িয়ে তুলেছে।
এই বিতর্ক আরও গভীর ও জটিল হয়ে উঠতে পারে, কারণ অনেক আরব দেশই ইজরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা করছিল, যেমন সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং বাহরাইন। কিন্তু নেতানিয়াহুর এই পদক্ষেপ সেই প্রচেষ্টাগুলিকে ধাক্কা দিতে পারে এবং আরব দেশগুলোর মধ্যে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে একত্রীকরণ আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।